
কক্সবাজার প্রতিনিধি
আবহমান বাংলার সমৃদ্ধ গৃহস্থ পরিবার বলতে বুঝানো হতো গোলাভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ ও গোয়াল ভরা গরু। এই প্রবাদটি এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। একটা সময় প্রতিটি কৃষকের বাড়িতে ধান রাখার জন্য থাকতো ধানের গোলা। ধানের মৌসুমে কৃষকরা জমি থেকে ধান কেটে শুকিয়ে গোলাজাত করতো। প্রয়োজনের সময় গোলা থেকে ধান বের করে আবার রোদে শুঁকিয়ে ধান ভাঙিয়েছে। কালের বিবর্তনে আর ইট, বালু ও সিমেন্ট দিয়ে পাকা ইমারত গুদাম ঘরের যুগে হারিয়ে যেতে বসেছে ধানের সেই গোলাঘর। মাঠের পর মাঠ ধানক্ষেত থাকলেও কৃষকের বাড়িতে নেই বাঁশ-বেত ও কাদা দিয়ে তৈরি গোলাঘর। দেশের গ্রামাঞ্চলে এখন আর আগের মতো চোখে পড়ে না গোলাঘর। দু’চারজন বড় গৃহস্থ ছাড়া এখন ছোট-খাটো কৃষকরা কেউ আর সেভাবে ধান মজুদ করে রাখছে না। আধুনিকতার এই যুগে পাল্টেছে সারা বছরের জন্য ধান সংরক্ষণের ধরণ। কারণ শ্রমিক সংকটে তারা ধান শুঁকিয়ে গোলায় রাখতে চায় না।
বাড়িতে ধান ওঠার সঙ্গে সঙ্গে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দিচ্ছেন। বিপরীতে নগদ টাকায় চাল কিনে খাচ্ছেন। এক সময় কন্যা পাত্রস্থ করতেও বর পক্ষের বাড়ি থেকে ধানের গোলার খবর নিতো কনে পক্ষের লোকজন। এখন যেন স্মৃতি হয়ে রয়েছে ধানের গোলা। তবে বর্তমান সময়ে গোলাঘর বিলুপ্ত হতে চললেও গোলাঘরের দেখা মিলেছে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বটতলী এলাকার মরহুম অধ্যাপক ফরিদুল ইসলামের বাড়িতে। এসব গোলাঘর ঘরগুলোতে ধান সংরক্ষণ করা না হলেও যত্ন করে রেখে দিয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, মরহুম অধ্যাপক ফরিদুল ইসলামের পূর্ব পুরুষরা জমিদার ছিলেন। পৌরশহর ছাড়াও চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধানি জমি ছিলো। কৃষকদের দিয়ে এসব ধানি জমিতে ধান চাষ করানো হতো। পরে এসব ধান গোলাঘরে সংরক্ষণ করে রাখতো। তবে, পূর্ব পুরুষদের রেখে যাওয়া এই স্মৃতি এখনও ধরে রেখেছেন বর্তমান প্রজন্ম। বাড়ির সামনের উঠানে টিনের তৈরী বড় বড় দুটি গোলাঘর রয়েছে। বাড়িটাও অনেকটা তখনকার দিনের। গোলাঘরগুলোতে সবুজ রং লাগানো হয়েছে। একাধিক কৃষক জানান, এক সময় গৃহস্থ পরিবারের বাড়িতে শ্রমিকদের মাধ্যমে বাঁশ দিয়ে গোল আকৃতির ধানের গোলা তৈরি করা হতো। এরপর তার গায়ের ভেতরে-বাইরে মাটির আস্তরণ লাগানো হতো। গোলার মাথায় থাকত টিনের বা খরের তৈরি পিরামিড আকৃতির টাওয়ারের মতো, যা দেখা যেতো অনেক দূর থেকে। ধান বের করার জন্য গোলাঘরের নিচে বিশেষ দরজা রাখা হতো। ধানের গোলা বসানো হতো উঁচুতে। গোলার মাথায় থাকত বাঁশ ও খড়ের তৈরি বা টিনের তৈরি ছাউনি। গোলায় শুকানো ধানের চাল হতো শক্ত। এখন যেন স্মৃতি হয়ে রয়েছে ধানের গোলা।
চকরিয়া পৌরশহরের ২নং ওয়ার্ডে কৃষক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, আমন-ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষকরা জমি আবাদ করতাম। প্রতি মৌসুমে ১ থেকে ২শ মনের মতো ধান পেতাম। ধান রোদে শুকিয়ে গোলায় ভরা হতো। কিন্তু এখন আর আগের মতো গোলায় ধান রাখা হয় না।
