ফিলিস্তিনের ওপর দখলদার ইসরায়েলের নির্মম হামলার প্রতিবাদ ও গাজাবাসীর ডাকা হরতালের সমর্থনে গতকাল সোমবার রাজধানীসহ সারা বাংলাদেশে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেয়। বিক্ষোভ-সমাবেশে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশ।
অবিলম্বে গাজায় নারী-শিশু হত্যাসহ ন্যাক্কারজনক হামলা বন্ধ করতে হবে। যদি না করা হয়, তাহলে বিশ্ব মুসলিম গাজার দিকে মার্চ করতে বাধ্য হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুসলিম উম্মাহ ইসরায়েলকে বিশ্ব মানচিত্র থেকে গুঁড়িয়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ড. রেজাউল করিম। তবে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পুনরায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং অবিলম্বে সেখানে খাদ্য সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর অব্যাহত গণহত্যা এবং চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
জানা গেছে, ফিলিস্তিনে গণহত্যা-জবরদখল বন্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা। গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজার সমর্থন জানিয়েছে তারা। বিক্ষোভ মিছিলে ঢাকা কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ, ঢাকা রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজ, নটর ডেম কলেজসহ একাধিক কলেজের শিক্ষার্থীরা যোগদান করে। বিক্ষোভে ধ্বনিত হয়, ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’। বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। বিক্ষোভ থেকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও ইসরায়েলের ধ্বংস কামনা করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের অনেকেই ফিলিস্তিনের পতাকা গায়ে জড়িয়ে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। অনেকেই এনেছেন প্ল্যাকার্ড। প্ল্যাকার্ডে ‘গাজা মুক্ত করো’, ‘ফিলিস্তিন স্বাধীন করো’সহ একাধিক লেখা দেখা যায়। এ সময় তারা ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’, ‘ইসরায়েলের বন্ধুরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘বয়কট বয়কট, ইসরায়েল বয়কট’, ‘ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ ইত্যাদি সেøাগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা জানান, ফিলিস্তিনের প্রতি বৈশ্বিক ধর্মঘটে সংহতি জানিয়ে তারা সোমবার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন। ফিলিস্তিনের প্রতি মুসলিম বিশ্বের নেতাদের উদাসীনতার প্রতি প্রশ্নও তোলেন তারা। ইসরায়েলি পণ্য বয়কট ও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে সবাইকে এক হয়ে লড়াই করার আহ্বান জানান তারা।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ফিলিস্তিনের নারী-শিশুসহ মুসলিমদের ওপর এমন বর্বরতার পরও যারা নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে, তারা ইসরাইলের এই হত্যাযজ্ঞকে সমর্থন করছে বলে আমরা মনে করি। গতকাল সোমবার বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় গেটের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিছিল শুরু করেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, প্যালেস্টাইন প্যালেস্টাইন’, ‘ইসরায়েলের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন ইত্যাদি সেøাগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ ও ইউনিসেফ বারবার শুধু বিবৃতি দিচ্ছে। বাস্তবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না, যা প্রকারান্তরে হত্যাযজ্ঞকে সমর্থনের শামিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আদনান হাসান বলেন, গাজায় প্রতিদিন শিশুরা মরছে, অথচ ইউনিসেফ শুধু সংখ্যা গুনছে। জাতিসংঘও মুখে উদ্বেগ জানিয়ে চুপ করে বসে আছে। এ নীরবতা আসলে হত্যার পক্ষে অবস্থান নেয়ার মতোই। আরব দেশগুলোর ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থী ফারজানা রুমি বলেন, আরব রাষ্ট্রগুলো মুখে ফিলিস্তিনের পক্ষে থাকলেও কাজে নেই। কেউ এগিয়ে আসছে না। তাদের এই নীরবতাই ইসরায়েলের উৎসাহ বাড়িয়ে দিচ্ছে। শিক্ষার্থী হাসিব মাহমুদ বলেন, তারা শুধু তেল বেচে বিলাসিতা করছে। মুসলিম উম্মাহর ঐক্য এখন শুধু কাগজে-কলমে। বাস্তবে কেউ ফিলিস্তিনের পাশে নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়হান কবির বলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর এমন বর্বরতার পরও আমরা আর নীরব থাকতে পারি না। এই হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিটি বিবেকবান মানুষের উচিত প্রতিবাদে শামিল হওয়া। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই।
ফিলিস্তিন দখলকারী ও গণহত্যাকারী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের গণহত্যা থামাতে বৈশ্বিক জিহাদ অনিবার্য হয়ে উঠেছে এমন মন্তব্য করেন উত্তরা এলাকার বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষ ও আলেম ওলামাগণ। তারা বলেন, গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা পৃথিবীর সমস্ত নৃশংসতার সীমা ছাড়িয়েছে। এছাড়াও কথিত মানবাধিকারের ধ্বজাধারী আমেরিকার বিবেক গণহত্যাকারী জায়োনিস্ট ইসরাইলের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। আমেরিকার প্রত্যক্ষ সমর্থন ও সহযোগিতায় অব্যাহতভাবে ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণের ওপর বছরের পর বছর দখলবাজি ও বর্বর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের ক্যান্সারখ্যাত দেশটি। এ সময় বিক্ষোভকারীরা বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নির্বিকারচিত্তে শুধু দেখেই যাচ্ছে, কারণ ফিলিস্তিনিরা মুসলমান। মুসলমানের মানবাধিকার ‘নাই’ করে দিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব