মামলার আগেই আপস-মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক, বড় পরিবর্তন আসছে আইনে

আপলোড সময় : ১৫-০৬-২০২৫ ১২:৫২:৩২ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৫-০৬-২০২৫ ১২:৫২:৩২ পূর্বাহ্ন
দেশে প্রতি বছর প্রায় ৫ লাখ মামলা দায়ের হয়। এই বিচারিক ভার দেশের আদালতব্যবস্থাকে শুধু দুর্বিষহ করে তুলছে না, ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রক্রিয়াকেই দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল করে তুলছে। এমন বাস্তবতায় মামলার সংখ্যা হ্রাস, বিচারপ্রাপ্তির গতি বাড়ানো এবং মানবাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার আইনি কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে সরকার। গতকাল শনিবার রাজধানীর বেইলি রোডে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই উদ্যোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, “মানুষকে মামলার অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে আইন মন্ত্রণালয় তিনটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করছে- দ্রুত ও স্বল্প খরচে মামলা নিষ্পত্তি, ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ এবং আইনি সহায়তা কার্যক্রম সম্প্রসারণ।”ড. আসিফ নজরুল জানান, ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ায় আপসযোগ্য পারিবারিক, দেওয়ানি, ফৌজদারি ও চেক সংক্রান্ত মামলাগুলো মামলা দায়েরের পূর্বেই মধ্যস্থতার আওতায় আনতে হবে- এমন প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এতে উভয় পক্ষকে আবশ্যিকভাবে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে আপসের চেষ্টা করতে হবে। এর ফলে বিচারপ্রক্রিয়ার বাইরে থেকেই বিরোধ নিষ্পত্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা আদালতের মামলার চাপ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে বলে ধারণা। আইন উপদেষ্টা জানান, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সিভিল প্রসিডিউর কোড (সিপিসি) ইতিমধ্যে সংশোধন করা হয়েছে এবং ফৌজদারি কার্যবিধি (সিআরপিসি) সংশোধনের কাজ চলমান রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী এক মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অধ্যাদেশ আইনে পরিণত হবে।ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে বিচারকদের প্রশিক্ষণ, দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি এবং সম্পদের বিবরণী সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি। সেইসঙ্গে ডিজিটালাইজেশন ও আইনজীবীদের সক্রিয় সম্পৃক্ততার মাধ্যমে বিচারব্যবস্থা আরও কার্যকর করা হচ্ছে।বর্তমানে বছরে যে ৩৫ হাজার মামলা সরকারি আইনগত সহায়তা কর্মসূচির মাধ্যমে নিষ্পত্তি হচ্ছে, সেটিকে দুই লাখে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে একজন বিচারকের পরিবর্তে তিনজন বিচারককে লিগ্যাল এইড কার্যক্রমে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এতে মামলা নিষ্পত্তির হার বৃদ্ধি ও প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।সভায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন জেলার আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধিরা জানান, গ্রামাঞ্চলের গরীব ও প্রান্তিক মানুষ সরকারের এই আইনগত সহায়তা কার্যক্রম সম্পর্কে জানেন না। এ জন্য প্রচার বাড়ানোর পাশাপাশি বিভাগীয় পর্যায়ে মতবিনিময় সভা আয়োজনের পরামর্শ দেওয়া হয়।সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার পরিচালক আজাদ সুবহানি, ঢাকা জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সায়েম খান, ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা জেলার আইনজীবী নেতৃবৃন্দ, ইউএনডিপি, জিআইজেড, আইএলও, ব্র্যাক, ব্লাস্ট ও প্রশিকার প্রতিনিধিরা। আলোচনার শেষে ড. আসিফ নজরুল অংশগ্রহণকারীদের আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে সুপারিশ পাঠানোর আহ্বান জানান।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net