
ঈর্যায়ক্রমে অলাভজনক ও অপ্রয়োজনীয় ট্রেন বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কারণ জ্বালানি খরচ, লোকবল ও অন্যান্য খরচ বিবেচনায় শতভাগ যাত্রী পরিবহন করার পরও আন্তঃনগর ট্রেনে লোকসান হয়। পাশাপাশি রয়েছে ইঞ্জিন-কোচের সংকট। এমন পরিস্থিতিতে যাত্রীর চাহিদা বেশি না থাকলে কর্তৃপক্ষনতুন ট্রেন চালু করতে চায় না। বর্তমানে অন্তত পাঁচটি আন্তঃনগর ট্রেনে পর্যাপ্ত যাত্রী হচ্ছে না। ওসব ট্রেন রাজনীতিবিদদের চাপে চালু করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় মানুষজন ট্রেনগুলোর চলাচল বন্ধ হোক চান না। এমনকি ট্রেন বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হলে বাধা আসে। ফলে রেলের লোকসানের বোঝা ভারীই হচ্ছে। রেলওয়ে এখন প্রতিবছর গড়ে আড়াই হাজার কোটি টাকা লোকসান গুনছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৬৯০ কোটি টাকা লোকসান ছিল। বাংলাদেশ রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিগত সরকারের আমলে ২০০৯ সাল থেকে ৬৬টি নতুন আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হয়। ওই সময়ের মধ্যে চালু হয় ৯২টি মেইল, এক্সপ্রেস, কমিউটার ও লোকাল ট্রেন। তবে বন্ধ করে দেয়া হয় জনপ্রিয় প্রায় ৯৮টি মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেনের চলাচল। অর্থাৎ একদিকে বন্ধ করে অন্য পথে চালু করা হয়েছে ট্রেন। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রেলের রুট রেশনালাইজেশন করার উদ্যোগ নিয়েছে। লক্ষ্য হচ্ছে কম আয় করা ট্রেন বন্ধ এবং বেশি যাত্রী চাহিদা রয়েছে এমন পথে ট্রেন বাড়ানো। তাছাড়া আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়া ট্রেন বন্ধ করে দেয়া। ওই লক্ষ্যে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটিতে মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ের কর্মকর্তারা ছাড়াও বিশেষজ্ঞ ও ছাত্র প্রতিনিধি রয়েছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে বিজয় এক্সপ্রেস সবচেয়ে কম যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। ২০১৪ সালে ট্রেনটি চালুর সময় ময়মনসিংহ থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত চলাচল করতো। কিন্তু ২০২৩ সাল থেকে ট্রেনটির যাত্রার স্থান পরিবর্তন করে নেয়া হয় জামালপুর। ফলে যাত্রার সময় বেড়ে যায় এবং যাত্রীর সংখ্যা কমতে থাকে। এখন ট্রেনটি চালিয়ে যে আয় হয়, তা দিয়ে খরচই তোলা যাচ্ছে না। মূলত বিগত সরকারের আমলে দলীয় কর্মীদের চাপে নতুন নতুন ট্রেন চালু, ট্রেনের গন্তব্যস্থল সম্প্রসারণ, নতুন নতুন স্টেশনে ট্রেন থামানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যেমন দিনাজপুর ও আশপাশের জেলাগুলোয় চলাচলকারী প্রায় সব আন্তঃনগর ট্রেনের গন্তব্যস্থল বর্ধিত করে তৎকালীন রেলমন্ত্রী নিজ জেলা পঞ্চগড়ে নেন এবং নতুন এক জোড়া আন্তনগর ট্রেনও চালু করা হয়। ঈশ্বরদী থেকে ঢাকায় একটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করতো। কিন্তু ২০১৩ সালে সেই ট্রেন বাদ দিয়ে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস নামে নতুন ট্রেন চালু করা হয়। সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে গড়ে ৮৮ শতাংশ যাত্রী হয় এব মাসে আয় ৩০ লাখ টাকার মতো। তাছাড়া ২০১৮ সালে ঈশ্বরদী থেকে পাবনার ঢালারচর পর্যন্ত ১ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ওই পথে রেললাইন নির্মাণে কোনো সম্ভাব্যতাই যাচাই হয়নি। আর উদ্বোধনের পর দুই বছর রেলপথটিতে কোনো ট্রেনই চলেনি। ২০২০ সালে ঢালারচর এক্সপ্রেস নামে এক জোড়া ট্রেন চালু করা হয়। অথচ প্রকল্প নেয়ার সময় ওই পথে ১০টি ট্রেন চলার কথা বলা হয়েছিল। ঢালারচর এক্সপ্রেস ১১টি কোচ নিয়ে চলাচল করে। আসা-যাওয়া মিলে দুবার চলে। অর্থাৎ রেলে দুটি ট্রেন হিসাব করা হয়। মাসে গড়ে দুটি ট্রেন থেকে গড়ে আয় ৩৬ লাখ টাকা। ই ট্রেনে আসনের অতিরিক্ত যাত্রী যাতায়াত করে। তবে বেশির ভাগ যাত্রী স্বল্প দূরত্বের। সেজন্য আয় কম হয়। আর ঢাকা-নোয়াখালী পথে দীর্ঘদিন ধরে আন্তঃনগর ট্রেন উপকূল এক্সপ্রেস চলাচল করছে। কিন্তু এখন আন্তঃনগর ওই ট্রেনটির যাত্রী তুলনামূলক কম। অথচ বিগত ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে উপকূল এক্সপ্রেসে গড় যাত্রী বা অকুপেন্সি ছিল ১৯০ শতাংশ। অর্থাৎ আসনের প্রায় দ্বিগুণ যাত্রী যাতায়াত করতো। ওই সময় নোয়াখালী থেকে ঢাকায় আসার সময় যাত্রী হতো ২৬৯ শতাংশ এবং ঢাকা থেকে যাওয়ার পথে ১১১ শতাংশ। এখন ওই ট্রেনের আসনও পূর্ণ হয় না। বছর পাঁচেক ধরে উপকূল এক্সপ্রেসে যাত্রী কমছে। এর কারণ, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হওয়া। তাতে ট্রেনের চেয়ে কম সময়ে নোয়াখালী যাওয়া যাচ্ছে। আর ট্রেন সময়সূচি মেনে চলাচল না করার কারণেও যাত্রীর চাহিদা কমেছে। তারপরও ২০২৩ সালে ঢাকা থেকে নোয়াখালীতে নতুন এক জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত হয়। তবে ট্রেন চালুর জন্য পর্যাপ্ত কোচ না থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে তা চালু করা যায়নি। আর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে নোয়াখালীর পরিবর্তে কক্সবাজার পথে নতুন ট্রেন চালু করে।
সূত্র আরো জানায়, রেলের উত্তরাঞ্চলের আওতায় রয়েছে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগ। ওই পথে ৩২টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। পশ্চিমাঞ্চলে সব কটি ট্রেন গড়ে ১১৪ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলাচল করলও পূর্বাঞ্চলে গড় যাত্রী ৯৪ শতাংশ। তাছাড়া পশ্চিমাঞ্চলের সব কটি ট্রেনের পথই দীর্ঘ। পথে অনেক স্টেশনে ট্রেন থামে। ফলে বেশির ভাগ ট্রেনই সময় মেনে চলতে পারে না। অথচ কোনো কারণে একটি ট্রেন দেরি হলে বিকল্প রেক (নির্ধারিত কোচ নিয়ে তৈরি ট্রেন) থাকলে সময় মেনে চালানো সম্ভব। কিন্তু ওই ব্যবস্থা নেই। পঞ্চগড় থেকে ৬টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। সেগুলোর জন্য চারটি রেক রয়েছে। আর পশ্চিমাঞ্চলের বাকি ২৬টি ট্রেনের বিকল্প রেক নেই। ফলে যে ট্রেন যায়, সেটিই ফিরে আসে। পথে দুর্ঘটনা বা বিলম্ব হলে যাত্রীদের অপেক্ষায় থাকতে হয়। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের পথে চলাচলকারী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস গড়ে ১১১ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলাচল করে। ট্রেনটি থেকে মাসে গড় আয় দুই কোটি টাকার মতো। একইভাবে লালমনিরহাট এক্সপ্রেসে যাত্রী হয় গড়ে ১১৫ শতাংশ। মাসে গড়ে আয় সোয়া দুই কোটি টাকার মতো। কিন্তু ট্রেন দুটির বিকল্প রেক না থাকায় সপ্তাহের বেশির ভাগ দিনই দেরিতে চলাচল করে। তাছাড়া রাজশাহী থেকে পঞ্চগড়ের চিলাহাটি পর্যন্ত চলাচলকারী বরেন্দ্র এক্সপ্রেসে সবচেয়ে বেশি ১২৪ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলে। আর ঢাকা-পঞ্চগড় রুটের একতা এক্সপ্রেস থেকে সবচেয়ে বেশি আয় হয়। ট্রেনটি থেকে মাসে গড়ে চার কোটি টাকার বেশি আয় হয়।
