সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে ফুটপাতে বছরের পর বছর দিন কাটে যাদের

আপলোড সময় : ০২-০৫-২০২৫ ০৭:৪০:৫৪ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০২-০৫-২০২৫ ০৭:৪০:৫৪ অপরাহ্ন
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
কাকডাকা ভোরে ঘুম ভাঙে তাদের। কখনও একবেলা কখনও বা না খেয়ে দিন কাটায় এরা। কনকনে ঠান্ডা, ঘন কুয়াশা আর ঝড়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে এরা প্রতিনিয়ত। নরম বিছানা আর লেপ তোষক মুড়ি দিয়ে ঘুমানো এদের কাছে আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতোই। যা বাস্তবে ওদের কাছে কল্পনা মাত্র। সৈয়দপুর শহরের রেলওয়ে স্টেশনের প্লাট ফরমের পরিত্যক্ত ভাঙ্গা ঘরের খোলা আকাশের নীচে কিছু ভাসমান পরিবারের অবস্থা।
রেললাইন ফুটপাত, স্টেশনের ভাঙা পরিত্যক্ত ঘর এবং লাইনে পড়ে থাকা রেলের বগিতে দেখা মেলে এদের। এরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চলে এসেছে সৈয়দপুর শহরে। এরা সবাই নিঃস্ব ভুমিহীন। কারো কারো ঘরবাড়ী এবং বংশ পরিচয়ও নেই। গত মঙ্গলবার সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্লাট ফরমের ভাঙ্গা চূড়া ঘরে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে দেখা যায় জামাল শাহের পরিবার। বাড়ী কুড়িগ্রাম জেলার নদীর চর এলাকায়। বন্যায় ভেসে গেছে তার জীবন চিত্র। বয়স ৫৪ বছর। স্ত্রী অনেক আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। সন্তান থেকেও নেই তার। বছরের পর বছর এভাবে বসবাস করছে খোলা আকাশে। সারা দিন ভিক্ষে করে শহরে। রাতে থাকে স্টেশনের ফুটপাতে। কখনও খায় কখনও বা না খেয়ে দিন কাটে তার।
বর্তমানে রেলওয়ে ষ্টেশনেই তার স্থায়ী ঠিকানা। জামাল শাহের মত ফুটপাতে দেখা মেলে জরিনা বেগম, কাল্টি বেগম, নছিমন বিবি, সাবানাসহ অনেকের। এদের বয়স ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে গড়াবে। এদের বাড়ি, ডিমলা, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম চর এলাকায়। যশোর থেকে এসেছেন আকলিমা বেগম। বয়স প্রায় ৬০ বছর হবে জানালেন। বাড়ীতে তার সবেই আছে। তবে কেউ তাকে দেখতে পারে না। ৪ বছর থেকে আছেন সৈয়দপুর রেল স্টেশনের প্লাট ফরমে। বাড়ীর কেউ তার খবর নেয় না। তিনি বলেন, আমি এখানে খুব ভাল আছি। নিঃস্ব হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে আজ এরা ভাসমান মানুষ। এদের নির্দিষ্ট কোন কাজকর্ম নেই। যখন যে কাজ পায় তখন তাই করে। তবে চুরি, ছিনতাইয়ের মত জঘন্য কাজের সাথে তারা জড়িত নয় বলে জানায়। স্টেশনের সাথে এদের বসবাস। রান্না, গোসল সবই সারতে হয় খোলা আকাশে।
কিন্তু তার পরেও এরা হাসিখুশী, এদের জীবনে হাজার দুঃখ কষ্ট লুকিয়ে থাকলেও এরা যেন দুঃখহীন। এদের একেক জনের জীবন এক একটি ইতিহাস। শীত নিবারণে এরা কাগজের টুকরা জ্বালিয়ে আগুনের তাপ নেয়। এদের পাশে যেন দাঁড়াবার কেউ নেই। সরকারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে এরা বঞ্চিত। অথচ সরকারী সুযোগ সুবিধা এদেরই পাওয়ার কথা। তাই এদের দিকে নজর দেয়া প্রয়োজন আমাদের সকলের।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net