
* নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহের সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা বাজেট চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা
* সরকারকে শিল্পবান্ধব নীতি নিয়ে এগিয়ে আসার তাগিদ
* চ্যালেঞ্জের মুখে রফতানি বাজার হারালে চাপে পড়বে দেশের রিজার্ভ
জ্বালানির নিশ্চিয়তা চান পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা। আসছে বাজেটে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহের সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা চান রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীরা। অডিটের নামে ভোগান্তি না করার ফয়সালা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সেই সঙ্গে উৎসে কর কমানোসহ নানা কৌশলে সরকারকে শিল্পবান্ধব নীতি নিয়ে এগিয়ে আসার তাগিদ তাদের। আগামী বাজেটেই ব্যবসা-বিনিয়োগবান্ধব একটি রূপরেখা দেখতে চান অর্থনীতিবিদরাও।
একদিকে, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা আর ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধে অস্থির বিশ্ববাজার। অন্যদিকে, দেশের ভেতরে চড়ে আছে ব্যাংক ঋণের সুদহার, কল-কারখানায় বাড়ানো হয়েছে গ্যাসের দাম। এসব চ্যালেঞ্জের মুখে রফতানি বাজার হারালে চাপে পড়বে দেশের রিজার্ভ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ। এমন জটিল সমীকরণের মধ্যেই আগামী মাসে আসছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট।
বাজেটে সবুজ কারখানায় ১০ শতাংশসহ পোশাক খাতে বিদ্যমান ১২ শতাংশ করপোরেট কর হার এবারও বহাল রাখার দাবি তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তাদের। বাজার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ছয় শতাংশ চান তারা। অ্যাপারেল ভিলেজের পরিচালক মির্জা ফাইয়াজ হোসেন বলেন, আমাদের আগে উৎসে কর ছিল, দশমিক ৬ শতাংশ। আমরা যদি সেখানে ফেরত যেতে পারি তাহলে ভালো হবে। ব্যবসা সহজীকরণের পথে অডিট জটিলতা থেকে মুক্তি চান উদ্যোক্তারা। পোশাকের বাজারে ভারত-ভিয়েতনামকে টেক্কা দিতে নীতি ও অর্থ সহায়তা দেয়াসহ নানা কৌশলে সরকারকে এগিয়ে আসার তাগিদ তাদের।
বিজিএমইএ নির্বাচন ২০২৫-২৭ সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার মো. আবুল কালাম বলেন, আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র প্রণোদনা বলে না। তবে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছে। বিভিন্ন সেক্টরের ভ্যাট কম করতে পারে। সিএমের ওপর ডলার বাড়িয়ে দিতে পারে। বিজিএমইএ নির্বাচন ২০২৫-২৭ ফোরাম প্যানেল লিডার মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, কাস্টমসের অডিট প্রক্রিয়া যে হয়রানি, আমরা চাই ডিজিটালাইজ হোক। সব কিছু যদি অনলাইনে থাকে, তাহলে অডিট করতে হবে কেনো? আর যদি করতে হয়, আমরা চাই সেটা থার্ডপার্টি কেউ করুক।
তবে, জ্বালানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে সব উদ্যোগ ভেস্তে যাবে দাবি করে গ্যাস-বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে সরকারের স্পষ্ট কৌশল দেখতে চান পোশাক শিল্পের দ্বিতীয় প্রজন্ম।
বায়রার সভাপতি আবরার হোসেন সায়েম বলেন, গ্যাসের প্রায়োরাইটেজেশন ও এনার্জি কমিক্টমেন্ট ঠিক রাখতে হবে। স্পষ্ট করতে হবে যে, আপনারা এতটুকু এনার্জি পাবেন। পরে সেটা পূরণ করতে না পারলে যে ক্ষতি হবে সে বিষয়ে প্রণোদনা
রাখতে হবে। এটা একদম সহজ হিসাব। উৎপাদন খাত যেন পণ্য তৈরি ও সময় মতো বাজারে সরবরাহ করতে পারে সেজন্য জ্বালানিসহ বিদ্যমান সংকট দূর করার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আইনুল ইসলাম বলেন, যেসব এরিয়াতে শিল্পকারখানা আছে, সেখানে যেকোনো মূল্যে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ করতে হবে। ম্যানমেইড ফাইবারসহ বৈচিত্র্যময় পোশাক তৈরিতে বিশেষ ঋণ-বিনিয়োগ কর্মসূচি নিয়েও সরকারকে কাজ করার তাগিদ দিচ্ছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।