সাঁতার জানতেন ইবি শিক্ষার্থী সাজিদ, পুকুরে ডুবে মৃত্যু রহস্যজনক

আপলোড সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ০১:৩৩:০৯ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ০১:৩৩:০৯ অপরাহ্ন
ক্যাম্পাসের পুকুর থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সাঁতার জানা সত্ত্বেও তার পুকুরে ডুবে মৃত্যুকে রহস্যজনক মনে করছেন শিক্ষার্থীরাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টরা। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের সামনে প্রথম জানাজা শেষে সাজিদের লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সের সামনে শুয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তদন্তের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত নিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে অ্যাম্বুলেন্স ছেড়ে দেন শিক্ষার্থীরা। টাঙ্গাইল জেলায় গ্রামের বাড়িতে বাদ মাগরিব দ্বিতীয় জানাজা শেষে সাজিদের মরদেহ দাফন করা হবে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিতে শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক গফুর গাজীকে আহ্বায়ক এবং অধ্যাপক আব্দুল বারী ও অধ্যাপক নুরুল ইসলামকে সদস্যা করা হয়েছে। জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে অনেকে মরদেহটি পুকুরের মধ্যখানে ভেসে উঠতে দেখে। কিন্তু অনেকে এটি ময়লা মনে করে গুরুত্ব দেয়নি। পরে বিকেল ৫টার দিকে লাশটি কিনারে আসতে থাকে। দেখতে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকে। পরে প্রক্টরিয়াল বডিকে জানালে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে পুকুর থেকে মরদেহ তোলা হয়। সাজিদের এমন আকস্মিক মৃত্যুতে হতবিহ্বল তার সহপাঠী, শিক্ষক ও শুভাকাক্সক্ষীরা। সাজিদ বন্ধুবৎসল, হাস্যোজ্জ্বল ও সংস্কৃতিমনা হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত ছিলেন। তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এটি নিছক দুর্ঘটনা, নাকি অন্য কোনো রহস্য লুকিয়ে রয়েছে এ নিয়ে আলোচনা ও উদ্বেগ বাড়ছে। সাজিদের মৃত্যুকে রহস্যজনক উল্লেখ করে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও সাজিদের ঘনিষ্ঠ বড় ভাই ওয়াহেদ বিন আসাদ বলেন, পানিতে ডুবে মারা গেলে সাধারণত আমরা দেখি তার মরদেহ উপুড় হয়ে থাকে, কিন্তু সাজিদের মরদেহ ছিল চিত হয়ে। এছাড়া পানিতে ডুবে কেউ মারা গেলে তার পেটসহ শরীর ফুলে যায়। কিন্তু সাজিদের শরীরে আমরা তেমন কোনো লক্ষণ দেখিনি। এজন্য এই মৃত্যুকে আমরা রহস্যজনক মনে করছি। সাজিদের বন্ধু ইমসান বলেন, সে এভাবে নিজে থেকে মরতে পারে না। এর পেছনে অন্য কিছু ঘটতে পারে। দ্রুত এর সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। আমরা শোক প্রকাশের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। সাজিদের রুমমেট ফোকলোর বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের আমিন বলেন, আমি সোমবার বাড়ির উদ্দেশ্যে দুপুর ২টায় ক্যাম্পাসের বাসে চলে আসি। সাজিদের সাথে সর্বশেষ রুমে কথা হয়েছিল। আরেক রুমমেট মার্কেটিং বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের তুষার বলেন, আমার বুধবার মাস্টার্সের একটা পরীক্ষা ছিল। তো পরীক্ষা দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে দুপুর ৩টার পর রুম থেকে বের হই। তখন ও রুমেই ছিল। সাজিদের বাবা আহসান হাবিবুল্লাহ এসেছিলেন কুষ্টিয়ায় ছেলের জানাজায়। তিনি বলেন, আমার ছেলের মৃত্যু রহস্যজনক। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই। সুরতহাল প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক হোসেন ইমাম বলেন, প্রাথমিকভাবে তার শরীরে অপমৃত্যুর কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। তবে ভিসেরা রিপোর্ট আসার পর আমরা নিশ্চিত বলতে পারব। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, সাজিদ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হলে থাকতেন। হল প্রশাসন ইতোমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কাজ চলমান। সাজিদের পোস্টমর্টেম হয়ে গেছে। সবকিছুর প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর আমরা প্রকৃত ঘটনা জানতে পারব। প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে সাজিদের মরদেহ পুকুরে ভাসতে দেখেন অন্যান্য শিক্ষার্থীরা। পরে ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী ইবি থানা থেকে পুলিশ এসে সাড়ে ৬টার দিকে সাজিদের মরদেহ উদ্ধার করে ক্যাম্পাসের মেডিকেলে নেয়। এই মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলো।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net