প্লাস্টিকের বস্তায় করে বা ঘরের মধ্যে একটি রুমে ধানগুলো রেখে দেয়। তারপর স্বল্প সময়ের মধ্যে এক সাথে সব ধান বিক্রি করা হয়। তাই এখন আর গোলার প্রয়োজন পড়ে না। তবে বাড়িতে একটি গোলা ছিল। বাড়ি নির্মাণ করায় সেই গোলা আর এখন নেই। কৃষক মো.আলী হোসেন বলেন, এক সময় গৃহস্থের পরিচয় ছিলো মাঠ ভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু, আর গোলা ভরা ধান। সত্তর-আশির দশকের দিকে এই সব ধানের গোলা ঘর কৃষকের কাছে জনপ্রিয় ছিলো। আধুনিকতার ছোঁয়ায় নতুন প্রজন্মরা ধানের গোলার সঙ্গে তেমন পরিচিত নয়। চকরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিদর্শক সুমি দাশ বলেন, আসলে ধানের গোলা হলো আমাদের একটি প্রচীন ঐতিহ্য।
প্রত্যেক গৃহস্থের বাড়িতে ধান রাখার জন্য গোলাঘর ছিল। কালের বিবর্তনে আর ইট, বালু ও সিমেন্ট দিয়ে পাকা ইমারত গুদাম ঘরের যুগে অনেকটাই যেন হারিয়ে যেতে বসেছে ধানের গোলাঘর। তিনি আরো বলেন, তবে গোলা তৈরিতে জায়গা বেশি লাগা, সংরক্ষণ খরচ বেশি হওয়া ও পোকা রোগের আক্রমণের সম্ভাবনা থাকায় ধানের গোলাঘর এখন কেউ করতে চাই না। সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহের জন্য গুদাম তৈরি করা হয়েছে। যার কারণে ওইসব গুদামে কৃষকের উৎপাদিত শত শত মণ ফসল সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে।
আবহমান বাংলার সমৃদ্ধ গৃহস্থ পরিবার বলতে বুঝানো হতো গোলাভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ ও গোয়াল ভরা গরু। এই প্রবাদটি এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। একটা সময় প্রতিটি কৃষকের বাড়িতে ধান রাখার জন্য থাকতো ধানের গোলা। ধানের মৌসুমে কৃষকরা জমি থেকে ধান কেটে শুকিয়ে গোলাজাত করতো। প্রয়োজনের সময় গোলা থেকে ধান বের করে আবার রোদে শুঁকিয়ে ধান ভাঙিয়েছে। কালের বিবর্তনে আর ইট, বালু ও সিমেন্ট দিয়ে পাকা ইমারত গুদাম ঘরের যুগে হারিয়ে যেতে বসেছে ধানের সেই গোলাঘর। মাঠের পর মাঠ ধানক্ষেত থাকলেও কৃষকের বাড়িতে নেই বাঁশ-বেত ও কাদা দিয়ে তৈরি গোলাঘর। দেশের গ্রামাঞ্চলে এখন আর আগের মতো চোখে পড়ে না গোলাঘর। দু’চারজন বড় গৃহস্থ ছাড়া এখন ছোট-খাটো কৃষকরা কেউ আর সেভাবে ধান মজুদ করে রাখছে না। আধুনিকতার এই যুগে পাল্টেছে সারা বছরের জন্য ধান সংরক্ষণের ধরণ। কারণ শ্রমিক সংকটে তারা ধান শুঁকিয়ে গোলায় রাখতে চায় না।
বাড়িতে ধান ওঠার সঙ্গে সঙ্গে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দিচ্ছেন। বিপরীতে নগদ টাকায় চাল কিনে খাচ্ছেন। এক সময় কন্যা পাত্রস্থ করতেও বর পক্ষের বাড়ি থেকে ধানের গোলার খবর নিতো কনে পক্ষের লোকজন। এখন যেন স্মৃতি হয়ে রয়েছে ধানের গোলা। তবে বর্তমান সময়ে গোলাঘর বিলুপ্ত হতে চললেও গোলাঘরের দেখা মিলেছে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বটতলী এলাকার