
প্রতিবছরের মতো এবারও মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিয়ে মুখরিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণ। চারুকলা অনুষদের বর্তমান, সাবেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা মিলে তৈরি করছেন নানা প্রতিকৃতি, পুতুল, পালকিসহ অন্যান্য বর্ণিল জিনিসপত্র। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনকে স্মরণীয় করতে এবছর চারুকলায় অন্যান্য প্রতিকৃতির সঙ্গে বানানো হচ্ছে শেখ হাসিনার বিকৃত প্রতিকৃতি। একদিকে শোভাযাত্রার অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে, অন্যদিকে চলছে শোভাযাত্রার ব্যয় নির্বাহের জন্য জলরং, সরা চিত্র, মুখোশ, পুতুল তৈরি এবং বিক্রি। এর আয় থেকে তৈরি হয় মঙ্গল শোভাযাত্রার বড় বড় শিল্পকর্ম। এ জন্য দিন-রাত বিরামহীনভাবে চলছে প্রস্তুতি। গতকাল রোববার ঢাবির চারুকলা অনুষদে সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, পহেলা বৈশাখকে রাঙিয়ে তুলতে ছাত্র-শিক্ষকদের তুমুল ব্যস্ততা ছায়াঘেরা চারুকলায়। শিল্পী, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা মগ্ন হয়ে কাজ করছেন মঙ্গল শোভাযাত্রার বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করতে। বাঁশ, বেত, কাঠ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বাঘ, ঘোড়া, মাছসহ বাঙালি ঐতিহ্যের বিভিন্ন প্রতীক। শোভাযাত্রায় বহন করা বিভিন্ন শৈল্পিক কাঠামো নির্মাণে বাঁশ-কাঠ ব্যবহার করছেন শিল্পীরা। হাতুড়ি-পেরেকের শব্দ চারদিকে। মগ্ন হয়ে ছবি আঁকছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আঁকায় উঠে আসছে বাংলার রূপ-ঐতিহ্য। এবারও মাহবুব জামাল শামিমের নেতৃত্বে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। প্রতিদিন সকাল, বিকাল, রাতে কাজ করছেন শিল্পীরা। দুদিনব্যাপী উদযাপিত হবে এবারের পহেলা বৈশাখ। এবারের প্রতিপাদ্য রাখা হয়েছে— ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। তবে এ বছর অনুষদটির কোনও ব্যাচকে একচ্ছত্র দায়িত্ব না দেওয়ায় বর্তমান শিক্ষার্থীদের উপস্থিত সেখানে কম বলে জানিয়েছেন চারুকলার ভাস্কর্য বিভাগের ১১-১২ সেশনের একজন সাবেক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, বর্তমান শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম হলেও সবার উপস্থিতি উন্মুক্ত করা হয়েছে। কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজ পুরোদমে চলছে। বাইরে আমাদের ছোট ছোট শিল্পকর্মগুলো বিক্রি হচ্ছে। আশা করি ১২ তারিখের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ হবে। চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজাহারুল ইসলাম বলেন, প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। এবার বেশি কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আমাদের ছবিগুলো বিক্রি কম হয়েছে। আজ (গতকাল রোববার) ক্যাম্পাস খুলেছে কাল (আজ সোমবার) থেকে আশা করি জমে উঠবে প্রস্তুতি।