
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আর্থিক খাতকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পাঠানো এক জরুরি সার্কুলারে দেশের সব ব্যাংক ও ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে- দুদক চেয়ারম্যান, কমিশনার বা অন্য কোনও কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করে কেউ যদি ভয়ভীতি দেখায় বা অর্থ দাবি করে- তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তা নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, সম্প্রতি দুদকের পরিচয়ে প্রতারণার প্রবণতা বাড়ছে এবং বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে। এর আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকেও এ বিষয়ে আলাদা নির্দেশনা জারি করা হয়। এসবের পরিপ্রেক্ষিতেই এ সার্কুলারটি জারি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও জানায়, প্রতারকরা কখনও ফোনে, আবার কখনও সরাসরি গিয়ে নিজেদের দুদকের কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিয়ে গ্রেপ্তার, তদন্ত বা মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। অনেক সময় সাধারণ মানুষ এসব কৌশল বুঝতে না পেরে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুদকের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা নতুন নয়, তবে সাম্প্রতিক সময়ে এর হার উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এ ধরনের পদক্ষেপকে সময়োপযোগী ও কার্যকর উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, প্রতারণা ঠেকাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে এ চক্রের অপতৎপরতা রোধ করা যায়। একইসঙ্গে সাধারণ জনগণকে এমন ঘটনার শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে। জানা গেছে, সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ তার ফেসবুক পোস্টে দুদক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ তোলেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ৩০ জুন দুদকের পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দুদক জানায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য, যারা মামলা নিষ্পত্তির নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল।