ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে সেল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ইউজিসির বিপুল আমদানিতেও ভোজ্যতেলের বাজার অস্থিতিশীল চিন্ময় দাসের জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল মুক্তিযোদ্ধা তথ্যভাণ্ডার তৈরিতে অনিয়ম এ সরকারও কুমিল্লা থেকে খুনের ইতিহাস শুরু করেছে-শামসুজ্জামান দুদু যুব সমাজ দেশে জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা পাচ্ছে না-জিএম কাদের ট্রাম্পের শুল্কনীতির অস্থিরতায় বিশ্ব অর্থনীতির ঝুঁকি বাড়ছে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন বাড়ছে পাচার অর্থ ফেরাতে কানাডার সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা ২৩৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয় কমিটিতে ১২ প্রস্তাব অনুমোদন প্রশাসন ক্যাডারের তরুণদের হতাশা-ক্ষোভ গুচ্ছে থাকছে ২০ বিশ্ববিদ্যালয় ৯ বছরেও ফেরেনি রিজার্ভ চুরির অর্থ কারাগার থেকে ফেসবুক চালানো সম্ভব নয় ৮ ফেব্রুয়ারি ছয় সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ-আসিফ নজরুল এক সপ্তাহ পর ক্লাসে ফিরলেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটায় উত্তাল জাবি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থা সমর্থন করছি না-মান্না চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ৪৬ নেতাকর্মী গ্রেফতার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপের আখেরি মোনাজাত আজ
* নিরবচ্ছিন্ন জ¦ালানির অভাব। দফায় দফায় ডলারের দাম বৃদ্ধি * শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। বেসরকারি বিনিয়োগে স্থবিরতা * ব্যাংকঋণের সুদহার বেড়ে ১৪ শতাংশ ছাড়িয়েছে * ঋণখেলাপি হয়ে পড়ছেন উদ্যোক্তারা

গভীর হচ্ছে দেশের শিল্প খাতের সংকট

  • আপলোড সময় : ১৬-০৮-২০২৪ ১১:০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৬-০৮-২০২৪ ১১:০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
গভীর হচ্ছে দেশের শিল্প খাতের সংকট
ত্রাহি অবস্থায় দেশে শিল্প খাতদিন দিন দেশের শিল্প খাতের সংকট গভীর হচ্ছেনিরবচ্ছিন্ন জ¦ালানির অভাব, দফায় দফায় ডলারের দাম বাড়ায় এ খাতের খরচের হিসাব মিলছে নাবরং প্রতিনিয়ত খরচ বেড়ে যাওয়ায় কারখানা সচল রাখাই কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছেইতোমধ্যে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি কমে গেছেবেসরকারি বিনিয়োগেও স্থবিরতা লক্ষ্য করা গেছেআগের হিসাবে বিনিয়োগ করে উদ্যোক্তারা এখন ক্ষতির হিসাব গুনছেনব্যাংকঋণের সুদহার বেড়ে ১৪ শতাংশ ছাড়িয়েছেফলে এখন খেলাপি হয়ে পড়ছেন ভালো উদ্যোক্তারাওশিল্পখাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অনেক বড় কোম্পানি মুনাফা বা বিনিয়োগের অর্থ ফেরত নিতে পারছে নাপাশাপাশি নতুন শিল্প গড়ে উঠছে কমকাঁচামাল আনতে না পেরে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছেকোনো কোনো কারখানা সক্ষমতার চেয়ে কম কার্যক্রম চালাচ্ছেফলে সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় খেলাপিতে পরিণত হয়ে পড়ছেন ভালো ঋণগ্রহীতারাওপাশাপাশি দেশের শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধিও ধারাবাহিকভাবে কমে যাচ্ছেবাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুযায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ২৯ শতাংশপরের ২০২১-২২ অর্থবছর এই হার ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশে নেমে আসেতার পরের ২০২২-২৩ অর্থবছর নেমে আসে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং সদ্য বিদায়ি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে এই হার ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশে নেমে আসে; অর্থাৎ শিল্পে উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে কমে যাচ্ছেকরোনার সময়ে দেশের অর্থনীতিতে স্থবিরতা থাকলেও বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতির উন্নতি হবেকিন্তু করোনা-পরবর্তী