
নেপাল-চীন সীমান্তে প্রবল বর্ষণের ফলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ ভেসে গেছে এবং অন্তত ২৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুই দেশের কর্মকর্তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। নেপালের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশটির ভূটেকোশী নদীতে আকস্মিক পানি বৃদ্ধি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে ১৮ জন নিখোঁজ হয়েছেন। নিখোঁজদের মধ্যে ৬ জন চীনা শ্রমিক এবং ৩ জন নেপালি পুলিশ সদস্য রয়েছেন। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, চীনের তিব্বতে ১১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নেপালের রাসুয়া জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা অর্জুন পৌডেল বলেন, নিখোঁজ চীনা শ্রমিকেরা কাঠমাণ্ডু থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার উত্তরে নির্মাণাধীন ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোতে কাজ করছিলেন। এই প্রকল্পটি চীনের সহায়তায় গড়ে তোলা হচ্ছিল। তিনি আরও বলেছেন, ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য আমদানিকৃত পণ্যসহ কয়েকটি কনটেইনার নদীতে ভেসে গেছে। সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ চলছে। নেপালের সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত ১১ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাহিনীর মুখপাত্র রাজা রাম বসনেত। উদ্ধার কার্যক্রম এখনও চলমান রয়েছে। ভূটেকোশী নদীর তাণ্ডবে অন্তত আটটি বৈদ্যুতিক গাড়ি ভেসে গেছে এবং একটি ক্ষুদ্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদীর প্রবাহ এতটাই তীব্র ছিল যে, অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত কয়েক বছর ধরে চীন নেপালে অবকাঠামো উন্নয়ন, সড়ক, হাসপাতাল ও বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। এবার সেসব প্রকল্পের মধ্যে কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে, চীনজুড়ে গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণ ও হঠাৎ বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ অবস্থায় দেশটি এ সপ্তাহে একটি ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ পাকিস্তানেও দুর্যোগ চলছে। দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) জানিয়েছে, ২৬ জুন থেকে টানা বৃষ্টিপাত, ভূমিধস ও ঘরবাড়ি ধসে অন্তত ৭৯ জন মারা গেছেন, যাদের মধ্যে ৩৮ জন শিশু।