
* প্রতিমাসে সড়কে নামছে অন্তত ১৫-২০ হাজার রিকশা
রাজধানী ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা প্রায় চার লাখ। যার ৯০ ভাগই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বলে এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এই সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এতে রাজধানীতে দিনকে দিন মানুষের চলাচলের জন্য অকার্যকর হয়ে উঠছে।
এর আগে গতবছর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ দেন। ওই সময় ঢাকার সব সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে মালিক-শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করে। তখন গোয়েন্দা সংস্থা ঢাকার ৫৩টি জোনের মাধ্যমে অনুসন্ধান চালায়। ওই সময় তারা রিকশার মালিকদের তথ্য সংগ্রহ করে। এর পর তারা একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে প্রায় ৯০ ভাগ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ব্যাটারিচালিত চায়না অটোরিকশার মালিকদের তালিকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নাম উঠে আসে।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিমাসে অন্তত ১৫-২০ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা নামছে ঢাকার সড়কে। এছাড়াও, অন্তত দেড় থেকে দুই হাজার ব্যাটারিচালিত চায়না অটোরিকশা রাজধানীতে নামছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, বিপুল সংখ্যক ব্যাটারিচালিত রিকশার ব্যাটারি চার্জ দিতে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পাড়া-মহল্লায় ফাঁকা জায়গা ভাড়া নিয়ে টিনশেড বানিয়ে সেখানে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন টেনে সংযোগ দেয়া হয়। রাতের বেলায় এসব গ্যারেজেই রিকশার ব্যাটারি চার্জ দেয়া হয়ে থাকে। এতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ অবৈধভাবে ব্যবহার হচ্ছে। এই বিদ্যুৎ দিয়ে ঢাকা শহরে একদিন সাপোর্ট দেয়া সম্ভব। গতবছর ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিক-শ্রমিকরা অরাজকতা শুরু করলে সরকার তড়িঘড়ি করে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। আপিলের রায়ে আপাতত ব্যাটারিচালিত রিকশা ঢাকায় চলবে বলে আদেশ আসে। ফলে আন্দোলন বন্ধ করেন ব্যাটারিচালিত রিকশা মালিক-শ্রমিকরা। এর পর প্রায় পাঁচ মাস ধরে অবাধে চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। আগের চেয়ে প্রতিদিন সড়কে রিকশা নামার সংখ্যাও বেড়েছে। একইসঙ্গে দিন দিন বেপরোয়াও হয়ে উঠেছে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা।
রাজধানীর এমন কোনো সড়ক নেই যে সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছে না। এমনকি বাস, ট্রাক ও প্রাইভেটকারের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে এসব অটোরিকশা চালানো হচ্ছে। পুলিশ বলছে, অটোরিকশার কারণে দুর্ঘটনার সংখ্যা আগের চেয়ে ১০ গুণ বেড়ে গেছে। অলিগলি, প্রধান সড়ক, ভিআইপি সড়কসহ যেকোনো সড়কই হোক না কেন ব্যাটারিচালিত রিকশা যেন থামানোই যাচ্ছে না। রিকশাগুলোকে আটকালে তারা একত্র হয়ে পুলিশের ওপর চড়াও হচ্ছে। মব সৃষ্টির মতো অবস্থাও তৈরি করছে। ফলে ট্রাফিক পুলিশ সড়ক সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, পুলিশ, আনসার ও নাম সর্বস্ব কিছু সাংবাদিক টিনশেড গ্যারেজ ভাড়া নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা নামিয়েছে। তবে বেশিরভাগ রিকশার মালিক আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। রিকশাগুলোর বেশিরভাগই লোন নিয়ে কেনা এবং কিছু রিকশা রয়েছে যেগুলো আওয়ামী লীগের কর্মীরা নিজেরাই মালিক, আবার নিজেরাই চালায়।
