
ইঞ্জিন সঙ্কটে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল রেলযাত্রীদের ভোগান্তি। কারণ দৈনিক চাহিদার দুই-তৃতীয়াংশ ইঞ্জিনের সরবরাহও মিলছে না। বর্তমানে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ইঞ্জিন বা লোকোমোটিভের সংখ্যা আশঙ্কাজনক পর্যায়ে নেমে এসেছে। আবার সরবরাহ পাওয়া ইঞ্জিনগুলোও ত্রুটিযুক্ত থাকে। ফলে পূর্বাঞ্চল রেল তীব্র শিডিউল বিপর্যয়ে পড়ছে। তাতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে পথিমধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রেন আটকে থাকা, বিলম্বে যাত্রা শুরু ও গন্তব্যে পৌঁছানোর পাশাপাশি ট্রেনের যাত্রা বাতিলের ঘটনা। বাংলাদেশ রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রেল পরিবহন বিভাগের প্রবর্তিত ওয়ার্কিং টাইম টেবিল অনুযায়ী পূর্বাঞ্চলে দৈনিক ১১৯টি ইঞ্জিনের চাহিদা রয়েছে। ১৬টি গুডস ট্রেনের জন্য ছাড়া বাকি ইঞ্জিনগুলো যাত্রীবাহী ট্রেনের জন্য বরাদ্দ। কিন্তু প্রকৌশল বিভাগ প্রতিদিন ৭৫-৭৮টির বেশি ইঞ্জিন সরবরাহ দিতে পারছে না। আবার সরবরাহ দেয়া ইঞ্জিনগুলোও ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় চলন্ত অবস্থায় ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ নানা ট্রাফিক বিড়ম্বনার মধ্যে পড়ছে। পথিমধ্যে আগে সীমিত আকারে ইঞ্জিন ফেইলিউর হলেও বর্তমানে তা বেড়ে গেছে রেকর্ড পরিমাণ। বর্তমানে রেলের দ্বিতীয় শ্রেণীর ট্রেনের পাশাপাশি প্রথম শ্রেণীর ট্রেনগুলোর যাত্রা শুরু, গন্তব্যে পৌঁছানো, পথিমধ্যে অলস বসে থাকা কিংবা যাত্রা বাতিলের মতো ঘটনা ঘটছে। সূত্র জানায়, বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি গত ১৭ জুন কুমিল্লা ছেড়ে আসার সময় ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। তখন আকেটি পণ্যবাহী ট্রেনের ইঞ্জিন ওই ট্রেনে যুক্ত যাত্রা করলেও পথিমধ্যে আবারো ওই ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। তবে লোকোমাস্টারসহ রানিং স্টাফদের সহায়তায় ইঞ্জিনটি ফের চালু করে ট্রেনটি চট্টগ্রামে যেতে পারে। একইভাবে ১৮ জুন বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন ময়মনসিংহে যাওয়ার সময় পাহাড়তলী স্টেশনে নষ্ট হয়ে যায়। বিকল্প ইঞ্জিন ডাকা হলেও না থাকায় পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে মেকানিক এনে ইঞ্জিনটি ঠিক করা হয়। তাতে শুধু পাহাড়তলী স্টেশনেই ট্রেনটির দেড় ঘণ্টা বিলম্ব হয়। একই দিন ৭ তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে ফৌজদারহাট যাওয়ার পর ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। পরে রিলিফ ইঞ্জিন ট্রেনটিকে নিয়ে কয়েক ঘণ্টা বিলম্বে ঢাকায় পৌঁছায়। ১৮ জুন চট্টগ্রাম-ঢাকাগামী গোধূলি এক্সপ্রেস ট্রেন হাসানপুর স্টেশনে গিয়ে ইঞ্জিন বিকল হয়। রিলিফ ইঞ্জিন ডাকা হলেও পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় কুমিল্লায় অপেক্ষায় থাকা মালগাড়ি থেকে ইঞ্জিন খুলে নিয়ে ট্রেনটি ৪ ঘণ্টা বিলম্বে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ১৯ জুন ঢাকা-কক্সবাজার রুটের পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন মন্দবাগ স্টেশনে যাওয়ার পর বিকল হয়। আখাউড়া থেকে রিলিফ ইঞ্জিন গিয়ে ট্রেনটিকে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা বিলম্ব করেছে চট্টগ্রাম নিয়ে যেতে পারে। একই দিন কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে গেলে বিকল্প