ইতিহাসের ভুল পথে হাঁটছে, যা তাদের জন্য আত্মঘাতী। তারা আরো বলেন, আমেরিকার জনগণকে ও এ হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান করছি। এতে তাদের ও দায় রয়েছে। কারণ তাদের ভ্যাট ও ট্যাক্সের টাকায় ইসরাইলকে অবিরত সামরিক ও রাজনৈতিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলের দাসত্ব গ্রহণ করা আমেরিকার ক্ষমতালোভী শাসকগোষ্ঠী। মার্কিন শাসকগোষ্ঠীকে এই রাষ্ট্রীয় দাসত্বনীতি থেকে বের করে আনার রাজনৈতিক উদ্যোগ আমেরিকার জনগণকেই নিতে হবে। তারা বলেন, আমেরিকার জনগণ তাদের শাসকগোষ্ঠীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে না পারলে পৃথিবীতে মানবতার কোনো মূল্যই আর থাকবে না। বিক্ষোভকারীরা আরো বলেন, পৃথিবীর পরিশুদ্ধতা ও মানবতার অগ্রগতির জন্য অবৈধ জালিম রাষ্ট্র ইসরাইলের পতন অনিবার্য হয়ে পড়েছে। এ সময় তারা আমেরিকার ও ইসরায়েল বিরুদ্ধে সেøাগান দিতে দিতে উত্তরা বিমানবন্দর মহাসড়ক আব্দুল্লাহপুর, হাউজ বিল্ডিং, বিএনএস সেন্টার, জসিমউদদীন, বিমানবন্দর গোলচক্কর, রাজলক্ষি, উত্তরা পূর্ব থানা, আজমপুর এলাকায় গতকাল সোমবার সকাল ১১টা থেকে বিভিন্ন বেনার ফেস্টুন নিয়ে দুপুর পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন।
এদিকে ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের নির্মম হামলার প্রতিবাদ ও গাজাবাসীর ডাকা হরতালের সমর্থনে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সমবেত হয় মুসল্লিরা। এসময় তারা ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’, ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’, ‘ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন’ প্রভৃতি সেøাগানে মুখর করে তোলেন মসজিদের উত্তর পাদদেশ। গতকাল সোমবার বাদ জোহর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ ‘মজলুম গাজাবাসীর ডাকা বিশ্বব্যাপী হরতালে‘র সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। প্রথমে মসজিদ প্রাঙ্গণে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল-পূর্ব সমাবেশে শীর্ষ ওলামা মাশায়েখ এবং জাতীয় নেতারা বক্তব্য দেন। এর আগে গতকাল সোমবার দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে বায়তুল মোকাররমে শুরু হয় জোহরের নামাজ। দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে শেষ হয় নামাজের কার্যক্রম। এরপরই মুসল্লিরা সেøাগান দিয়ে ওঠেন ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার’। পরে মসজিদ থেকে বেরিয়ে সবাই সমবেত হন মসজিদের উত্তর পাদদেশে। এখানে সবাই একসঙ্গে ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়াতে শুরু করেন। আর সেøাগানে সেøাগানে উত্তাল করে তোলেন মসজিদ প্রাঙ্গণ। এ সময় তারা সেøাগান দেন ‘ইসরায়েলের কালো হাত, ভেঙে দাও ভেঙে দাও’, ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ, ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’। নামাজে অংশ নিতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি মুসল্লি বায়তুল মোকাররমে আসেন। আগত মুসল্লিদের অনেকের হাতেই ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা।
অপরদিকে অবিলম্বে গাজায় নারী-শিশু হত্যাসহ ন্যাক্কারজনক হামলা বন্ধ করতে হবে। যদি না করা হয়, তাহলে বিশ্ব মুসলিম গাজার দিকে মার্চ করতে বাধ্য হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুসলিম উম্মাহ ইসরায়েলকে বিশ্ব মানচিত্র থেকে গুঁড়িয়ে দেবে। গতকাল সোমবার বিকেল ৪টায় রাজধানীতে এক বিক্ষোভ মিছিল শেষে এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ড. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, সারা পৃথিবীর কাছে কুখ্যাত সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে খ্যাত ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজাবাসী নারী ও শিশুকে হত্যা করে আইয়ামে জাহেলিয়াতের বর্বর যুগের ইতিহাসকে হার মানিয়েছে। ইসরায়েল গণহত্যা পরিচালনার মাধ্যমে পৃথিবীর মানচিত্রে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। এই সন্ত্রাসী রাষ্ট্রকে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে মুসলমানদের গুঁড়িয়ে দিতে হবে। তিনি বিশ্ববাসীকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা শুধু ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করতে চাই না। পৃথিবীর বুকে যেখানেই ইহুদি থাকবে সেখানেই তাদের বয়কট করা হবে। তরুণ যুবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ছাত্রশিবিরের সাবেক এই কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, জ্ঞানবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ হয়ে তৈরি হওয়ার মাধ্যমে ইসরায়েলকে বয়কট করে গাজাবাসীর পাশে দাঁড়াতে হবে। সন্ত্রাসী ইসরায়েলের কালো থাবা থেকে তাদের মুক্ত করতে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও দক্ষতার মাধ্যমে চূড়ান্ত লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। তিনি জাতিসংঘ ও ওআইসিকে বিশ্বব্যাপী ইসরায়েলকে বয়কট এবং জেনোসাইডের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। ইন্ধনদাতা-সমর্থন দেয়া রাষ্ট্রগুলোকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এ জামায়াত নেতা বলেন, অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, হামলা বন্ধ করুন। যদি তা করা না হয়, তাহলে গোটা মুসলিম উম্মাহ দুর্বার বৈশ্বিক আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে। বিক্ষোভ মিছিলে জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মুসল্লিরা অংশ নেন।
মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেন, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পুনরায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং অবিলম্বে সেখানে খাদ্য সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। গত রোববার রাজধানী কায়রোতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে গাজায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিও জানিয়েছেন তিনি। আল-সিসি বলেছেন, আমরা এই বিষয়েও ঐকমত্য হয়েছি যে, ফিলিস্তিনিদের নিজ জন্মভূমি থেকে জোর করে স্থানান্তরিত করার জন্য যে কোনও আহ্বান অগ্রহণযোগ্য। মিসরে গাজা পুনর্নিমাণবিষয়ক একটি সম্মেলন আয়োজন করা নিয়েও উভয় নেতা আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন সিসি। মিসরের এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে জোর দিয়ে বলেছি, যতক্ষণ পর্যন্ত ফিলিস্তিনি অমীমাংসিত স্বার্থের সমাধান হবে না এবং ফিলিস্তিনি জনগণ হিংস্র যুদ্ধের পরিণতির মুখোমুখি হতে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা সুদূরপ্রসারী থাকবে, যা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্থিতিশীল এবং সুরক্ষিত ভবিষ্যতের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা হামাস অথবা ইসরায়েল কেউই শাসন করবে না বলে মন্তব্য করেছেন এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি হামলা ও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের নিন্দা জানায় ফ্রান্স। ইসরায়েলি বন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি ও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন। ফরাসি এই প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা গাজা-সহ নিজ জমি থেকে যে কোনও মানুষের জোরপূর্বক স্থানান্তরের পাশাপাশি গাজা উপত্যকা কিংবা পশ্চিম তীরে দখলের বিরুদ্ধে দাঁড়াই। তিনি বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন এবং ইসরায়েল-সহ ওই অঞ্চলের পুরো নিরাপত্তার জন্য প্রত্যক্ষ হুমকি তৈরি করে। ম্যাক্রোঁ বলেন, গাজা পুনরায় গড়ে তোলার জন্য গত ৪ মার্চ আরব দেশগুলোর প্রস্তাবিত পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানায় ফ্রান্স। তিনি বলেন, এটি গাজার প্রতি বাস্তবসম্মত সমর্থন এবং গাজা উপত্যকায় নতুন প্রশাসনের পথ সুগম করবে। গাজার যে কোনও ধরনের শাসন কাঠামোর অংশ হবে না হামাস। এমনকি ইসরায়েলও হতে পারবে না।
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম জানায়, ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ময়মনসিংহ। এ সময় ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ, ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’ সেøাগানে মুখরিত হয়ে উঠে নগরীর সবকটি রাজপথ। গতকাল সোমবার দুপুরে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির অংশ হিসাবে এ বিক্ষোভ পালন করেন নগরীর বিভিন্ন স্কুল, কলেজসহ ধর্মপ্রাণ তৌহিদি জনতা ও বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন। এর আগে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ও স্কুল, কলেজ থেকে খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে টাউন হল মোড়ে এসে জমায়েত হয়। এরপর সেখানে সমাবেশ করে তৌহিদি জনতা। এতে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ নারী, পুরুষ ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানায়, দখলদার ইসরাইল কর্তৃক নিরীহ ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে শরীয়তপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে শহরের উত্তর বাজার থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইদ্রিস আলী কাশেমীর সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন সভাপতি মাওলানা সাব্বির আহমেদ।
নড়াইল প্রতিনিধি জানায়, গাজায় নির্বিচারে মুসলমানদেরকে গণহত্যার প্রতিবাদে নড়াইলে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিলটি নড়াইল পুরাতন বাস টার্মিনাল মুক্ত মঞ্চ এলাকা থেকে শুরু করে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেস ক্লাব চত্বরে শেষ হয়। এ সময় সড়কের দুই পাশে যানজট সৃষ্টি হয়।
বাগেরহাট প্রতিনিধি জানায়, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাগেরহাট। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় বাগেরহাট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘জিহাদ জিহাদ জিহাদ চাই, জিহাদ করে বাঁচতে চাই, ফিলিস্তিনে হামলা কেন? জাতিসংঘ জবাব চাই, বিশ্ব মুসলিম ঐক্য গড়, ফিলিস্তিন স্বাধীন করো, নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর, ইসরাইলের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন চাই, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন চাই’ ইত্যাদি সেøাগান দেন।
জয়পুরহাট প্রতিনিধি জানায়, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে জয়পুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা শহরের শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। জয়পুরহাট জেলাবাসী ও ছাত্র- জনতার ব্যানারে মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জিরো পয়েন্টে এসে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানায়, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলা ও গণহত্যার বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ায় বিক্ষোভ হয়েছে। গতকাল সোমবার হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলটি এনএস রোডের কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজে সামনে থেকে শুরু হয়ে চৌড়হাস মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এরপর তারা সেখানে অবস্থান করেন এবং বক্তব্য দেন। সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়। বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার হাজার হাজার মানুষ এ বিক্ষোভে অংশ নেয়। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে ফিলিস্তিনের ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর নৃশংস হামলা ও গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বিক্ষোভকারীরা। একইসঙ্গে ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করার আহ্বানও জানিয়েছেন তারা।