এদিকে এ প্রসঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, লাভজনক রুটে ট্রেন বাড়ানো এবং লোকসানি রুট বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে কাজ চলছে। অতীতে রাজনীতিকদের ইচ্ছাপূরণের ট্রেনগুলো নিয়ে পর্যালোচনা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে অলাভজনক ও অপ্রয়োজনীয় ট্রেন বন্ধ করে দেয়া হবে। রেলে বর্তমানে কোচের সংকট আছে। এটার কারণেও কিছুটা ধীরে এগোচ্ছে রুট রেশনালাইজেশনের কাজ। তাছাড়া একবার একটা ট্রেন কোনো এলাকায় চালু করা হলে তা বন্ধ করতে গেলে স্থানীয়দের কাছ থেকে বাধা আসে। এগুলোও বিবেচনায় নিয়ে এগোচ্ছে রেলওয়ে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিগত সরকারের আমলে ২০০৯ সাল থেকে ৬৬টি নতুন আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হয়। ওই সময়ের মধ্যে চালু হয় ৯২টি মেইল, এক্সপ্রেস, কমিউটার ও লোকাল ট্রেন। তবে বন্ধ করে দেয়া হয় জনপ্রিয় প্রায় ৯৮টি মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেনের চলাচল। অর্থাৎ একদিকে বন্ধ করে অন্য পথে চালু করা হয়েছে ট্রেন। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রেলের রুট রেশনালাইজেশন করার উদ্যোগ নিয়েছে। লক্ষ্য হচ্ছে কম আয় করা ট্রেন বন্ধ এবং বেশি যাত্রী চাহিদা রয়েছে এমন পথে ট্রেন বাড়ানো। তাছাড়া আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়া ট্রেন বন্ধ করে দেয়া। ওই লক্ষ্যে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটিতে মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ের কর্মকর্তারা ছাড়াও বিশেষজ্ঞ ও ছাত্র প্রতিনিধি রয়েছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে বিজয় এক্সপ্রেস সবচেয়ে কম যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। ২০১৪ সালে ট্রেনটি চালুর সময় ময়মনসিংহ থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত চলাচল করতো। কিন্তু ২০২৩ সাল থেকে ট্রেনটির যাত্রার স্থান পরিবর্তন করে নেয়া হয় জামালপুর। ফলে যাত্রার সময় বেড়ে যায় এবং যাত্রীর সংখ্যা কমতে থাকে। এখন ট্রেনটি চালিয়ে যে আয় হয়, তা দিয়ে খরচই তোলা যাচ্ছে না। মূলত বিগত সরকারের আমলে দলীয় কর্মীদের চাপে নতুন নতুন ট্রেন চালু, ট্রেনের গন্তব্যস্থল সম্প্রসারণ, নতুন নতুন স্টেশনে ট্রেন থামানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যেমন দিনাজপুর ও আশপাশের জেলাগুলোয় চলাচলকারী প্রায় সব আন্তঃনগর ট্রেনের গন্তব্যস্থল বর্ধিত করে তৎকালীন রেলমন্ত্রী নিজ জেলা পঞ্চগড়ে নেন এবং নতুন এক জোড়া আন্তনগর ট্রেনও চালু করা হয়। ঈশ্বরদী থেকে ঢাকায় একটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করতো। কিন্তু ২০১৩ সালে সেই ট্রেন বাদ দিয়ে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস নামে নতুন ট্রেন চালু করা হয়। সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে গড়ে ৮৮ শতাংশ যাত্রী হয় এব মাসে আয় ৩০ লাখ টাকার মতো। তাছাড়া ২০১৮ সালে ঈশ্বরদী থেকে পাবনার ঢালারচর পর্যন্ত ১ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ওই পথে রেললাইন নির্মাণে কোনো সম্ভাব্যতাই যাচাই হয়নি। আর উদ্বোধনের পর দুই বছর রেলপথটিতে কোনো ট্রেনই চলেনি। ২০২০ সালে ঢালারচর এক্সপ্রেস নামে এক জোড়া ট্রেন চালু করা হয়। অথচ প্রকল্প নেয়ার সময় ওই পথে ১০টি ট্রেন চলার কথা বলা হয়েছিল। ঢালারচর এক্সপ্রেস ১১টি কোচ নিয়ে চলাচল করে। আসা-যাওয়া মিলে দুবার চলে। অর্থাৎ রেলে দুটি ট্রেন হিসাব করা হয়। মাসে গড়ে দুটি ট্রেন থেকে গড়ে আয় ৩৬ লাখ টাকা। ই ট্রেনে আসনের অতিরিক্ত যাত্রী যাতায়াত করে। তবে বেশির ভাগ যাত্রী স্বল্প দূরত্বের। সেজন্য আয় কম হয়। আর ঢাকা-নোয়াখালী পথে দীর্ঘদিন ধরে আন্তঃনগর ট্রেন