খুশির ঈদযাত্রায় ট্রেন ছাড়ছে সময় মতোই উচ্ছ্বসিত ঘরমুখো মানুষ

আপলোড সময় : ০১-০৬-২০২৫ ০৫:০৮:০৮ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০১-০৬-২০২৫ ০৫:০৮:০৮ অপরাহ্ন
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিশেষ ব্যবস্থায় ট্রেন পরিচালনা করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। গতকাল শনিবার ঈদযাত্রার প্রথম দিন সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ১২টি আন্তঃনগর ট্রেন ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র রংপুর এক্সপ্রেস ২০ মিনিট বিলম্বে ছাড়ে। এদিন সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, ভোর থেকেই হাজারো যাত্রী স্টেশনে আসছেন। ঈদ উদ্?যাপন করতে প্রিয়জনের কাছে ফিরতে মুখিয়ে থাকা মানুষের পদচারণায় স্টেশন চত্বর মুখরিত। যাত্রীদের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্টেশনে তিন স্তরের চেকিং ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। টিকিটবিহীন কেউ যেন স্টেশনে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, রেল পুলিশ এবং আনসার সদস্যরা যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। স্টেশনে আসা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অধিকাংশই শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবী পরিবারের সদস্য, যারা ঈদের ছুটি কাটাতে নিজ নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন। জামালপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী দীনি ইসলাম বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটাতে আমি বাড়ি যাচ্ছি। গত শুক্রবার থেকে ছুটি শুরু হলেও টিকিট পাইনি, ফলে আজকে বাড়ি যাচ্ছি। ঈদ উপলক্ষে বাড়ি যাওয়ার আনন্দটাই অন্যরকম। রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে পরিবারের সদস্যদের বাড়ি পাঠাচ্ছেন ইমরান হোসেন। তিনি বলেন, ঈদে ঠিক কাছাকাছি সময়ে রংপুর যাওয়াটা অনেক কঠিন হয়ে ওঠে। ফলে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছার জন্য পরিবারের সদস্যদের আজই বাড়ি পাঠাচ্ছি। আগে থেকে টিকিট কাটা হয়েছিল। আমার ঈদের ছুটি শুরু হতে আরও ৫ দিন লাগবে। সুন্দরবন এক্সপ্রেসের যাত্রী আফসানা বেগম বলেন, ঈদ মানেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, আর তাই অনেক কষ্ট করেও টিকিট সংগ্রহ করেছি। প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের সময় চেকিংয়ে টিটিইরা টিকিট চেক করেছে। কিছুটা ভিড় থাকলেও সবাই শৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে, এটা প্রশংসনীয়। দিনাজপুরের পার্বতীপুর যাবেন রুহুল আমিন। টিকিট পেয়ে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে তিনি বলেন, অনলাইনে টিকিট কাটার জন্য অনেকবার চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারিনি। এরপরও তো বাড়ি যেতে হবে, তাই স্টেশনে আসলাম রাত আটটার ট্রেনে যাওয়ার জন্য। কাউন্টারে লাইনে এসে দাঁড়ালাম যেন অন্তত একটি টিকিট পাই। স্ট্যান্ডিং টিকিট পেয়েছি। এটা ভেবে ভালো লাগছে যে অন্তত দাঁড়িয়ে গেলেও ঈদটা বাড়িতে করতে পারবো। মশিউর রহমান নামের আরেক যাত্রী বলেন, গত ঈদে বাড়ি যাইনি। ঈদ করতে এবার বাড়ি যাচ্ছি। অনলাইনে টিকিট পেতে তিনদিন চেষ্টা করেছি, তবে পাইনি। তাই পরে চিন্তা করলাম স্ট্যান্ডিং টিকিট কেটেই বাড়ি যাবো। রাত ৮টায় ট্রেন, তবে টিকিটের জন্য বিকেলেই চলে আসলাম। দাঁড়ানো হোক বা যাই হোক, একটা টিকিট পেলেই খুশি। ঢাকার লালবাগে থাকেন ইব্রাহিম। তবে জরুরি কাজে তাকে নওগাঁ যেতে হচ্ছে। এর আগে ট্রেনে মাত্র একবার ভ্রমণ করেছেন তিনি। শনিবার ট্রেনের টিকিট কাটতে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে ইব্রাহিম বলেন, কোন ট্রেন যাবে, কখন যাবে, টিকিট কখন ছাড়বে-আসলে কিছুই জানি না। আসলাম, কোনোরকম একটা টিকিট পেয়ে নওগাঁ যেতে পারলেই হবে। কাউন্টারে এসে টিকিটি পেয়ে উচ্ছ্বসিত নাজমুল হক বলেন, জয়পুরহাট যাবো, টিকিট পেয়েছি। স্ট্যান্ডিং টিকেট হলেও বাড়ি যেতে পারছি এটাই ভালো লাগছে। ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ের নেয়া কর্মপরিকল্পনায় জানানো হয়েছে, ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভ্রমণ সুবিধার্থে বাড়তি পাঁচ জোড়া অর্থাৎ ১০টি বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হবে। এ সময় নিয়মিত আন্তঃনগর ট্রেনগুলো আগের মতোই চলবে। স্থগিত থাকবে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর ডে অফ। ঢাকায় কোরবানির পশু সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে তিনটি ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন দুই দিনে চালানো হবে। ঢাকা, বিমানবন্দর, জয়দেবপুর, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী, খুলনাসহ সব বড় বড় স্টেশনে জিআরপি, আরএনবি, বিজিবি ও স্থানীয় পুলিশ এবং র‌্যাবের সহযোগিতায় টিকিটবিহীন যাত্রী স্টেশনে প্রবেশের প্রতিরোধে সার্বক্ষণিক প্রহরার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিত করতে ঈদের আগে-পরে ১০ দিন করে মোট ২০ দিন ট্রেনে সেলুনকার সংযোজন না করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এদিকে ঈদুল আজহার ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরার সুবিধার্থে শুরু হয়েছে ফিরতি ঈদযাত্রার ট্রেন টিকিট বিক্রি। বাংলাদেশ রেলওয়ের বিশেষ ব্যবস্থায় শনিবার বিক্রি হয়েছে ১০ জুনের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমাঞ্চলগামী ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হবে সকাল ৮টায়, আর পূর্বাঞ্চলগামী ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হবে দুপুর ২টায়। যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে এবারও শতভাগ আসন অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে। ঈদ-পরবর্তী সাত দিনের (৯-১৫ জুন) ট্রেন টিকিট বিক্রি হবে ধাপে ধাপে। তারিখ অনুযায়ী বিক্রির সময়সূচি হলো- ৯ জুনের টিকিট : ৩০ মে, ১০ জুনের টিকিট : ৩১ মে, ১১ জুনের টিকিট : ১ জুন, ১২ জুনের টিকিট : ২ জুন, ১৩ জুনের টিকিট : ৩ জুন, ১৪ জুনের টিকিট : ৪ জুন ও ১৫ জুনের টিকিট : ৫ জুন।

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net