নওগাঁ প্রতিনিধি জানায়, ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইজরায়েল কর্তৃক গণহত্যা এবং বিশ্বব্যাপী ডাকা হরতালের সমর্থনে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল ও সংহতি সমাবেশ করেছেন নওগাঁ সরকারি কলেজ এবং নওগাঁ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নওগাঁ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা শহিদ ফাহমিন চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি কলেজ চত্ত্বর প্রদক্ষিণ করে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে শিক্ষার্থীরা সেখানে ঘন্টাব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানায়, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বরতার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সমাবেশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এতে সংহতি জানিয়ে অনেক বিভাগের শিক্ষার্থী ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছেন। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজনে সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে দুই হাজারের বেশি লোক অংশ নেয়।
গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানায়, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বর্বরতা, গণহত্যা ও আগ্রাসনের প্রতিবাদ এবং বিশ্বব্যাপী মজলুম গাজাবাসীদের আহুত হরতালের প্রতি সমর্থন জানিয়ে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে গাইবান্ধা শহরের পৌর শহীদ মিনার চত্বর থেকে সর্বস্তরের মুসলিম উম্মাহর ব্যানারে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও আলাদা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সেখানে যোগ দেন এবং গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানায়, ফিলিস্তিনিদের মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে সংহতি জানিয়ে ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শেখপাড়া বাজারের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রধান ফটকের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানায়, গাজা ও রাফায় ইসরায়েলি নৃশংস গণহত্যাসহ বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে লক্ষ্মীপুরে নেতানিয়াহুর কুশপুতুল দাহ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর ২টার দিকে শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরা কুশপুতুল বানিয়ে আগুন দেয়। এর আগে চকবাজার জামে মসজিদে জোহরের নামাজ শেষে জামায়াতে ইসলামী লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি উত্তর তেমুহনী এলাকায় এসে সমাবেশে মিলিত হয়। সকালে একই দাবিতে উত্তর তেমুহনীতে সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে ও দক্ষিণ তেমুহনী এলাকায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ব্যানারে হরতাল-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর অব্যাহত গণহত্যা এবং চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। গতকাল সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকে ইসরায়েলি সামরিক হামলায় বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এর ফলে গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছানো বন্ধ হয়ে গেছে, যা বাসিন্দাদের মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। স্পষ্টত ইসরায়েল বারবার আন্তর্জাতিক আবেদনের তোয়াক্কা করেনি বরং ক্রমবর্ধমান হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূল অভিযান চালানোর উদ্দেশ্যে গাজার ঘনবসতিপূর্ণ বেসামরিক এলাকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর নির্বিচার বিমান হামলা ও বোমাবর্ষণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েলকে অবিলম্বে সমস্ত সামরিক অভিযান বন্ধ, সর্বাধিক সংযম প্রদর্শন এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে তার দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানাচ্ছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে জাতিসংঘের কাছে আবেদন করছে যে তারা নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন এবং বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষা ও অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক ত্রাণ পৌঁছানোর জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে তার নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব পালন করুক। ফিলিস্তিনি জনগণের সব ন্যায্য অধিকার, আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমানা অনুসারে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি বাংলাদেশ সরকার দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছে, যার রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সরকার মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির জন্য আলোচনার প্ল্যাটফর্মে ফিরে আসার প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করছে, যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর সহিংসতা ও দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে কূটনীতি এবং সংলাপের পথে নিজেদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের প্রস্তাব এবং শান্তি, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের জন্য ফিলিস্তিনিদের আকাক্সক্ষার ভিত্তিতে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানে পৌঁছাতে কাজ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ।
