
নরসিংদী প্রতিনিধি
পলাশে ছাত্রদল-বিএনপির সংঘর্ষে আহত ছাত্রদলকর্মী ইসমাইল হোসেন (২৬) মারা গেছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার ছয়দিন পর গতকাল শনিবার দুপুর ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ইসমাইল পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার খানেপুর গ্রামের আব্দুর রহিম ভূঁইয়ার ছেলে। নিহতের বাবা আব্দুর রহিম ভূঁইয়া বলেন, দুপুর ২টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ হস্তান্তর করা হবে এবং জানাজা শেষে গ্রামের বাড়িতে তার দাফন করা হবে। আমার ছেলের হত্যার বিচার ও জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাই। পলাশ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. নাজমুল হোসেন সোহেল বলেন, ইসমাইল ছাত্রদলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ মিছিলে জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েল ও তার লোকজন গুলি করেন। এতে ইসমাইল গুলিবিদ্ধ হয়ে ছয়দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর গতকাল শনিবার মারা যান। এ ঘটনার যেন বার বার পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য তার গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। পলাশ থানার ওসি মো. মনির হোসেন বলেন, আমরা জানতে পেরেছি গুলিবিদ্ধ ইসমাইল মারা গেছেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের এখনো জানায়নি। বিষয়টি জানানোর পর পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, ১৫ জুন সন্ধ্যার দিকে পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার বিএডিসির মোড়ে পলাশ উপজেলা ছাত্রদল ও জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েলের শোডাউনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। এ ছাড়া ছাত্রদলকর্মী ইসমাইল ও পথচারী সোহেল মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। পরে আহত ইসমাইলকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ইসমাইল ঢামেক হাসপাতালে ভর্তির ছয়দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় সেদিন রাতেই ঘোড়াশাল পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সিয়াম মিয়া বাদী হয়ে জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর কবির জুয়েলকে প্রধান আসামি করে নয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করে পলাশ থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে জুয়েলের পক্ষ থেকে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনার গত বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বিএনপি নেতা জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।