ইউনিয়নে ইউনিয়নে পাঠাগার

বইপ্রেমী এক ডিসির গল্প

আপলোড সময় : ৩০-০৪-২০২৫ ০২:২৫:২৩ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ৩০-০৪-২০২৫ ০২:২৫:৪৮ অপরাহ্ন
লক্ষ্মীপুর থেকে গাজী গিয়াস উদ্দিন ছাত্রজীবন শেষ করেও সারাজীবন যিনি পড়ার টেবিলে আছেন। বিশ্ববিদ্যালয় সতীর্থদের মুখে মুখে বইপ্রেমী হিসেবে যার নাম, তিনি হচ্ছেন জাতীয় বিতার্কিক, প্রাবন্ধিক ও গবেষক রাজীব সরকার। লক্ষ্মীপুরের বর্তমান জেলা প্রশাসক (ডিসি) রাজীব কুমার সরকার। বই যেন তার শখ,বইয়ের নেশায় পাঠক, বইয়ের সৌরভে মাতোয়ারা। সর্ব শ্রেণির মানুষ হোক পাঠক- এটাও তার লক্ষ্য। এ জেলায় এসেই মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই জেলাব্যাপী পাঠাগার প্রতিষ্ঠায় মন দিলেন তিনি। লক্ষ্মীপুর জেলার ৩৬টি ইউনিয়নে পূর্ণাঙ্গ পাঠাগার চালু করলেন। জেলার বাকি ২২ টি ইউনিয়ন কার্যালয়েও পাঠাগার প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে তার উদ্যোগে। গত ২০ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি সপ্তাহব্যাপী একটি সফল সার্থক বইমেলা অনুষ্ঠানের কৃতিত্বে জেলাবাসী হতবাক। একটি জেলার বইমেলায় এতো বইক্রেতা, এতো বই বিক্রয় ইতোপূর্বে শোনা যায়নি। প্রতিদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতা, কবিতা পাঠ ও আবৃত্তিতে মুখরিত ছিল বইমেলা অঙ্গণ। রাজীব সরকার ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র। তখন জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক হবার গৌরব ছিল তার কৃতিত্বের ঝুলিতে। বিতর্কের নেশাও ছাড়তে পারেননি আজো। তার অনুপ্রেরণায় সম্প্রতি জেলাব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। যা শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল। ব্যক্তি জীবনে তিনি একজন প্রাবন্ধিক ও গবেষক। শীর্ষস্থানীয় জাতীয় পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তার নানা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ সমূহ। বিতর্ক সহ সাহিত্য সাংস্কৃতিক বিষয়ে তার প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ১৮। ডিসি রাজীব সরকার প্রতিষ্ঠিত লক্ষ্মীপুরের ইউনিয়ন অফিস ভিত্তিক পাঠাগার সমূহ একজন লাইব্রেরিয়ানের তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন পছন্দ মতো বই পাঠের সুযোগ পাচ্ছেন ছাত্র শিক্ষকসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষ। বই মাধ্যমে জ্ঞানের আলো বিতরণের এমন উদ্যোগে সবাই বিস্মিত ও উজ্জীবিত। সাহিত্য ধর্ম দর্শন ইতিহাস বিজ্ঞান সবরকমের নতুন বই সাজানো রয়েছে এসব পাঠাগারে। সম্প্রতি দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয় ডিসি রাজীব সরকার এর পাঠাগার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে প্রতিবেদন। প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি এবিএম রিপন পরিবেশিত রিপোর্টের শিরোনাম ছিল ‘বইয়ের আলোয় বদলে যাচ্ছে ৩৬ ইউপি কার্যালয়।’ পরে পত্রিকা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সম্পাদকীয়ও প্রকাশ করেন। সম্পাদকীয় এর হেডলাইন হচ্ছে ‘বইয়ের আলোয় বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা।’ উক্ত সম্পাদকীয়তে মন্তব্য করা হয় -‘প্রশাসনের এই প্রচেষ্টা কেবল বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলবে না, বরং এটি একটি সামাজিক সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ভিত্তি গড়ে তুলতে পারে।’ তরুণদের মোবাইল আসক্তি কমিয়ে বইয়ে মনোযোগী করবে এসব লাইব্রেরি। -এমন আশা প্রকাশ করা হয়। দেশের অন্যান্য জেলার স্থানীয় প্রশাসনও ডিসি রাজীব সরকারের এ মডেল অনুসরণ করবে বলে সম্পাদকীয়তে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। জাতিকে বইমূখী করার এমন প্রচেষ্টা, এমন উদাহরণ সব জেলার জন্যে অনুকরণীয়। ৩০০ বই নিয়ে গত ২১ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করা হয় লাইব্রেরি। সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকে। পাঠাগারে মাসিক সাহিত্য সভা ও পুঁথি পাঠের আসরের আয়োজনও করা হবে। মানবিক ডিসি রাজীব কুমার সরকার নিজ কার্যালয়ে প্রতি বুধবার সাপ্তাহিক গণশুনানির আয়োজন করেন। নানা সমস্যাগ্রস্ত ভুক্তভোগী মানুষ আসেন তাদের অভিযোগ বা সমস্যা নিয়ে। এসব নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তিনি। তাছাড়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এবং অবৈধ কারবারিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকেন। তাই জেলাবাসীর মুখে মুখে তার প্রশংসার গুঞ্জন।

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net