অবিলম্বে গাজায় নারী-শিশু হত্যাসহ ন্যাক্কারজনক হামলা বন্ধ করতে হবে। যদি না করা হয়, তাহলে বিশ্ব মুসলিম গাজার দিকে মার্চ করতে বাধ্য হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুসলিম উম্মাহ ইসরায়েলকে বিশ্ব মানচিত্র থেকে গুঁড়িয়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ড. রেজাউল করিম। তবে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পুনরায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং অবিলম্বে সেখানে খাদ্য সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর অব্যাহত গণহত্যা এবং চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
জানা গেছে, ফিলিস্তিনে গণহত্যা-জবরদখল বন্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা। গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজার সমর্থন জানিয়েছে তারা। বিক্ষোভ মিছিলে ঢাকা কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ, ঢাকা রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজ, নটর ডেম কলেজসহ একাধিক কলেজের শিক্ষার্থীরা যোগদান করে। বিক্ষোভে ধ্বনিত হয়, ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’। বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। বিক্ষোভ থেকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও ইসরায়েলের ধ্বংস কামনা করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের অনেকেই ফিলিস্তিনের পতাকা গায়ে জড়িয়ে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। অনেকেই এনেছেন প্ল্যাকার্ড। প্ল্যাকার্ডে ‘গাজা মুক্ত করো’, ‘ফিলিস্তিন স্বাধীন করো’সহ একাধিক লেখা দেখা যায়। এ সময় তারা ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’, ‘ইসরায়েলের বন্ধুরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘বয়কট বয়কট, ইসরায়েল বয়কট’, ‘ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ ইত্যাদি সেøাগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা জানান, ফিলিস্তিনের প্রতি বৈশ্বিক ধর্মঘটে সংহতি জানিয়ে তারা সোমবার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন। ফিলিস্তিনের প্রতি মুসলিম বিশ্বের নেতাদের উদাসীনতার প্রতি প্রশ্নও তোলেন তারা। ইসরায়েলি পণ্য বয়কট ও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে সবাইকে এক হয়ে লড়াই করার আহ্বান জানান তারা।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ফিলিস্তিনের নারী-শিশুসহ মুসলিমদের ওপর এমন বর্বরতার পরও যারা নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে, তারা ইসরাইলের এই হত্যাযজ্ঞকে সমর্থন করছে বলে আমরা মনে করি। গতকাল সোমবার বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় গেটের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিছিল শুরু করেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, প্যালেস্টাইন প্যালেস্টাইন’, ‘ইসরায়েলের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন ইত্যাদি সেøাগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ ও ইউনিসেফ বারবার শুধু বিবৃতি দিচ্ছে। বাস্তবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না, যা প্রকারান্তরে হত্যাযজ্ঞকে সমর্থনের শামিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আদনান হাসান বলেন, গাজায় প্রতিদিন শিশুরা মরছে, অথচ ইউনিসেফ শুধু সংখ্যা গুনছে। জাতিসংঘও মুখে উদ্বেগ জানিয়ে চুপ করে বসে আছে। এ নীরবতা আসলে হত্যার পক্ষে অবস্থান নেয়ার মতোই। আরব দেশগুলোর ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থী ফারজানা রুমি বলেন, আরব রাষ্ট্রগুলো মুখে ফিলিস্তিনের পক্ষে থাকলেও কাজে নেই। কেউ এগিয়ে আসছে না। তাদের এই নীরবতাই ইসরায়েলের উৎসাহ বাড়িয়ে দিচ্ছে। শিক্ষার্থী হাসিব মাহমুদ বলেন, তারা শুধু তেল বেচে বিলাসিতা করছে। মুসলিম উম্মাহর ঐক্য এখন শুধু কাগজে-কলমে। বাস্তবে কেউ ফিলিস্তিনের পাশে নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়হান কবির বলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর এমন বর্বরতার পরও আমরা আর নীরব থাকতে পারি না। এই হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিটি বিবেকবান মানুষের উচিত প্রতিবাদে শামিল হওয়া। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই।
ফিলিস্তিন দখলকারী ও গণহত্যাকারী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের গণহত্যা থামাতে বৈশ্বিক জিহাদ অনিবার্য হয়ে উঠেছে এমন মন্তব্য করেন উত্তরা এলাকার বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষ ও আলেম ওলামাগণ। তারা বলেন, গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা পৃথিবীর সমস্ত নৃশংসতার সীমা ছাড়িয়েছে। এছাড়াও কথিত মানবাধিকারের ধ্বজাধারী আমেরিকার বিবেক গণহত্যাকারী জায়োনিস্ট ইসরাইলের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। আমেরিকার প্রত্যক্ষ সমর্থন ও সহযোগিতায় অব্যাহতভাবে ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণের ওপর বছরের পর বছর দখলবাজি ও বর্বর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের ক্যান্সারখ্যাত দেশটি। এ সময় বিক্ষোভকারীরা বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নির্বিকারচিত্তে শুধু দেখেই যাচ্ছে, কারণ ফিলিস্তিনিরা মুসলমান। মুসলমানের মানবাধিকার ‘নাই’ করে দিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব ইতিহাসের ভুল পথে হাঁটছে, যা তাদের জন্য আত্মঘাতী। তারা আরো বলেন, আমেরিকার জনগণকে ও এ হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান করছি। এতে তাদের ও দায় রয়েছে। কারণ তাদের ভ্যাট ও ট্যাক্সের টাকায় ইসরাইলকে অবিরত সামরিক ও রাজনৈতিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলের দাসত্ব গ্রহণ করা আমেরিকার ক্ষমতালোভী শাসকগোষ্ঠী। মার্কিন শাসকগোষ্ঠীকে এই রাষ্ট্রীয় দাসত্বনীতি থেকে বের করে আনার রাজনৈতিক উদ্যোগ আমেরিকার জনগণকেই নিতে হবে। তারা বলেন, আমেরিকার জনগণ তাদের শাসকগোষ্ঠীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে না পারলে পৃথিবীতে মানবতার কোনো মূল্যই আর থাকবে না। বিক্ষোভকারীরা আরো বলেন, পৃথিবীর পরিশুদ্ধতা ও মানবতার অগ্রগতির জন্য অবৈধ জালিম রাষ্ট্র ইসরাইলের পতন অনিবার্য হয়ে পড়েছে। এ সময় তারা আমেরিকার ও ইসরায়েল বিরুদ্ধে সেøাগান দিতে দিতে উত্তরা বিমানবন্দর মহাসড়ক আব্দুল্লাহপুর, হাউজ বিল্ডিং, বিএনএস সেন্টার, জসিমউদদীন, বিমানবন্দর গোলচক্কর, রাজলক্ষি, উত্তরা পূর্ব থানা, আজমপুর এলাকায় গতকাল সোমবার সকাল ১১টা থেকে বিভিন্ন বেনার ফেস্টুন নিয়ে দুপুর পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন।
এদিকে ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের নির্মম হামলার প্রতিবাদ ও গাজাবাসীর ডাকা হরতালের সমর্থনে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সমবেত হয় মুসল্লিরা। এসময় তারা ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’, ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’, ‘ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন’ প্রভৃতি সেøাগানে মুখর করে তোলেন মসজিদের উত্তর পাদদেশ। গতকাল সোমবার বাদ জোহর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ ‘মজলুম গাজাবাসীর ডাকা বিশ্বব্যাপী হরতালে‘র সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। প্রথমে মসজিদ প্রাঙ্গণে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল-পূর্ব সমাবেশে শীর্ষ ওলামা মাশায়েখ এবং জাতীয় নেতারা বক্তব্য দেন। এর আগে গতকাল সোমবার দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে বায়তুল মোকাররমে শুরু হয় জোহরের নামাজ। দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে শেষ হয় নামাজের কার্যক্রম। এরপরই মুসল্লিরা সেøাগান দিয়ে ওঠেন ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার’। পরে মসজিদ থেকে বেরিয়ে সবাই সমবেত হন মসজিদের উত্তর পাদদেশে। এখানে সবাই একসঙ্গে ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়াতে শুরু করেন। আর সেøাগানে সেøাগানে উত্তাল করে তোলেন মসজিদ প্রাঙ্গণ। এ সময় তারা সেøাগান দেন ‘ইসরায়েলের কালো হাত, ভেঙে দাও ভেঙে দাও’, ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ, ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’। নামাজে অংশ নিতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি মুসল্লি বায়তুল মোকাররমে আসেন। আগত মুসল্লিদের অনেকের হাতেই ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা।
অপরদিকে অবিলম্বে গাজায় নারী-শিশু হত্যাসহ ন্যাক্কারজনক হামলা বন্ধ করতে হবে। যদি না করা হয়, তাহলে বিশ্ব মুসলিম গাজার দিকে মার্চ করতে বাধ্য হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুসলিম উম্মাহ ইসরায়েলকে বিশ্ব মানচিত্র থেকে গুঁড়িয়ে দেবে। গতকাল সোমবার বিকেল ৪টায় রাজধানীতে এক বিক্ষোভ মিছিল শেষে এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ড. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, সারা পৃথিবীর কাছে কুখ্যাত সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে খ্যাত ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজাবাসী নারী ও শিশুকে হত্যা করে আইয়ামে জাহেলিয়াতের বর্বর যুগের ইতিহাসকে হার মানিয়েছে। ইসরায়েল গণহত্যা পরিচালনার মাধ্যমে পৃথিবীর মানচিত্রে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। এই সন্ত্রাসী রাষ্ট্রকে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে মুসলমানদের গুঁড়িয়ে দিতে হবে। তিনি বিশ্ববাসীকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা শুধু ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করতে চাই না। পৃথিবীর বুকে যেখানেই ইহুদি থাকবে সেখানেই তাদের বয়কট করা হবে। তরুণ যুবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ছাত্রশিবিরের সাবেক এই কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, জ্ঞানবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ হয়ে তৈরি হওয়ার মাধ্যমে ইসরায়েলকে বয়কট করে গাজাবাসীর পাশে দাঁড়াতে হবে। সন্ত্রাসী ইসরায়েলের কালো থাবা থেকে তাদের মুক্ত করতে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও দক্ষতার মাধ্যমে চূড়ান্ত লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। তিনি জাতিসংঘ ও ওআইসিকে বিশ্বব্যাপী ইসরায়েলকে বয়কট এবং জেনোসাইডের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। ইন্ধনদাতা-সমর্থন দেয়া রাষ্ট্রগুলোকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এ জামায়াত নেতা বলেন, অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, হামলা বন্ধ করুন। যদি তা করা না হয়, তাহলে গোটা মুসলিম উম্মাহ দুর্বার বৈশ্বিক আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে। বিক্ষোভ মিছিলে জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মুসল্লিরা অংশ নেন।
মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেন, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পুনরায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং অবিলম্বে সেখানে খাদ্য সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। গত রোববার রাজধানী কায়রোতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে গাজায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিও জানিয়েছেন তিনি। আল-সিসি বলেছেন, আমরা এই বিষয়েও ঐকমত্য হয়েছি যে, ফিলিস্তিনিদের নিজ জন্মভূমি থেকে জোর করে স্থানান্তরিত করার জন্য যে কোনও আহ্বান অগ্রহণযোগ্য। মিসরে গাজা পুনর্নিমাণবিষয়ক একটি সম্মেলন আয়োজন করা নিয়েও উভয় নেতা আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন সিসি। মিসরের এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে জোর দিয়ে বলেছি, যতক্ষণ পর্যন্ত ফিলিস্তিনি অমীমাংসিত স্বার্থের সমাধান হবে না এবং ফিলিস্তিনি জনগণ হিংস্র যুদ্ধের পরিণতির মুখোমুখি হতে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা সুদূরপ্রসারী থাকবে, যা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্থিতিশীল এবং সুরক্ষিত ভবিষ্যতের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা হামাস অথবা ইসরায়েল কেউই শাসন করবে না বলে মন্তব্য করেছেন এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি হামলা ও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের নিন্দা জানায় ফ্রান্স। ইসরায়েলি বন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি ও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন। ফরাসি এই প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা গাজা-সহ নিজ জমি থেকে যে কোনও মানুষের জোরপূর্বক স্থানান্তরের পাশাপাশি গাজা উপত্যকা কিংবা পশ্চিম তীরে দখলের বিরুদ্ধে দাঁড়াই। তিনি বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন এবং ইসরায়েল-সহ ওই অঞ্চলের পুরো নিরাপত্তার জন্য প্রত্যক্ষ হুমকি তৈরি করে। ম্যাক্রোঁ বলেন, গাজা পুনরায় গড়ে তোলার জন্য গত ৪ মার্চ আরব দেশগুলোর প্রস্তাবিত পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানায় ফ্রান্স। তিনি বলেন, এটি গাজার প্রতি বাস্তবসম্মত সমর্থন এবং গাজা উপত্যকায় নতুন প্রশাসনের পথ সুগম করবে। গাজার যে কোনও ধরনের শাসন কাঠামোর অংশ হবে না হামাস। এমনকি ইসরায়েলও হতে পারবে না।
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম জানায়, ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ময়মনসিংহ। এ সময় ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ, ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’ সেøাগানে মুখরিত হয়ে উঠে নগরীর সবকটি রাজপথ। গতকাল সোমবার দুপুরে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির অংশ হিসাবে এ বিক্ষোভ পালন করেন নগরীর বিভিন্ন স্কুল, কলেজসহ ধর্মপ্রাণ তৌহিদি জনতা ও বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন। এর আগে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ও স্কুল, কলেজ থেকে খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে টাউন হল মোড়ে এসে জমায়েত হয়। এরপর সেখানে সমাবেশ করে তৌহিদি জনতা। এতে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ নারী, পুরুষ ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানায়, দখলদার ইসরাইল কর্তৃক নিরীহ ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে শরীয়তপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে শহরের উত্তর বাজার থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইদ্রিস আলী কাশেমীর সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন সভাপতি মাওলানা সাব্বির আহমেদ।
নড়াইল প্রতিনিধি জানায়, গাজায় নির্বিচারে মুসলমানদেরকে গণহত্যার প্রতিবাদে নড়াইলে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিলটি নড়াইল পুরাতন বাস টার্মিনাল মুক্ত মঞ্চ এলাকা থেকে শুরু করে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেস ক্লাব চত্বরে শেষ হয়। এ সময় সড়কের দুই পাশে যানজট সৃষ্টি হয়।
বাগেরহাট প্রতিনিধি জানায়, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাগেরহাট। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় বাগেরহাট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘জিহাদ জিহাদ জিহাদ চাই, জিহাদ করে বাঁচতে চাই, ফিলিস্তিনে হামলা কেন? জাতিসংঘ জবাব চাই, বিশ্ব মুসলিম ঐক্য গড়, ফিলিস্তিন স্বাধীন করো, নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর, ইসরাইলের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন চাই, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন চাই’ ইত্যাদি সেøাগান দেন।
জয়পুরহাট প্রতিনিধি জানায়, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে জয়পুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা শহরের শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। জয়পুরহাট জেলাবাসী ও ছাত্র- জনতার ব্যানারে মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জিরো পয়েন্টে এসে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানায়, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলা ও গণহত্যার বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ায় বিক্ষোভ হয়েছে। গতকাল সোমবার হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলটি এনএস রোডের কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজে সামনে থেকে শুরু হয়ে চৌড়হাস মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এরপর তারা সেখানে অবস্থান করেন এবং বক্তব্য দেন। সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়। বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার হাজার হাজার মানুষ এ বিক্ষোভে অংশ নেয়। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে ফিলিস্তিনের ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর নৃশংস হামলা ও গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বিক্ষোভকারীরা। একইসঙ্গে ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করার আহ্বানও জানিয়েছেন তারা।
