
* কার্যকর ঐক্য হলে রাষ্ট্রক্ষমতা আমাদের হাতেই আসবে
* চরমোনাই পীরের মহাসমাবেশে জামায়াতে ইসলামী-এনসিপি-হিন্দু মহাজোটের নেতারা
* সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থাসহ ১৬ দফা ঘোষণা
* জনসমুদ্রে পরিনত হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
দেশের মানুষ পিআর (সংখ্যানুপাতিক) ব্যবস্থার পক্ষে রায় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। আগামী নির্বাচনে ইসলামি দলগুলোর পাশাপাশি দেশপ্রেমিক বিভিন্ন দল নিয়ে ঐক্য গড়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তিনি আরও বলেন, এই ঐক্য গড়তে পারলে আগামী দিনে আমাদের হাতেই আসবে রাষ্ট্রক্ষমতা। গতকাল শনিবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত জাতীয় মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন সারাদেশ থেকে দলে দলে মিছিল আর স্লোগানে মহাসমাবেশে এসেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীদের আগমনে লোকে লোকারণ্য হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মহাসমাবেশ পরিণত হয়েছে জনসমুদ্রে।
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধান জনগণের বিশ্বাস ও আশা-আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী। এই সংবিধান মেনেই স্বৈরাচার তৈরি হয়েছে। আজ দরকার রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। জুলাই অভ্যুত্থান শুধুমাত্র শাসক পরিবর্তনের জন্য ছিল না, এটি ছিল একটি রাষ্ট্র পুনর্গঠনের আন্দোলন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ২৪ জুলাইয়ের ঘটনার সঙ্গে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল, তাদের বিচার না করে নির্বাচন করা চলবে না। গণহত্যা, গুম, লুটপাটের জন্য ফ্যাসিস্ট চক্রের কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না।
নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার দাবি করে তিনি বলেন, যে দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সংসদে তাদের তত আসন থাকতে হবে। এটি জনগণের, জেনজি প্রজন্মের এবং সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের যৌক্তিক দাবি। প্রয়োজনে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের রায় নিতে হবে। তিনি বলেন, বারবার রক্ত দিয়েছি, কিন্তু সফলতা পাইনি, কারণ ভুল নেতা ও নীতির হাতে দেশ তুলে দিয়েছি। এবার ইসলামপন্থীদের ঐক্যের সময় এসেছে। এক বাক্সে ভোট নিলে ইসলামপন্থীরাই হবে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি। জুলাই অভ্যুত্থানের ফসল এই অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা নিঃস্বার্থভাবে এই সরকারের পাশে আছি। তবে সরকার যেন সংস্কার ও নিরপেক্ষতার পথ থেকে বিচ্যুত না হয়।
কৃষক-শ্রমিক, ব্যবসায়ী, প্রবাসী ও তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করব ইনশাআল্লাহ। নারীদের সম্মান ও নিরাপত্তা ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম রাজনৈতিক অঙ্গীকার। ফিলিস্তিন নিয়ে তিনি বলেন, আমরা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে। মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে বাইতুল মুকাদ্দাসের মুক্তির জন্য। উলামায়ে কেরামের মর্যাদা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, কিন্তু অবহেলিত। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দায়িত্ব পেলে আপনাদের মর্যাদা রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠা করবে। এখন সময় ঘরে ফসল তোলার। গ্রামে-গঞ্জে, কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি করে দাওয়াত দিন, ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরুন। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ।
এরআগে সমাবেশে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে সংসদে আসন বণ্টন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডসহ ১৬ দাবি জানিয়েছে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন। ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ রেজাউল করীমের সভাপতিত্বে মহাসমাবেশের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, ভবিষ্যৎ স্বৈরতন্ত্র রোধ করা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় জনমতের প্রতিফলন নিশ্চিতে সংস্কার কমিশনে মতামত দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। তা বিবেচনা কররত মহাসমাবেশ থেকে আহ্বান জানাচ্ছি।
সংস্কারের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে বাস্তবায়নের জন্য ১৬ দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো-১. সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের সঙ্গে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসই হবে রাষ্ট্র পরিচালনার মূল নীতি’ এ বিষয়টি অবশ্যই পুনঃস্থাপন করতে হবে। ২. সংসদের প্রস্তাবিত উভয়কক্ষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে। ৩. গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা বাস্তবায়নে জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে আগামী জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে। ৪. নির্বাচিত স্বৈরাচার, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও সন্ত্রাসী শ্রেণি রাষ্ট্রক্ষমতাকে ব্যবহার করে জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণের মাধ্যমে ধ্বংস করতে না পারে এবং একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনী মৌলিক রাষ্ট্রসংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। ৫. সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতে জনপ্রশাসনকে ঢেলে সাজাতে হবে। ফ্যাসিবাদেরক চিহ্নিত করে দ্রুত অপসারণ করতে হবে। ৬. পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার নিশ্চিতে বিদেশে পালাতক অপরাধীদের আটকে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরও জোরদার করতে হবে। ৭. দেশ থেকে পাচার করা অর্থ উদ্ধারে সক্রিয়, কার্যকর ও দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ৮. দেশে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও খুনখারাবি রোধে প্রশাসনকে আরও কার্যকর ও অবিচল হতে হবে। ৯. ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল করতে হবে। ১০. জাতীয় নির্বাচনের আগে সব স্থানীয় নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। আগামীতেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় নির্বাচনের বিধান প্রণয়ন করতে হবে। ১১. চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপি ও সন্ত্রাসীদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। ১২. জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বে অবশ্যই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ১৩. ঘুষ, দূর্নীতিসহ সকল প্রকার নাগরিক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তির বিরুদ্ধে শুধু রাজনৈতিক কারণে হয়রানিমূলক মামলা বন্ধ করতে হবে। হয়রানিমূলক সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। দেশের কোথাও কোনো রকম মব সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া যাবে না। মব সৃষ্টিকারীদের দমনে যথাযথ আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ১৪. দেশ বিরোধী ও ইসলাম বিরোধী সব ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবিলায় সাম্রাজ্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ ও আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। ১৫. জাতীয় নির্বাচনে দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক ও ইসলামী শক্তির ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। ১৬. স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা, জনগণের জান-মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা বিধান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষা, সর্বত্র শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং কাঙ্ক্ষিত উন্নতি ও অগ্রগতির লক্ষ্যে সকল পর্যায়ে ইসলামের সুমহান আদর্শের অনুশীলন করতে হবে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে যেখানে আসন বণ্টন হয় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে) দাবি করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতারা। তারা বলেন, এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে পেটনীতি করা রাজনৈতিকদের ভাত বন্ধ হয়ে যাবে। তারা তাল পাবে না। বক্তারা বলেন, আগামী নির্বাচন হবে পিআর পদ্ধতিতে। কিন্তু একটি বড় দল এই পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় না। তারা সেই ৫৩ বছরের পুরনো পদ্ধতি চায়। কারণ, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে পেটনীতি করা রাজনৈতিক নেতারা ঝরে পড়বে। তাদের লুটপাটের রাজনীতি বন্ধ হয়ে যাবে।
সমাবেশের প্রথম অধিবেশনে সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, সুযোগ এসেছে কাজে লাগাতে হবে। বিগত সময়ে ভোট দেওয়ার সুযোগ ছিল না। যারা ভবিষ্যতে নির্বাচন পরিচালনা করবেন, তারা কিন্তু ভেবে-চিন্তে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রচার ও দাওয়া হাফেজ মাওলানা ফজলে বারী মাসুদ বলেন, আমরা জাতীয় নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে চাই। তার দাবি, ‘৫ আগস্টের পর হাটে ঘাটে চাঁদাবাজি করছে একটি দল। এ জন্য আমাদের সবখানে নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে। আমরা কাজ করি, কিন্তু পরে দেখা যায় ভোটের দিন এক দল ভোট কেন্দ্র দখল করে বসে আছে। এদিন দুপুরে নামাজের বিরতীর পর সমাবেশের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়েছে। সংস্কার, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে মহাসমাবেশ চলছে। সেখানে বক্তব্য দিচ্ছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
সংস্কার, বিচার, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের দাবিতে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন দলের নেতারা যোগ দিয়েছেন। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলমান এ মহাসমাবেশ হিন্দ্,ু বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সংগঠনের নেতারাও রয়েছেন। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচানর বিরোধী হওয়ায় বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানায়নি ইসলামী আন্দোলন। মহাসমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, বোধিজ্ঞান ভাবনা কেন্দ্রের সভাপতি দয়াল কুমার বড়ুয়া, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল রোজারিও, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মূসা বিন ইজহার, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমাদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন রাজি, এনসিপি’র সদস্য সচিব মুহাম্মদ আখতার হোসাইন ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূর, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দীন, খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হক্কানি এবং এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু।
এদিন সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতে থাকে নেতাকর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের উপস্থিতে মুখর হয়ে উঠে সোহরাওয়াদী উদ্যান। এ সময় তাদের উজ্জীবিত রাখতে মূল মঞ্চ থেকে জ্বালাময়ী বক্তব্য আর ইসলামিক গান পরিবেশন করা হচ্ছে। এদিন সকাল ১০টায় কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় জাতীয় মহাসমাবেশের প্রথমপর্ব। এই পর্বে বক্তব্য রাখছেন জেলা ও মহানগরের নেতারা। পরে মূল পর্ব শুরু হয় দুপুর ২টায়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কাকরাইল সার্কেল, কাকরাইল মসজিদ, মৎস্য ভবন মোড় থেকে শাহবাগ, মৎস্য ভবন মোড় থেকে কদম ফোয়ারা, শিক্ষা ভবন মোড়, দোয়েল চত্বর, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মন্দির গেট, টিএসসি ও শাহবাগ এলাকায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করছেন। কিছু সময় পর পরিবেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাস এসে থামছে, সেগুলোর পার্কিংয়ের পথ দেখাচ্ছেন তারা। বাস থেকে নেমে নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে মিছিল করতে করতে প্রবেশ করছেন উদ্যানে। তবে উদ্যানের ভেতর দেখা যায়, যারা বয়োজ্যেষ্ঠ আছেন এবং ভোরের দিকে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন তারা বিভিন্ন গাছের নিচে বিশ্রাম করছেন। তাদের একজন ৭০ ঊর্ধ্ব আব্দুল কাদের বলেন, আমরা কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে চারটি বাসে করে এখানে এসেছি। সকাল সাতটার দিকে এখানে এসে নেমেছি। আপাতত কোনো কাজ নেই বলে গাছের নিচে বিশ্রাম করছি। দুপুরের পরে সমাবেশে ঢুকবো। এছাড়া আরও দেখা গেছে, উদ্যানে থাকা লেকের পানিতে প্রায় অনেকেই গোসল ও অজু করে নিচ্ছেন। তবে মঞ্চে উঠে কিছু সময় পর পর বিভিন্ন জেলার নেতারা বক্তব্য দিচ্ছেন। একটি বক্তব্য ফাঁকে ফাঁকে পরিবেশন করা হচ্ছে। মঞ্চের সামনে থাকা হাজার হাজার নেতাকর্মীর অনেকের হাতে রয়েছে পাখা। গরমে এই পাখা দিয়ে তারা নিজেদের বাতাস দিচ্ছেন।