
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমদানি পণ্যে পাল্টা শুল্ক ঘোষণা দেয়ায় দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ব্যবধান কমিয়ে আনতে বাংলাদেশ শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রকে কিছু প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরিকল্পনা করেছে। এর মধ্যে আছে আরও বেশি সংখ্যক মার্কিন পণ্যকে শুল্কমুক্ত করার অনুমতি দেয়া। মার্কিন তুলার জন্য গুদাম সুবিধা দেয়া ও অশুল্ক বাধা দূর করা।
আগামী ২৩ এপ্রিল ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের (ইউএসটিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতিনিধিদল এসব প্রতিশ্রুতি দেবেন। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে বোয়িং উড়োজাহাজ, এলএনজি, গ্যাস টারবাইন ও তুলা কেনার পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও পণ্য কিনতে বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। ওয়াশিংটন ডিসিতে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী ইউএসটিআর ব্রেন্ডন লিঞ্চের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার কথা আছে তার। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।
বাণিজ্য সচিব জানান, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে আরও বেশি পরিমাণে সয়াবিন তেল, সয়াবিন বীজ, ভোগ্যপণ্য ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানির জন্য বাংলাদেশের ইচ্ছার কথা তুলে ধরা হবে। এ ছাড়াও, বাংলাদেশে শিশুশ্রম ও শ্রম অধিকারের উন্নয়ন নিয়েও ইউএসটিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে। তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে বৈঠকের জন্য বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রতিনিধিরা ইউএসটিআরের আলোচনায় থাকবেন।
আইএমএফের বৈঠকে অংশ নিতে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও অর্থ সচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার ইতোমধ্যে ওয়াশিংটনে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হবে। বাণিজ্য সচিব বলেন, মার্কিন তুলা নিয়ে দীর্ঘদিনের সংকট বাংলাদেশ ইতোমধ্যে দূর করেছে। মার্কিন তুলার জন্য বাংলাদেশ গুদামের ব্যবস্থা করাসহ বেসরকারি খাতে সয়াবিন পণ্য আমদানি সহজ করবে। ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর বাণিজ্য উপদেষ্টা এস কে বশির উদ্দিন গত ৭ এপ্রিল ইউএসটিআর জেমিসন লি গ্রিয়ারকে চিঠি দেন। এতে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ১৯০ পণ্যের পাশাপাশি আরও ১০০ পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক তুলে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ শুল্কহার কমানো ও সব ধরনের অশুল্ক বাধা দূর করার উপায় খুঁজে দেখছে।