আইপিএলের সদসমাপ্ত আসর চলাকালীন ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পাকিস্তানে একটি সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছিল ভারত। ভারতশাসিত কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দেশটির কয়েকটি স্থাপনায় হামলা করে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী। জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা হামলা করলে এক সপ্তাহের বেশি সময়ের জন্য স্থগিত হয়ে যায় আইপিএল। দু’দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা শুরু হলে আইপিএল খেলতে আসা বিদেশি তারকারা ভারত ছাড়তে থাকেন। যুদ্ধবিরতির পর পুনরায় টুর্নামেন্ট শুরু হলেও সব ক্রিকেটার না ফেরায় টুর্নামেন্টের উত্তেজনা ও গতি কমে যায়। তবে যুদ্ধপরিস্থিতির কারণে খেলা বন্ধ থাকাটাই কল্যাণ বয়ে এনেছে আইপিএলের নতুন চ্যাম্পিয়ন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর। গত মঙ্গলবার পাঞ্জাব কিংসকে ৬ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো আইপিএলের সোনালী ট্রফি জেতার পর বেঙ্গালুরুর হেড কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারও সেটি স্বীকার করেছেন। কেননা, ৯ মে থেকে এক সপ্তাহের বিরতির মধ্যেই আঙুলের চোট থেকে সেরে ওঠেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক রাজত পতিদার। এছাড়া দলের প্রধান উইকেটশিকারী জশ হ্যাজেলউড অস্ট্রেলিয়ায় রিহ্যাব ও ট্রেনিং শেষে কাঁধের চোট থেকে ফেরেন মাঠে। ফ্লাওয়ার বলেন, ‘এমনকি আজ রাতে যখন আমরা ট্রফি জয়ে উদযাপন করছিলাম, তখনও দু-একজন আমার কাছে বলছিল যে এই বিরতিটাই হ্যাজেলউডকে ফেরার সুযোগ দিয়েছে। আর রাজতের জন্য এটা ছিল গুরুত্বপূর্ণ - কারণ তার হাতে যে চোট ছিল, তা থেকে সে সেরে উঠতে পেরেছে। তিনি যোগ করেন, ‘আমাদের জন্য এটা (খেলার বিরতি) একটু শ্বাস নেওয়ার সুযোগ এনে দিয়েছিল। ওই সময় আমরা কিছুটা ধীরে শুরু করেছিলাম।’ এই মৌসুমে বেঙ্গালুরুর সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী ছিলেন জশ হ্যাজলউড। ১২ ম্যাচে ২২ উইকেট শিকার করেছেন অস্ট্রেলিয়ান ডানহাতি পেসার। একইসঙ্গে ইনজুরির কারণে কয়েকটি ম্যাচ মিস করা পতিদার ফর্মে ছিলেন। পুরো মৌসুমে ১৫ ম্যাচে ১৪৩.৭৭ স্ট্রাইক রেটে ৩১২ রান করেন তিনি। প্রথমবার অধিনায়কত্ব করেও পতিদারের পারফরম্যান্স ও নেতৃত্ব দেখে তাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন কোচ ফ্লাওয়ার। কোচ বলেন, ‘আমার মনে হয় রাজতের সবচেয়ে প্রশংসনীয় দিক হলো, অল্প অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও অধিনায়কত্ব তার ব্যাটিংয়ে কোনো প্রভাব ফেলেনি। আমি ওকে খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেছি। সে এখনও আগের মতোই বিনয়ী, ভদ্র, মাটির মানুষ। এই দায়িত্ব তাকে বদলায়নি।’ ফ্লাওয়ার আরও বলেন, ‘বেঙ্গালুরুর মতো ফ্র্যাঞ্চাইজির অধিনায়কত্ব করা খুব কঠিন কাজ। আমি যখন ওর বয়সে ছিলাম, তখন আমি অনেক খারাপভাবে ক্যাপ্টেন্সি করেছি। তাই সে যেভাবে দলকে সামলেছে, সেটা আমার গভীর শ্রদ্ধা আদায় করে নিয়েছে। বড় বড় তারকা খেলোয়াড়দের নেতৃত্ব দেওয়া সহজ ব্যাপার নয়। কিন্তু রাজতের নেতৃত্বে এক ধরনের শান্ততা ছিল, যা সত্যিই অনন্য। চাপের মুখে সে যেভাবে ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা যথেষ্ট সম্মান পাওয়ার যোগ্য।’