অপ্রত্যাশিত নাটকীয়তা আর দুর্দান্ত ফুটবলের এক রাত। ঠিক এমনই এক স্মরণীয় সন্ধ্যায় ইংল্যান্ডকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে সেনেগাল। গত মঙ্গলবার সিটি গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে এই জয়ের মধ্য দিয়ে আফ্রিকার কোনো দেশ প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডকে হারালো। যা ২২ ম্যাচের মধ্যে একেবারেই অভূতপূর্ব ঘটনা। ম্যাচের শুরুটা ছিল ইংল্যান্ডের জন্য স্বপ্নের মতো। ম্যাচের সপ্তম মিনিটেই অধিনায়ক হ্যারি কেইনের গোলে এগিয়ে যায় থ্রি লায়নসরা। দর্শকদের মধ্যে তখন জয়ের স্বপ্ন বোনা শুরু হয়ে গেছে। তবে আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন সেনেগাল ছিল সেই স্বপ্নভঙ্গের জন্য প্রস্তুত। ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় সেনেগাল। ৪০তম মিনিটে নিকোলাস জ্যাকসনের নিখুঁত ক্রসে গোল করেন ইসমাইলা সার। নতুন কোচ থমাস টুখেলের অধীনে এটিই ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করা প্রথম গোল। যা টিমের রক্ষণভাগে দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফিরে আসার মরিয়া চেষ্টা চালায় ইংল্যান্ড। পিছিয়ে থাকার সময় জুদ বেলিংহ্যাম বল জালে পাঠালেও ভিএআর রিপ্লেতে আগের মুহূর্তে হ্যান্ডবলের প্রমাণ মেলায় তা বাতিল হয়ে যায়। ফলে হতাশা আরও বেড়ে যায় স্বাগতিক শিবিরে। ৬২তম মিনিটে সেনেগালকে এগিয়ে দেন হাবিব দিয়ারা। আর ম্যাচের যোগ করা সময়ে বদলি খেলোয়াড় চেইখ সাবালি গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে দেন ৩-১-এ। শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই ইংলিশ দর্শকদের অসন্তোষ ধ্বনিতে ভরে ওঠে গোটা গ্যালারি। এই জয়ের ফলে টানা ২৪ ম্যাচে অপরাজিত রইল সেনেগাল। যা তাদের ধারাবাহিকতা এবং দলীয় সংহতির এক উজ্জ্বল প্রমাণ। অন্যদিকে, টুখেলের অধীনে প্রথম হার নিয়েই ইংল্যান্ডে কোচিং অধ্যায় শুরু হলো, যা ভক্তদের মুখে হাসি নয়, বরং ভ্রু কুঁচকে দিয়েছে। এই ঐতিহাসিক জয় শুধু সেনেগালের ফুটবল ইতিহাসে একটি সোনালি অধ্যায় হিসেবেই যুক্ত হলো না, বরং আন্তর্জাতিক মঞ্চে আফ্রিকান ফুটবলের ক্রমবর্ধমান শক্তির স্পষ্ট বার্তাও দিল বিশ্বকে।