ত্রাহি অবস্থায় দেশে শিল্প খাত। দিন দিন দেশের শিল্প খাতের সংকট গভীর হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন জ¦ালানির অভাব, দফায় দফায় ডলারের দাম বাড়ায় এ খাতের খরচের হিসাব মিলছে না। বরং প্রতিনিয়ত খরচ বেড়ে যাওয়ায় কারখানা সচল রাখাই কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ইতোমধ্যে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। বেসরকারি বিনিয়োগেও স্থবিরতা লক্ষ্য করা গেছে। আগের হিসাবে বিনিয়োগ করে উদ্যোক্তারা এখন ক্ষতির হিসাব গুনছেন। ব্যাংকঋণের সুদহার বেড়ে ১৪ শতাংশ ছাড়িয়েছে। ফলে এখন খেলাপি হয়ে পড়ছেন ভালো উদ্যোক্তারাও। শিল্পখাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অনেক বড় কোম্পানি মুনাফা বা বিনিয়োগের অর্থ ফেরত নিতে পারছে না। পাশাপাশি নতুন শিল্প গড়ে উঠছে কম। কাঁচামাল আনতে না পেরে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো কারখানা সক্ষমতার চেয়ে কম কার্যক্রম চালাচ্ছে। ফলে সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় খেলাপিতে পরিণত হয়ে পড়ছেন ভালো ঋণগ্রহীতারাও। পাশাপাশি দেশের শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধিও ধারাবাহিকভাবে কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুযায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ২৯ শতাংশ। পরের ২০২১-২২ অর্থবছর এই হার ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশে নেমে আসে। তার পরের ২০২২-২৩ অর্থবছর নেমে আসে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং সদ্য বিদায়ি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে এই হার ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশে নেমে আসে; অর্থাৎ শিল্পে উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে কমে যাচ্ছে। করোনার সময়ে দেশের অর্থনীতিতে স্থবিরতা থাকলেও বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কিন্তু করোনা-পরবর্তী সময়ে বিনিয়োগ পরিবেশের অবনতি হয়েছে। তার প্রমাণ মিলছে ২০২৩-২৪ সালের ব্যবসার পরিবেশ-সূচকে (বিবিএক্স)। ২০২২ সালে সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যবসা-পরিবেশের সূচকের ১০০ নম্বরের মধ্যে স্কোর ছিল ৬১ দশমিক ৯৫। গত বছর (২০২৩) সূচকের স্কোর কমে ৫৮ দশমিক ৭৫-এ নেমেছে; অর্থাৎ এক বছরে দেশে ব্যবসা-পরিবেশের অবনতি ঘটেছে। বিবিএক্স জরিপটি করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এবং বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ। ওই জরিপের তথ্যানুযায়ী গত এক বছরে ব্যবসায়ীদের ব্যাংকঋণ পাওয়া আরো কঠিন হয়েছে।
সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক লেনেদেনে ক্ষেত্রে এখন ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ১১৮ টাকা। বছর দুয়েক আগে ২০২২ সালের মে মাসেও ৮৬ টাকায় ডলার কেনা যেত। টাকা খুব দ্রুত মান হারিয়েছে। ফলে প্রচণ্ড চাপে পড়েছে দেশের শিল্প ও ব্যবসা-বিনিয়োগ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী ১৯৭১-৭২ অর্থবছরে দেশে ডলারের বিনিময়মূল্য ছিল গড়ে ৭ দশমিক ৩০ টাকা। পরবর্তীকালে ১৯৮১-৮২ অর্থবছর এই দর বেড়ে হয় ২০ দশমিক ০৬ টাকা। ১৯৯১-৯২ অর্থবছর ৩৮ দশমিক ১৪ টাকা, ২০০১-০২ অর্থবছর হয় ৫৭ দশমিক ৪৩ টাকা, ২০১১-১২ অর্থবছর ৭৯ দশমিক ০৯ টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছর ছিল ৮৬ দশমিক ৩০ টাকা আর বর্তমান দর উঠেছে ১১৮ টাকায়।
