আইসিসির লভ্যাংশের বণ্টন নিয়ে আলোচনা হয় প্রায়ই। আইসিসির লাভের সবচেয়ে বড় ভাগটা পায় ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। যদিও আইসিসির আয়ের প্রায় ৯০ ভাগ আসে ভারত থেকেই। অনেকের মতে, আইসিসির লভ্যাংশের বণ্টনে আরও বেশি সমতা আনা উচিত। নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশের মত দেশগুলোকে আরও বেশি টাকা দেওয়া উচিত আইসিসির। এই দলে এবার নাম লেখালেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভনও। ভনের মতে, বাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত দেশগুলোকে আরও বেশি টাকা দেওয়া উচিত আইসিসির। ২০২৪-২৭ চক্রের লভ্যাংশ ভাগাভাগির যে মডেল আইসিসির বোর্ড সভায় অনুমোদন করা হয়, তাতে সবচেয়ে বেশি ৩৮.৫০ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ভারতের জন্য। সম্প্রতি স্টিক টু ক্রিকেট পডকাস্টে আইসিসির লভ্যাংশ বিনিময়ের মডেল সম্পর্কে কথা বলেছেন ভন। তাকে সমর্থন দিয়েছেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ব্রায়ান লারাও। পডকাস্টের আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার অ্যালিস্টার কুক, ডেভিড লয়েড ও ফিল টাফনেল। মাইকেল ভন বলেন, ‘যে জিনিসটা আমার বাজে লাগে, সেটা হচ্ছে ক্রিকেটের টাকাপয়সা সঠিকভাবে ভাগ হয় না। আইসিসির অনেক টাকা আছে। আমরা যদি ক্রিকেটে দুই স্তরও চালু করি, সবচেয়ে ন্যায্য হচ্ছে ভাগাভাগিটা ঠিক করা। আমি বলছি না যে সবাই একদম সমানে সমান টাকা পাক। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ডের মতো দলগুলোর ভাগের টাকা আরও বেশি পাওয়া উচিত, যাতে তারা খেলোয়াড়দের আরও বেশি টাকা দিতে পারে। একটা ভালো অঙ্কের অর্থ পেলে এই খেলোয়াড়েরা জাতীয় দলের হয়ে আরও বেশি দিন খেলবেন।’ ভনের প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়ে মাথা নাড়ান ব্রায়ান লারা। পাশে থাকা লয়েড বলেছেন, ‘আমি একমত।’ উপস্থিত সবার কাছে ভন প্রশ্ন রাখেন, আধুনিক ক্রিকেটের সবচেয়ে বিরক্তিকর দিক কোনটি? ভনের প্রশ্নের জবাবে সাবেক ইংলিশ ওপেনার অ্যালিস্টার কুক বলেন, ‘দেশের হয়ে খেলাটা এখন বড় করে দেখা হয় না।’ কুকের কথায় সম্মতি দেন ভন, লারা ও টাফনেল। এ প্রসঙ্গে ব্রায়ান লারা বলেন, ‘এই ব্যাপারটা ফিরিয়ে আনতে উপায় খোঁজা দরকার।’ কুক জবাবে বলেন, ‘আমি খেলোয়াড়দের দোষ দিচ্ছি না। তবে তাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধরে রাখার মাধ্যম দরকার।’ এ সময় ডেভিড লয়েড ‘মানি’ শব্দটি উচারণ করেন, সেখানে সমর্থন জানান কুক। আইসিসির লভ্যাংশ বিনিময়ের একটি মডেল প্রকাশ করেছিল ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো। ক্রিকইনফোর তথ্য অনুসারে, ২০২৪-২৭ চক্রে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড পাচ্ছে আইসিসির লভ্যাংশের ৪.৪৬ শতাংশ। আইসিসির ৬০ কোটি মার্কিন ডলারের সম্ভাব্য আয় হিসাব করলে বছরে বাংলাদেশ পাওয়ার কথা ২ কোটি ৬৭ লাখ ডলারের বেশি। অন্য দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ৪.৫২ শতাংশ বা ২.৭১ কোটি, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪.৫৮ বা ২.৭৫ কোটি, নিউজিল্যান্ড ৪.৭৩ শতাংশ বা ২.৮৩ কোটি এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ৪.৩৭ শতাংশ বা ২.৬৪ কোটি মার্কিন ডলার পাবে বলে প্রস্তাব করা হয়েছিল, যা চূড়ান্ত অনুমোদনের সময় এই পাঁচ দেশের জন্য প্রায় ১০ লাখ মার্কিন ডলার করে বাড়ানো হয়েছিল বলেও জানিয়েছিল ক্রিকইনফো। প্রতি চক্রে মডেল হালগানাদ করে আয়ের ভাগের অংশে পরিবর্তন আনা হয়। তবে সবচেয়ে বেশি আয় যেহেতু ভারত থেকেই হয়, প্রতিবার সর্বোচ্চ ভাগটা পায় ভারতই।