সময়ে বিনিয়োগ পরিবেশের অবনতি হয়েছেতার প্রমাণ মিলছে ২০২৩-২৪ সালের ব্যবসার পরিবেশ-সূচকে (বিবিএক্স)২০২২ সালে সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যবসা-পরিবেশের সূচকের ১০০ নম্বরের মধ্যে স্কোর ছিল ৬১ দশমিক ৯৫গত বছর (২০২৩) সূচকের স্কোর কমে ৫৮ দশমিক ৭৫-এ নেমেছে; অর্থাৎ এক বছরে দেশে ব্যবসা-পরিবেশের অবনতি ঘটেছেবিবিএক্স জরিপটি করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এবং বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জওই জরিপের তথ্যানুযায়ী গত এক বছরে ব্যবসায়ীদের ব্যাংকঋণ পাওয়া আরো কঠিন হয়েছে
সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক লেনেদেনে ক্ষেত্রে এখন ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ১১৮ টাকাবছর দুয়েক আগে ২০২২ সালের মে মাসেও ৮৬ টাকায় ডলার কেনা যেতটাকা খুব দ্রুত মান হারিয়েছেফলে প্রচণ্ড চাপে পড়েছে দেশের শিল্প ও ব্যবসা-বিনিয়োগবাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী ১৯৭১-৭২ অর্থবছরে দেশে ডলারের বিনিময়মূল্য ছিল গড়ে ৭ দশমিক ৩০ টাকাপরবর্তীকালে ১৯৮১-৮২ অর্থবছর এই দর বেড়ে হয় ২০ দশমিক ০৬ টাকা১৯৯১-৯২ অর্থবছর ৩৮ দশমিক ১৪ টাকা, ২০০১-০২ অর্থবছর হয় ৫৭ দশমিক ৪৩ টাকা, ২০১১-১২ অর্থবছর ৭৯ দশমিক ০৯ টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছর ছিল ৮৬ দশমিক ৩০ টাকা আর বর্তমান দর উঠেছে ১১৮ টাকায়
সূত্র আরো জানায়, প্রতি বছর ডলারের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে বিনিয়োগ-সিদ্ধান্ত গ্রহণ কঠিন হয়ে পড়েছেকারণ ১০ বছর আগে রেট অব রিটার্নহিসাব করে যারা বিনিয়োগ করেছেন, বর্তমান বাজারমূল্যে সেটি ঠিক থাকছে নাআগের নেওয়া ঋণ এখন বর্তমান হিসাবে পরিশোধ করতে হচ্ছেআগে একটি কারখানার পরিচালনায় চলতি মূলধন ১০০ কোটি টাকা লাগলে এখন লাগছে ১৬০ কোটি টাকাকিন্তু কিছু ব্যাংক তার ঋণ-গ্রহণসীমা বাড়াচ্ছে নাঅনেক দিন ধরেই সরকারি বিনিয়োগ বাড়লেও বেসরকারি বিনিয়োগ সে তুলনায় বাড়ছে নাঅর্থনীতির এই সংকটময় সময়ে বিনিয়োগ দ্রুতগতিতে বাড়ানো না গেলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি বাধাগ্রস্ত হবে, বাড়বে বেকারের সংখ্যাতাছাড়া বিভিন্ন কারণে ব্যবসার খরচ যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে ব্যবসা বাড়েনিবরং মূলধন ঘাটতির কারণে বিদ্যমান ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে
এদিকে সদ্য বিদায়ি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ১৭৭ কোটি ডলারের ঋণপত্র খোলা হয়েছেএটি তার আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ শতাংশ কমএকইভাবে শিল্পের প্রয়োজনীয় প্রাথমিক কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী কাঁচামাল আমদানি কমেছে যথাক্রমে ৪ ও ১৬ শতাংশবেসরকারি বিনিয়োগের মধ্যে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) গুরুত্বপূর্ণ২০২২ সালে দেশে ৩৪৮ কোটি ডলারের এফডিআই এসেছিলআর গত বছর ২০২৩ সালে এসেছে ৩০০ কোটি ডলার; অর্থাৎ গত বছর এফডিআই কম এসেছে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ কিংবা ৪৮ কোটি ডলারমোট এফডিআইয়ের মধ্যে মূলধন বা নতুন বিনিয়োগ, পুনর্বিনিয়োগও কমে গেছেবাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী ২০২২ সালে যেখানে ১০২ কোটি ডলারের নতুন বিনিয়োগ এসেছিল, গত বছর (২০২৩) তা কমে ৭১ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছেআর পুনর্বিনিয়োগ ২০২২ সালে ছিল ২৫১ কোটি ডলারের, গত বছর তা কমে হয়েছে ২২১ কোটি ডলারতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লোডশেডিংরাজধানীর ঢাকায় বিদ্যুতের সংকট না থাকলেও ঢাকার বাইরে অবস্থা ভিন্নবিগত কয়েক মাস যাবত তীব্র গ্যাস-সংকটের কারণে বস্ত্রখাতের মিলগুলো উৎপাদনক্ষমটার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশের বেশি ব্যবহার করতে পারছে নাআর ডলার-সংকটের কারণে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল কমেছে
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স