ইঞ্জিন সংযুক্ত করে ট্রেনটির প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা বিলম্বে গন্তব্যে পৌঁছতে পারে। ২২ জুন পর্যটক ব্রাহ্মণবাড়িয়া আউটারে এসে ৩০ মিনিট ইঞ্জিন বিকলের কারণে বসে থাকার পর মেরামত করে আখাউড়ায় এসে ইঞ্জিন ফের বিকল হয়ে যায়। ট্রেনটি আখাউড়া গিয়ে ফের ইঞ্জিন বিকল হওয়ার পর ২ ঘণ্টা বসে থাকার পর ফিট দিয়ে চট্টগ্রাম পৌঁছে। ২২ জুন ইঞ্জিনের ওয়াটার লিকেজ-জনিত কারণে দুটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়।
এদিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সুবক্তগীন জানান, পূর্বাঞ্চলের মিটারগেজ রেলপথ ধারাবাহিকভাবে রূপান্তর হচ্ছে ডুয়াল গেজে। কয়েক বছর আগেই মিটার গেজের জন্য ৭০টি ইঞ্জিন ক্রয়ের একটি প্রকল্প ছিল। কিন্তু অর্থায়ন জটিলতায় কয়েক দফায় বিলম্বিত অবস্থায় প্রকল্পটি বাতিল হয়ে যায়। এখন নতুন করে ইঞ্জিন আমদানির একাধিক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিনের পুরনো ইঞ্জিনের মাধ্যমে ট্রেন সেবা চালানোর কারণে সংকট বেড়েছে। তাছাড়া নতুন নতুন রেলপথ নির্মাণ, নতুন ট্রেন সার্ভিস চালুর ফলেও ইঞ্জিনের ওপর চাপ বেড়েছে। পুরনো ইঞ্জিনগুলো দৃশ্যমান মেরামতের মাধ্যমে সার্ভিসে যুক্ত করা ও নতুন ইঞ্জিন আমদানি কার্যক্রম শুরু হলে রেলের লোকোমোটিভ সংকট কমে সেবার মান আরো বাড়ানো সম্ভব।
অন্যদিকে এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের যুগ্ম-মহাপরিচালক (লোকো) মো. আমিনুল হাসান জানান, রেলওয়ের মিটার গেজ ইঞ্জিনের স্বল্পতা রয়েছে। সংকট কাটাতে মেরামতের পাশাপাশি আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একটি রেলপথ সংস্কার প্রকল্পের অধীনে ৩০টির মতো লোকোমোটিভ সংগ্রহ করা হবে। ওসব ইঞ্জিন আমদানি হলে সংকট কেটে যাবে। তবে দীর্ঘদিনের পুরনো ইঞ্জিনগুলোর স্থায়ী মেরামতের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উদ্যোগটি সফল হলে চলতি বছরের মধ্যে মিটার গেজ ইঞ্জিনের প্রাপ্যতা বাড়বে।
এদিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সুবক্তগীন জানান, পূর্বাঞ্চলের মিটারগেজ রেলপথ ধারাবাহিকভাবে রূপান্তর হচ্ছে ডুয়াল গেজে। কয়েক বছর আগেই মিটার গেজের জন্য ৭০টি ইঞ্জিন ক্রয়ের একটি প্রকল্প ছিল। কিন্তু অর্থায়ন জটিলতায় কয়েক দফায় বিলম্বিত অবস্থায় প্রকল্পটি বাতিল হয়ে যায়। এখন নতুন করে ইঞ্জিন আমদানির একাধিক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিনের পুরনো ইঞ্জিনের মাধ্যমে ট্রেন সেবা চালানোর কারণে সংকট বেড়েছে। তাছাড়া নতুন নতুন রেলপথ নির্মাণ, নতুন ট্রেন সার্ভিস চালুর ফলেও ইঞ্জিনের ওপর চাপ বেড়েছে। পুরনো ইঞ্জিনগুলো দৃশ্যমান মেরামতের মাধ্যমে সার্ভিসে যুক্ত করা ও নতুন ইঞ্জিন আমদানি কার্যক্রম শুরু হলে রেলের লোকোমোটিভ সংকট কমে সেবার মান আরো বাড়ানো সম্ভব।
অন্যদিকে এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের যুগ্ম-মহাপরিচালক (লোকো) মো. আমিনুল হাসান জানান, রেলওয়ের মিটার গেজ ইঞ্জিনের স্বল্পতা রয়েছে। সংকট কাটাতে মেরামতের পাশাপাশি আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একটি রেলপথ সংস্কার প্রকল্পের অধীনে ৩০টির মতো লোকোমোটিভ সংগ্রহ করা হবে। ওসব ইঞ্জিন আমদানি হলে সংকট কেটে যাবে। তবে দীর্ঘদিনের পুরনো ইঞ্জিনগুলোর স্থায়ী মেরামতের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উদ্যোগটি সফল হলে চলতি বছরের মধ্যে মিটার গেজ ইঞ্জিনের প্রাপ্যতা বাড়বে।