প্রতিবেদনে যা সুপারিশ করা হয়েছে: রাজধানী থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করতে হলে সবার আগে গ্যারেজগুলো থেকে বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। গ্যারেজ ও কারখানাগুলোতে অভিযান চালাতে হবে। বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগে গ্যারেজ ও ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিকদের নামে মামলা নিতে হবে। রিকশা হারিয়ে গেলে থানাগুলো যেন জিডি না নেয় তার নির্দেশনা দিতে হবে। সেইসঙ্গে সড়কগুলোতে অভিযান চালাতে হবে। পর্যায়ক্রমে প্রধান সড়ক এবং অপেক্ষাকৃত বড় সড়ক থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করতে হবে। এছাড়া, জড়িত পুলিশ সদস্যসহ অন্যদেরও আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে। আর আন্দোলন করার পরিকল্পনার আগেই পালটা ব্যবস্থা নিতে হবে। গত বছরের ১৯ নভেম্বর ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল তিনদিনের মধ্যে বন্ধ করতে হাইকোর্ট আদেশে দেয়। এর পর তুমুল আন্দোলন শুরু হলে ২৬ নভেম্বর এক মাসের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন উচ্চ আদালত। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে সরকারপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক এ আদেশ দেন। গত ২৩ জানুয়ারি ব্যাটারিচালিত রিকশা পরিচালনায় নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাত আলী ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে ব্যাটারিচালিত রিকশা মালিক ও শ্রমিক সমিতির সঙ্গে এক সভায় বলেন, প্রস্তাবিত নির্দেশনায় কোনো ব্যক্তি একটির বেশি ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিক হতে পারবেন না। এই নীতিমালার মূল কথাই হলো চালকদের রিকশার মালিক হতে হবে। এসব যানবাহনের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে কমিশনার বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করলেও নানা সমস্যার সৃষ্টি করেছে। আমাদের সম্মিলিতভাবে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে। প্রধান সড়ক ও বাস রুট পরিহার করে এসব রিকশা যাতে চালানো যায়, মালিক ও চালকদের প্রতি সেই আহ্বানও জানান তিনি। মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে থেকে ঢাকায় প্রবেশকারী ব্যাটারিচালিত রিকশা ঠেকাতে আইনি ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি। গত ২০ এপ্রিল বনানীতে গুলশান সোসাইটি নামে একটি সংগঠন গুলশান এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করলে রিকশা মালিক শ্রমিকরা মিলে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে। এ সময় মোটরসাইকেল চালক, প্রাইভেটকারচালক, সিএনজিচালক ও পায়ে ঠেলা রিকশাচালকদের বেধড়ক মারপিট করে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে সোচ্চার হয় সাধারণ মানুষ। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব রিকশা বন্ধে পোস্ট দেয়া শুরু করেন। বাইকাররা বাইক সারি করে রেখে মানববন্ধনও করেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এরই মধ্যে চট্টগ্রামের গ্যারেজগুলোতে অভিযান চালিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। ঢাকাতেও সিটি করপোরেশন অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বৃহত্তর ঢাকা সিটি করপোরেশন ব্যাটারিচালিত রিকশা মালিক জোটের সভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, নীতিমালা করার কথা ছিল। কিন্তু এখনো করা হয়নি। কমিশনারের সঙ্গে বসে অনেকগুলো প্রস্তাবনা পাস হয়েছিল। সেগুলো এখনো পড়ে রয়েছে। নীতিমালা না হওয়ায় যে যেমন পারছে রিকশা নামাচ্ছে। এসব নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এজন্য নীতিমালাটা জরুরি। এখন নীতিমালা না করে ফের যদি হঠাৎ করেই ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করা হয়, তাহলে আবার সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। একইসুরে কথা বলেছেন ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপকমিশনার তালেবুর রহমান। তিনি বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে এখন সবাই সোচ্ছার হয়েছেন। কিছু দিন আগে রিকশা মালিক-শ্রমিকরা আন্দোলন করলেন। কে কখন আন্দোলনে নামছে তা বোঝা মুশকিল। তবে যাই ঘটুক ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা কোনো আইনই মানছেন না। তারা সব সড়কে ঢুকে পড়ছে। দুর্ঘটনার সংখ্যাও বেড়ে গেছে। রিকশা বন্ধে অনেকগুলো স্টেকহোল্ডার রয়েছে, তারা সিদ্ধান্ত নিক। পুলিশ তো কেবলমাত্র আইন প্রয়োগে সহায়তা করবে। অভিযান হলে সেখানে সহযোগী হিসেবে থাকবে। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের আদেশ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।