মরহুম অধ্যাপক ফরিদুল ইসলামের বাড়িতে। এসব গোলাঘর ঘরগুলোতে ধান সংরক্ষণ করা না হলেও যত্ন করে রেখে দিয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, মরহুম অধ্যাপক ফরিদুল ইসলামের পূর্ব পুরুষরা জমিদার ছিলেন। পৌরশহর ছাড়াও চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধানি জমি ছিলো। কৃষকদের দিয়ে এসব ধানি জমিতে ধান চাষ করানো হতো। পরে এসব ধান গোলাঘরে সংরক্ষণ করে রাখতো। তবে, পূর্ব পুরুষদের রেখে যাওয়া এই স্মৃতি এখনও ধরে রেখেছেন বর্তমান প্রজন্ম। বাড়ির সামনের উঠানে টিনের তৈরী বড় বড় দুটি গোলাঘর রয়েছে। বাড়িটাও অনেকটা তখনকার দিনের। গোলাঘরগুলোতে সবুজ রং লাগানো হয়েছে। একাধিক কৃষক জানান, এক সময় গৃহস্থ পরিবারের বাড়িতে শ্রমিকদের মাধ্যমে বাঁশ দিয়ে গোল আকৃতির ধানের গোলা তৈরি করা হতো। এরপর তার গায়ের ভেতরে-বাইরে মাটির আস্তরণ লাগানো হতো। গোলার মাথায় থাকত টিনের বা খরের তৈরি পিরামিড আকৃতির টাওয়ারের মতো, যা দেখা যেতো অনেক দূর থেকে। ধান বের করার জন্য গোলাঘরের নিচে বিশেষ দরজা রাখা হতো। ধানের গোলা বসানো হতো উঁচুতে। গোলার মাথায় থাকত বাঁশ ও খড়ের তৈরি বা টিনের তৈরি ছাউনি। গোলায় শুকানো ধানের চাল হতো শক্ত। এখন যেন স্মৃতি হয়ে রয়েছে ধানের গোলা।
চকরিয়া পৌরশহরের ২নং ওয়ার্ডে কৃষক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, আমন-ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষকরা জমি আবাদ করতাম। প্রতি মৌসুমে ১ থেকে ২শ মনের মতো ধান পেতাম। ধান রোদে শুকিয়ে গোলায় ভরা হতো। কিন্তু এখন আর আগের মতো গোলায় ধান রাখা হয় না।
প্লাস্টিকের বস্তায় করে বা ঘরের মধ্যে একটি রুমে ধানগুলো রেখে দেয়। তারপর স্বল্প সময়ের মধ্যে এক সাথে সব ধান বিক্রি করা হয়। তাই এখন আর গোলার প্রয়োজন পড়ে না। তবে বাড়িতে একটি গোলা ছিল। বাড়ি নির্মাণ করায় সেই গোলা আর এখন নেই। কৃষক মো.আলী হোসেন বলেন, এক সময় গৃহস্থের পরিচয় ছিলো মাঠ ভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু, আর গোলা ভরা ধান। সত্তর-আশির দশকের দিকে এই সব ধানের গোলা ঘর কৃষকের কাছে জনপ্রিয় ছিলো। আধুনিকতার ছোঁয়ায় নতুন প্রজন্মরা ধানের গোলার সঙ্গে তেমন পরিচিত নয়। চকরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিদর্শক সুমি দাশ বলেন, আসলে ধানের গোলা হলো আমাদের একটি প্রচীন ঐতিহ্য।
প্রত্যেক গৃহস্থের বাড়িতে ধান রাখার জন্য গোলাঘর ছিল। কালের বিবর্তনে আর ইট, বালু ও সিমেন্ট দিয়ে পাকা ইমারত গুদাম ঘরের যুগে অনেকটাই যেন হারিয়ে যেতে বসেছে ধানের গোলাঘর। তিনি আরো বলেন, তবে গোলা তৈরিতে জায়গা বেশি লাগা, সংরক্ষণ খরচ বেশি হওয়া ও পোকা রোগের আক্রমণের সম্ভাবনা থাকায় ধানের গোলাঘর এখন কেউ করতে চাই না। সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহের জন্য গুদাম তৈরি করা হয়েছে। যার কারণে ওইসব গুদামে কৃষকের উৎপাদিত শত শত মণ ফসল সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে।