পুঠিয়ায় প্রশাসনের যোগসাজশে অবৈধ পুকুর খননের হিড়িক

আপলোড সময় : ০৯-০৫-২০২৫ ১০:৩৮:২০ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৯-০৫-২০২৫ ১০:৩৮:২০ অপরাহ্ন
পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর পুঠিয়ায় প্রশাসনের যোগসাজশে অবৈধ পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। কোথাও তিনফসলী জমিতে আবার কোথাও পুরাতন পুকুর সংস্কারে নামে খননের কাজ চলছে। উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা করে দিন-রাত পুকুর খনন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে উপজেলার গ্রামীণ সড়কগুলোতে পুকুরের খননকৃত মাটি পরিবহন করে বিক্রি করায়। উপজেলা জুড়ে সড়কগুলো প্রায় নষ্টের পথে এসে দাঁড়িয়েছে। উপজেলাবাসীরা অবাক হয়ে বলছেন, অন্তবর্তী কালীন সরকারের সময়ে কিভাবে অবৈধ পুকুর খনন করা সম্ভব হচ্ছে। অবশ্য উপজেলা প্রশাসনের নিকট কোনো ব্যক্তি অভিযোগ দিলে এস্কেভেটরের (ভেকুর) ব্যাটারি খুলে আনতে দেখা যায়। পরবর্তি সময়ে দুই/একদিনের ভিতর আবার সমঝোতার মাধ্যমে ব্যাটারি দিয়ে দেওয়া হয় বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এবং থানা পুলিশের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে প্রতিনিয়ত জমির আকার পরিবর্তন করে পুকুর খনন করা হচ্ছে। বর্তমানে ১৮টি স্থানে পুকুর খননের কাজ চলছে। থানা পুলিশ বলছে পুকুর খনন বন্ধ করার দায়িত্ব উপজেলা প্রশাসনের। আর উপজেলা প্রশাসন বলছে, আমারা রাতে গিয়ে পুকুর খনন কিভাবে বন্ধ করবো। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন এবং থানায় পুকুর খননকারীদের প্রতিনিয়ত দেখা যায়। পুকুরের মাটি বিক্রেতারা এফএনএসকে জানিয়েছেন, থানা ও উপজেলা প্রশাসনের মৌখিক অনুমতি নিয়ে আমরা পুকুর খনন এবং সংস্কার করে থাকি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম নুর হোসেন নির্ঝর গত বুধবার ও গত বৃহস্পতিবার উপজেলার শিলমাড়িয়া ও বানেশ্বর ইউনিয়নের ছান্দাবাড়ি রাতোয়াল লেপপাড়া বারপাকিয়ায় বিলে পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন এবং পুকুর খনন কাজে নিয়োজিত যন্ত্রপাতিগুলো খুলে এনেছে। এলাকাবাসীরা বলছেন, লোক দেখানো জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়ে থাকে। তাই জরিমানা করা হয়ে থাকে অতি সামান্য পরিমাণের টাকা।
শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের হোসেন আলি বলেন, আগে আ.লীগের নেতারা পুকুর খননের ব্যাপারগুলি নিয়ন্ত্রণ করত। এখন বিএনপির কিছু নেতা নিয়ন্ত্রণ করছে। পুকুর খননকারী দালালদের নিকট মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছেন। পুকুরখননকারীদের সঙ্গে স্থানীয় নেতাদের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে জড়িয়ে রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট স্থানীয়রা বলছে, শুধুমাত্র অনেক টাকা লেনদেনের কারণে, পুকুর খননের কার্যক্রম কোনো ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। তাই উপজেলা জুড়ে তিনফসলি জমিতে পুকুর খনন করা হচ্ছে। আবুল কাশেম আলি নামক ব্যক্তি বলেন, দেশের মানুষ কি শুধু মাছ খেয়ে জীবনধারণ করবে। অন্য ফসলেও প্রয়োজন রয়েছে। উপজেলায় আস্তে আস্তে ফসলি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের আবুল কালাম বলেন, যেভাবে মাটি কাটা চলছে, এক সময় এই ইউনিয়নে কোনো ফসলি জমি থাকবে না। তারপর, যত্রতত্র পুকুর খননের ফলে এলাকায় এক সময় ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। ইতোমধ্যে শিলমাড়িয়া ইউপির সিংহভাগ জমি পুকুর খনন করা হয়ে গিয়েছে। পুকুরের খননকৃত মাটি ডাম ট্রাকে ইটভাটা ও বিভিন্ন নীচু স্থান পুরন করার জন্য মাটি বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার টাকা করে। উপজেলার গ্রামীণ সড়কগুলোতে পুকুরের খননকৃত মাটি পরিবহন করে বিক্রি করায়। উপজেলা জুড়ে সড়কগুলো প্রায় নষ্টের পথে এসে দাঁড়িয়েছে। যা সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে করে গ্রামীণ সড়কগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম নুর হোসেন নির্ঝর এফএনএসকে বলেন, উপজেলা প্রশাসন কোনো পুকুর খনন করার কিংবা সংস্কার করার জন্য অনুমতি দেয়নি। আমরা অবৈধ পুকুর খননকারী এবং গ্রামীণ সড়ক নষ্ট করার বিরুদ্ধে প্রতিনয়ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আসছি।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net