রাজধানী ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা প্রায় চার লাখ। যার ৯০ ভাগই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বলে এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এই সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এতে রাজধানীতে দিনকে দিন মানুষের চলাচলের জন্য অকার্যকর হয়ে উঠছে।
এর আগে গতবছর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ দেন। ওই সময় ঢাকার সব সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে মালিক-শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করে। তখন গোয়েন্দা সংস্থা ঢাকার ৫৩টি জোনের মাধ্যমে অনুসন্ধান চালায়। ওই সময় তারা রিকশার মালিকদের তথ্য সংগ্রহ করে। এর পর তারা একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে প্রায় ৯০ ভাগ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ব্যাটারিচালিত চায়না অটোরিকশার মালিকদের তালিকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নাম উঠে আসে।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিমাসে অন্তত ১৫-২০ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা নামছে ঢাকার সড়কে। এছাড়াও, অন্তত দেড় থেকে দুই হাজার ব্যাটারিচালিত চায়না অটোরিকশা রাজধানীতে নামছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, বিপুল সংখ্যক ব্যাটারিচালিত রিকশার ব্যাটারি চার্জ দিতে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পাড়া-মহল্লায় ফাঁকা জায়গা ভাড়া নিয়ে টিনশেড বানিয়ে সেখানে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন টেনে সংযোগ দেয়া হয়। রাতের বেলায় এসব গ্যারেজেই রিকশার ব্যাটারি চার্জ দেয়া হয়ে থাকে। এতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ অবৈধভাবে ব্যবহার হচ্ছে। এই বিদ্যুৎ দিয়ে ঢাকা শহরে একদিন সাপোর্ট দেয়া সম্ভব। গতবছর ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিক-শ্রমিকরা অরাজকতা শুরু করলে সরকার তড়িঘড়ি করে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। আপিলের রায়ে আপাতত ব্যাটারিচালিত রিকশা ঢাকায় চলবে বলে আদেশ আসে। ফলে আন্দোলন বন্ধ করেন ব্যাটারিচালিত রিকশা মালিক-শ্রমিকরা। এর পর প্রায় পাঁচ মাস ধরে অবাধে চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। আগের চেয়ে প্রতিদিন সড়কে রিকশা নামার সংখ্যাও বেড়েছে। একইসঙ্গে দিন দিন বেপরোয়াও হয়ে উঠেছে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা।
রাজধানীর এমন কোনো সড়ক নেই যে সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছে না। এমনকি বাস, ট্রাক ও প্রাইভেটকারের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে এসব অটোরিকশা চালানো হচ্ছে। পুলিশ বলছে, অটোরিকশার কারণে দুর্ঘটনার সংখ্যা আগের চেয়ে ১০ গুণ বেড়ে গেছে। অলিগলি, প্রধান সড়ক, ভিআইপি সড়কসহ যেকোনো সড়কই হোক না কেন ব্যাটারিচালিত রিকশা যেন থামানোই যাচ্ছে না। রিকশাগুলোকে আটকালে তারা একত্র হয়ে পুলিশের ওপর চড়াও হচ্ছে। মব সৃষ্টির মতো অবস্থাও তৈরি করছে। ফলে ট্রাফিক পুলিশ সড়ক সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, পুলিশ, আনসার ও নাম সর্বস্ব কিছু সাংবাদিক টিনশেড গ্যারেজ ভাড়া নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা নামিয়েছে। তবে বেশিরভাগ রিকশার মালিক আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। রিকশাগুলোর বেশিরভাগই লোন নিয়ে কেনা এবং কিছু রিকশা রয়েছে যেগুলো আওয়ামী লীগের কর্মীরা নিজেরাই মালিক, আবার নিজেরাই চালায়।