নওগাঁ প্রতিনিধি জানায়, ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইজরায়েল কর্তৃক গণহত্যা এবং বিশ্বব্যাপী ডাকা হরতালের সমর্থনে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল ও সংহতি সমাবেশ করেছেন নওগাঁ সরকারি কলেজ এবং নওগাঁ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নওগাঁ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা শহিদ ফাহমিন চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি কলেজ চত্ত্বর প্রদক্ষিণ করে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে শিক্ষার্থীরা সেখানে ঘন্টাব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানায়, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বরতার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সমাবেশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এতে সংহতি জানিয়ে অনেক বিভাগের শিক্ষার্থী ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছেন। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজনে সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে দুই হাজারের বেশি লোক অংশ নেয়।
গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানায়, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বর্বরতা, গণহত্যা ও আগ্রাসনের প্রতিবাদ এবং বিশ্বব্যাপী মজলুম গাজাবাসীদের আহুত হরতালের প্রতি সমর্থন জানিয়ে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে গাইবান্ধা শহরের পৌর শহীদ মিনার চত্বর থেকে সর্বস্তরের মুসলিম উম্মাহর ব্যানারে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও আলাদা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সেখানে যোগ দেন এবং গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানায়, ফিলিস্তিনিদের মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে সংহতি জানিয়ে ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শেখপাড়া বাজারের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রধান ফটকের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানায়, গাজা ও রাফায় ইসরায়েলি নৃশংস গণহত্যাসহ বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে লক্ষ্মীপুরে নেতানিয়াহুর কুশপুতুল দাহ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর ২টার দিকে শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরা কুশপুতুল বানিয়ে আগুন দেয়। এর আগে চকবাজার জামে মসজিদে জোহরের নামাজ শেষে জামায়াতে ইসলামী লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি উত্তর তেমুহনী এলাকায় এসে সমাবেশে মিলিত হয়। সকালে একই দাবিতে উত্তর তেমুহনীতে সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে ও দক্ষিণ তেমুহনী এলাকায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ব্যানারে হরতাল-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর অব্যাহত গণহত্যা এবং চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। গতকাল সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকে ইসরায়েলি সামরিক হামলায় বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এর ফলে গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছানো বন্ধ হয়ে গেছে, যা বাসিন্দাদের মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। স্পষ্টত ইসরায়েল বারবার আন্তর্জাতিক আবেদনের তোয়াক্কা করেনি বরং ক্রমবর্ধমান হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূল অভিযান চালানোর উদ্দেশ্যে গাজার ঘনবসতিপূর্ণ বেসামরিক এলাকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর নির্বিচার বিমান হামলা ও বোমাবর্ষণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েলকে অবিলম্বে সমস্ত সামরিক অভিযান বন্ধ, সর্বাধিক সংযম প্রদর্শন এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে তার দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানাচ্ছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে জাতিসংঘের কাছে আবেদন করছে যে তারা নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন এবং বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষা ও অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক ত্রাণ পৌঁছানোর জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে তার নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব পালন করুক। ফিলিস্তিনি জনগণের সব ন্যায্য অধিকার, আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমানা অনুসারে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি বাংলাদেশ সরকার দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছে, যার রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সরকার মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির জন্য আলোচনার প্ল্যাটফর্মে ফিরে আসার প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করছে, যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর সহিংসতা ও দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে কূটনীতি এবং সংলাপের পথে নিজেদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের প্রস্তাব এবং শান্তি, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের জন্য ফিলিস্তিনিদের আকাক্সক্ষার ভিত্তিতে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানে পৌঁছাতে কাজ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ।