
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগামীকাল মঙ্গলবার দেশে ফিরছেন। এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে বহনকারী কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। গতকাল রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। লন্ডনের স্থানীয় সময় আজ সোমবার হিথরো বিমানবন্দর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি যাত্রা শুরু করবে বলে জানান তিনি।
গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সেই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করেই দেশে ফিরতে পারেন তিনি-দলের পক্ষ থেকে এমনটাই বলা হচ্ছিল। সেটা না পাওয়া গেলে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইটে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছিল। কিন্তু সেই অনিশ্চয়তা কেটে গেছে, কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া নিশ্চিত হয়েছে। সেটিতে করেই আগামীকাল সোমবার লন্ডন থেকে দেশের উদ্দেশে রওনা করবেন বিএনপির চেয়ারপারসন। সঙ্গে থাকবেন দুই পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান ও শর্মিলা রহমান। কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া নিশ্চিত করার খবরটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত শনিবার রাতে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান।
দেশে ফেরার পর খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানানোর বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, নেত্রী ফিরে আসবেন। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মধ্যে প্রচণ্ড আবেগ আছে। প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষ উৎসাহিত, উজ্জীবিত যে তাদের প্রিয় নেত্রী দেশে ফিরে আসবেন। তাকে যথাযথ অভ্যর্থনা জানানো, এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। শুধু বিএনপি নয়, সারা দেশের মানুষ আজকে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত হয়ে আছে। এ নিয়ে আমরা যৌথ সভা করেছি। জনগণ যাতে তাদের নেত্রীকে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে অভ্যর্থনা জানাতে পারেন, আমরা সেই ব্যবস্থা নিয়েছি। এর আগে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গতকাল রোববার সন্ধ্যায় লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন খালেদা জিয়া। গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া লন্ডনে যান। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছিলেন।
এদিকে, চার মাস পর আগামীকাল মঙ্গলবার লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তাকে অভ্যর্থনা জানাতে দলটির পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। অত্যন্ত শৃঙ্খলার সঙ্গে রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে কোনো যানজট সৃষ্টি না করে এক হাতে জাতীয় পতাকা এবং আরেক হাতে দলীয় পতাকা নিয়ে দেশনেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে বিএনপি। লন্ডনে চিকিৎসা শেষে চার মাস পর খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার দিন তাকে অভ্যর্থনা দেয়া হবে বলে জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সাধারণের চলাচলের জন্য ওই দিন বিমানবন্দর থেকে কাকলী পর্যন্ত মূল সড়ক এড়িয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। চলতি বছরের গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে টানা ১৭ দিন লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসা নেন তিনি। এরপর গত ২৫ জানুয়ারি তাকে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থরাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন। অভ্যর্থনা জানানোর জন্য বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অবস্থান নিবে; মহানগর উত্তর বিএনপি, বিমানবন্দর থেকে লা মেরিডিয়ান হোটেল। ছাত্রদল, লা মেরিডিয়ান হোটেল থেকে খিলক্ষেত। যুবদল, খিলক্ষেত থেকে হোটেল রেডিসন। মহানগর দক্ষিণ বিএনপি, হোটেল রেডিসন থেকে আর্মি স্টেডিয়াম। স্বেচ্ছাসেবক দল, আর্মি স্টেডিয়াম থেকে বনানী কবরস্থান। কৃষক দল, বনানী কবরস্থান থেকে কাকলী মোড়। শ্রমিক দল, কাকলী মোড় থেকে বনানী শেরাটন হোটেল। ওলামা দল, তাঁতী দল, জাসাস, মৎস্যজীবী দল, বনানী শেরাটন হোটেল থেকে বনানী কাঁচাবাজার। মুক্তিযোদ্ধা দল ও সব পেশাজীবী সংগঠন, বনানী কাঁচাবাজার থেকে গুলশান-২। মহিলা দল, গুলশান-২ গোলচত্বর থেকে গুলশান এভিনিউ রোড। বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা, গুলশান-২ গোলচত্বর থেকে গুলশান এভিনিউ রোড। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাকর্মী, যার যার সুবিধামতো স্থানে অবস্থান করবেন। বিমানবন্দর ও চেয়ারপারসনের বাসভবনে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। সব নেতাকর্মী দলীয় পতাকা এবং জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তার একপাশে দাঁড়াবে। চেয়ারপারসনের গাড়ির সঙ্গে মোটরসাইকেল এবং হাঁটা সম্পূর্ণরূপে নিষেধ।