প্রতিবেদনে যা সুপারিশ করা হয়েছে: রাজধানী থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করতে হলে সবার আগে গ্যারেজগুলো থেকে বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। গ্যারেজ ও কারখানাগুলোতে অভিযান চালাতে হবে। বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগে গ্যারেজ ও ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিকদের নামে মামলা নিতে হবে। রিকশা হারিয়ে গেলে থানাগুলো যেন জিডি না নেয় তার নির্দেশনা দিতে হবে। সেইসঙ্গে সড়কগুলোতে অভিযান চালাতে হবে। পর্যায়ক্রমে প্রধান সড়ক এবং অপেক্ষাকৃত বড় সড়ক থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করতে হবে। এছাড়া, জড়িত পুলিশ সদস্যসহ অন্যদেরও আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে। আর আন্দোলন করার পরিকল্পনার আগেই পালটা ব্যবস্থা নিতে হবে। গত বছরের ১৯ নভেম্বর ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল তিনদিনের মধ্যে বন্ধ করতে হাইকোর্ট আদেশে দেয়। এর পর তুমুল আন্দোলন শুরু হলে ২৬ নভেম্বর এক মাসের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন উচ্চ আদালত। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে সরকারপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক এ আদেশ দেন। গত ২৩ জানুয়ারি ব্যাটারিচালিত রিকশা পরিচালনায় নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাত আলী ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে ব্যাটারিচালিত রিকশা মালিক ও শ্রমিক সমিতির সঙ্গে এক সভায় বলেন, প্রস্তাবিত নির্দেশনায় কোনো ব্যক্তি একটির বেশি ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিক হতে পারবেন না। এই নীতিমালার মূল কথাই হলো চালকদের রিকশার মালিক হতে হবে। এসব যানবাহনের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে কমিশনার বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করলেও নানা সমস্যার সৃষ্টি করেছে। আমাদের সম্মিলিতভাবে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে। প্রধান সড়ক ও বাস রুট পরিহার করে এসব রিকশা যাতে চালানো যায়, মালিক ও চালকদের প্রতি সেই আহ্বানও জানান তিনি। মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে থেকে ঢাকায় প্রবেশকারী ব্যাটারিচালিত রিকশা ঠেকাতে আইনি ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি। গত ২০ এপ্রিল বনানীতে গুলশান সোসাইটি নামে একটি সংগঠন গুলশান এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করলে রিকশা মালিক শ্রমিকরা মিলে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে। এ সময় মোটরসাইকেল চালক, প্রাইভেটকারচালক, সিএনজিচালক ও পায়ে ঠেলা রিকশাচালকদের বেধড়ক মারপিট করে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে সোচ্চার হয় সাধারণ মানুষ। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব রিকশা বন্ধে পোস্ট দেয়া শুরু করেন। বাইকাররা বাইক সারি করে রেখে মানববন্ধনও করেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এরই মধ্যে চট্টগ্রামের গ্যারেজগুলোতে অভিযান চালিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। ঢাকাতেও সিটি করপোরেশন অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বৃহত্তর ঢাকা সিটি করপোরেশন ব্যাটারিচালিত রিকশা মালিক জোটের সভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, নীতিমালা করার কথা ছিল। কিন্তু এখনো করা হয়নি। কমিশনারের সঙ্গে বসে অনেকগুলো প্রস্তাবনা পাস হয়েছিল। সেগুলো এখনো পড়ে রয়েছে। নীতিমালা না হওয়ায় যে যেমন পারছে রিকশা নামাচ্ছে। এসব নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এজন্য নীতিমালাটা জরুরি। এখন নীতিমালা না করে ফের যদি হঠাৎ করেই ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করা হয়, তাহলে আবার সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। একইসুরে কথা বলেছেন ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপকমিশনার তালেবুর রহমান। তিনি বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে এখন সবাই সোচ্ছার হয়েছেন। কিছু দিন আগে রিকশা মালিক-শ্রমিকরা আন্দোলন করলেন। কে কখন আন্দোলনে নামছে তা বোঝা মুশকিল। তবে যাই ঘটুক ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা কোনো আইনই মানছেন না। তারা সব সড়কে ঢুকে পড়ছে। দুর্ঘটনার সংখ্যাও বেড়ে গেছে। রিকশা বন্ধে অনেকগুলো স্টেকহোল্ডার রয়েছে, তারা সিদ্ধান্ত নিক। পুলিশ তো কেবলমাত্র আইন প্রয়োগে সহায়তা করবে। অভিযান হলে সেখানে সহযোগী হিসেবে থাকবে। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের আদেশ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।