উপকূল এক্সপ্রেস চলাচল করছে। কিন্তু এখন আন্তঃনগর ওই ট্রেনটির যাত্রী তুলনামূলক কম। অথচ বিগত ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে উপকূল এক্সপ্রেসে গড় যাত্রী বা অকুপেন্সি ছিল ১৯০ শতাংশ। অর্থাৎ আসনের প্রায় দ্বিগুণ যাত্রী যাতায়াত করতো। ওই সময় নোয়াখালী থেকে ঢাকায় আসার সময় যাত্রী হতো ২৬৯ শতাংশ এবং ঢাকা থেকে যাওয়ার পথে ১১১ শতাংশ। এখন ওই ট্রেনের আসনও পূর্ণ হয় না। বছর পাঁচেক ধরে উপকূল এক্সপ্রেসে যাত্রী কমছে। এর কারণ, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হওয়া। তাতে ট্রেনের চেয়ে কম সময়ে নোয়াখালী যাওয়া যাচ্ছে। আর ট্রেন সময়সূচি মেনে চলাচল না করার কারণেও যাত্রীর চাহিদা কমেছে। তারপরও ২০২৩ সালে ঢাকা থেকে নোয়াখালীতে নতুন এক জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত হয়। তবে ট্রেন চালুর জন্য পর্যাপ্ত কোচ না থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে তা চালু করা যায়নি। আর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে নোয়াখালীর পরিবর্তে কক্সবাজার পথে নতুন ট্রেন চালু করে।
সূত্র আরো জানায়, রেলের উত্তরাঞ্চলের আওতায় রয়েছে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগ। ওই পথে ৩২টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। পশ্চিমাঞ্চলে সব কটি ট্রেন গড়ে ১১৪ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলাচল করলও পূর্বাঞ্চলে গড় যাত্রী ৯৪ শতাংশ। তাছাড়া পশ্চিমাঞ্চলের সব কটি ট্রেনের পথই দীর্ঘ। পথে অনেক স্টেশনে ট্রেন থামে। ফলে বেশির ভাগ ট্রেনই সময় মেনে চলতে পারে না। অথচ কোনো কারণে একটি ট্রেন দেরি হলে বিকল্প রেক (নির্ধারিত কোচ নিয়ে তৈরি ট্রেন) থাকলে সময় মেনে চালানো সম্ভব। কিন্তু ওই ব্যবস্থা নেই। পঞ্চগড় থেকে ৬টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। সেগুলোর জন্য চারটি রেক রয়েছে। আর পশ্চিমাঞ্চলের বাকি ২৬টি ট্রেনের বিকল্প রেক নেই। ফলে যে ট্রেন যায়, সেটিই ফিরে আসে। পথে দুর্ঘটনা বা বিলম্ব হলে যাত্রীদের অপেক্ষায় থাকতে হয়। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের পথে চলাচলকারী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস গড়ে ১১১ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলাচল করে। ট্রেনটি থেকে মাসে গড় আয় দুই কোটি টাকার মতো। একইভাবে লালমনিরহাট এক্সপ্রেসে যাত্রী হয় গড়ে ১১৫ শতাংশ। মাসে গড়ে আয় সোয়া দুই কোটি টাকার মতো। কিন্তু ট্রেন দুটির বিকল্প রেক না থাকায় সপ্তাহের বেশির ভাগ দিনই দেরিতে চলাচল করে। তাছাড়া রাজশাহী থেকে পঞ্চগড়ের চিলাহাটি পর্যন্ত চলাচলকারী বরেন্দ্র এক্সপ্রেসে সবচেয়ে বেশি ১২৪ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলে। আর ঢাকা-পঞ্চগড় রুটের একতা এক্সপ্রেস থেকে সবচেয়ে বেশি আয় হয়। ট্রেনটি থেকে মাসে গড়ে চার কোটি টাকার বেশি আয় হয়।
এদিকে এ প্রসঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, লাভজনক রুটে ট্রেন বাড়ানো এবং লোকসানি রুট বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে কাজ চলছে। অতীতে রাজনীতিকদের ইচ্ছাপূরণের ট্রেনগুলো নিয়ে পর্যালোচনা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে অলাভজনক ও অপ্রয়োজনীয় ট্রেন বন্ধ করে দেয়া হবে। রেলে বর্তমানে কোচের সংকট আছে। এটার কারণেও কিছুটা ধীরে এগোচ্ছে রুট রেশনালাইজেশনের কাজ। তাছাড়া একবার একটা ট্রেন কোনো এলাকায় চালু করা হলে তা বন্ধ করতে গেলে স্থানীয়দের কাছ থেকে বাধা আসে। এগুলোও বিবেচনায় নিয়ে এগোচ্ছে রেলওয়ে।