সূত্র আরো জানায়, প্রতি বছর ডলারের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে বিনিয়োগ-সিদ্ধান্ত গ্রহণ কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ ১০ বছর আগে ‘রেট অব রিটার্ন’ হিসাব করে যারা বিনিয়োগ করেছেন, বর্তমান বাজারমূল্যে সেটি ঠিক থাকছে না। আগের নেওয়া ঋণ এখন বর্তমান হিসাবে পরিশোধ করতে হচ্ছে। আগে একটি কারখানার পরিচালনায় চলতি মূলধন ১০০ কোটি টাকা লাগলে এখন লাগছে ১৬০ কোটি টাকা। কিন্তু কিছু ব্যাংক তার ঋণ-গ্রহণসীমা বাড়াচ্ছে না। অনেক দিন ধরেই সরকারি বিনিয়োগ বাড়লেও বেসরকারি বিনিয়োগ সে তুলনায় বাড়ছে না। অর্থনীতির এই সংকটময় সময়ে বিনিয়োগ দ্রুতগতিতে বাড়ানো না গেলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি বাধাগ্রস্ত হবে, বাড়বে বেকারের সংখ্যা। তাছাড়া বিভিন্ন কারণে ব্যবসার খরচ যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে ব্যবসা বাড়েনি। বরং মূলধন ঘাটতির কারণে বিদ্যমান ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে সদ্য বিদায়ি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ১৭৭ কোটি ডলারের ঋণপত্র খোলা হয়েছে। এটি তার আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ শতাংশ কম। একইভাবে শিল্পের প্রয়োজনীয় প্রাথমিক কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী কাঁচামাল আমদানি কমেছে যথাক্রমে ৪ ও ১৬ শতাংশ। বেসরকারি বিনিয়োগের মধ্যে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) গুরুত্বপূর্ণ। ২০২২ সালে দেশে ৩৪৮ কোটি ডলারের এফডিআই এসেছিল। আর গত বছর ২০২৩ সালে এসেছে ৩০০ কোটি ডলার; অর্থাৎ গত বছর এফডিআই কম এসেছে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ কিংবা ৪৮ কোটি ডলার। মোট এফডিআইয়ের মধ্যে মূলধন বা নতুন বিনিয়োগ, পুনর্বিনিয়োগও কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী ২০২২ সালে যেখানে ১০২ কোটি ডলারের নতুন বিনিয়োগ এসেছিল, গত বছর (২০২৩) তা কমে ৭১ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। আর পুনর্বিনিয়োগ ২০২২ সালে ছিল ২৫১ কোটি ডলারের, গত বছর তা কমে হয়েছে ২২১ কোটি ডলার। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লোডশেডিং। রাজধানীর ঢাকায় বিদ্যুতের সংকট না থাকলেও ঢাকার বাইরে অবস্থা ভিন্ন। বিগত কয়েক মাস যাবত তীব্র গ্যাস-সংকটের কারণে বস্ত্রখাতের মিলগুলো উৎপাদনক্ষমটার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশের বেশি ব্যবহার করতে পারছে না। আর ডলার-সংকটের কারণে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল কমেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অনেক বড় কোম্পানি মুনাফা বা বিনিয়োগের অর্থ ফেরত নিতে পারছে না। পাশাপাশি নতুন শিল্প গড়ে উঠছে কম। কাঁচামাল আনতে না পেরে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো কারখানা সক্ষমতার চেয়ে কম কার্যক্রম চালাচ্ছে। ফলে সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় খেলাপিতে পরিণত হয়ে পড়ছেন ভালো ঋণগ্রহীতারাও। পাশাপাশি দেশের শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধিও ধারাবাহিকভাবে কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুযায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ২৯ শতাংশ। পরের ২০২১-২২ অর্থবছর এই হার ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশে নেমে আসে। তার পরের ২০২২-২৩ অর্থবছর নেমে আসে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং সদ্য বিদায়ি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে এই হার ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশে নেমে আসে; অর্থাৎ শিল্পে উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে কমে যাচ্ছে। করোনার সময়ে দেশের অর্থনীতিতে স্থবিরতা থাকলেও বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কিন্তু করোনা-পরবর্তী সময়ে বিনিয়োগ পরিবেশের অবনতি হয়েছে। তার প্রমাণ মিলছে ২০২৩-২৪ সালের ব্যবসার পরিবেশ-সূচকে (বিবিএক্স)। ২০২২ সালে সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যবসা-পরিবেশের সূচকের ১০০ নম্বরের মধ্যে স্কোর ছিল ৬১ দশমিক ৯৫। গত বছর (২০২৩) সূচকের স্কোর কমে ৫৮ দশমিক ৭৫-এ নেমেছে; অর্থাৎ এক বছরে দেশে ব্যবসা-পরিবেশের অবনতি ঘটেছে। বিবিএক্স জরিপটি করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এবং বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ। ওই জরিপের তথ্যানুযায়ী গত এক বছরে ব্যবসায়ীদের ব্যাংকঋণ পাওয়া আরো কঠিন হয়েছে।
সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক লেনেদেনে ক্ষেত্রে এখন ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ১১৮ টাকা। বছর দুয়েক আগে ২০২২ সালের মে মাসেও ৮৬ টাকায় ডলার কেনা যেত। টাকা খুব দ্রুত মান হারিয়েছে। ফলে প্রচণ্ড চাপে পড়েছে দেশের শিল্প ও ব্যবসা-বিনিয়োগ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী ১৯৭১-৭২ অর্থবছরে দেশে ডলারের বিনিময়মূল্য ছিল গড়ে ৭ দশমিক ৩০ টাকা। পরবর্তীকালে ১৯৮১-৮২ অর্থবছর এই দর বেড়ে হয় ২০ দশমিক ০৬ টাকা। ১৯৯১-৯২ অর্থবছর ৩৮ দশমিক ১৪ টাকা, ২০০১-০২ অর্থবছর হয় ৫৭ দশমিক ৪৩ টাকা, ২০১১-১২ অর্থবছর ৭৯ দশমিক ০৯ টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছর ছিল ৮৬ দশমিক ৩০ টাকা আর বর্তমান দর উঠেছে ১১৮ টাকায়।
সূত্র আরো জানায়, প্রতি বছর ডলারের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে বিনিয়োগ-সিদ্ধান্ত গ্রহণ কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ ১০ বছর আগে ‘রেট অব রিটার্ন’ হিসাব করে যারা বিনিয়োগ করেছেন, বর্তমান বাজারমূল্যে সেটি ঠিক থাকছে না। আগের নেওয়া ঋণ এখন বর্তমান হিসাবে পরিশোধ করতে হচ্ছে। আগে একটি কারখানার পরিচালনায় চলতি মূলধন ১০০ কোটি টাকা লাগলে এখন লাগছে ১৬০ কোটি টাকা। কিন্তু কিছু ব্যাংক তার ঋণ-গ্রহণসীমা বাড়াচ্ছে না। অনেক দিন ধরেই সরকারি বিনিয়োগ বাড়লেও বেসরকারি বিনিয়োগ সে তুলনায় বাড়ছে না। অর্থনীতির এই সংকটময় সময়ে বিনিয়োগ দ্রুতগতিতে বাড়ানো না গেলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি বাধাগ্রস্ত হবে, বাড়বে বেকারের সংখ্যা। তাছাড়া বিভিন্ন কারণে ব্যবসার খরচ যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে ব্যবসা বাড়েনি। বরং মূলধন ঘাটতির কারণে বিদ্যমান ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে সদ্য বিদায়ি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ১৭৭ কোটি ডলারের ঋণপত্র খোলা হয়েছে। এটি তার আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ শতাংশ কম। একইভাবে শিল্পের প্রয়োজনীয় প্রাথমিক কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী কাঁচামাল আমদানি কমেছে যথাক্রমে ৪ ও ১৬ শতাংশ। বেসরকারি বিনিয়োগের মধ্যে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) গুরুত্বপূর্ণ। ২০২২ সালে দেশে ৩৪৮ কোটি ডলারের এফডিআই এসেছিল। আর গত বছর ২০২৩ সালে এসেছে ৩০০ কোটি ডলার; অর্থাৎ গত বছর এফডিআই কম এসেছে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ কিংবা ৪৮ কোটি ডলার। মোট এফডিআইয়ের মধ্যে মূলধন বা নতুন বিনিয়োগ, পুনর্বিনিয়োগও কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী ২০২২ সালে যেখানে ১০২ কোটি ডলারের নতুন বিনিয়োগ এসেছিল, গত বছর (২০২৩) তা কমে ৭১ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। আর পুনর্বিনিয়োগ ২০২২ সালে ছিল ২৫১ কোটি ডলারের, গত বছর তা কমে হয়েছে ২২১ কোটি ডলার। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লোডশেডিং। রাজধানীর ঢাকায় বিদ্যুতের সংকট না থাকলেও ঢাকার বাইরে অবস্থা ভিন্ন। বিগত কয়েক মাস যাবত তীব্র গ্যাস-সংকটের কারণে বস্ত্রখাতের মিলগুলো উৎপাদনক্ষমটার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশের বেশি ব্যবহার করতে পারছে না। আর ডলার-সংকটের কারণে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল কমেছে।