আহত শিশু আরাধ্যকে ঢাকায় হস্তান্তর নিহত বেড়ে ১১

আপলোড সময় : ০৪-০৪-২০২৫ ১১:৫০:১৫ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৪-০৪-২০২৫ ১১:৫০:১৫ অপরাহ্ন
চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত তিন জনের মধ্যে আরও একজন মারা গেছেন। এ নিয়ে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ জনে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টা ৫ মিনিটে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার নাম তসলিমা আক্তার প্রেমা (২০)। বর্তমানে এ ঘটনায় চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুই জনের মধ্যে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন সাত বছর বয়সী আরাধ্য বিশ্বাস ও হাসপাতালের বেডে আছেন দুর্জয় মণ্ডল (২৫)। এদিকে, আরাধ্য বিশ্বাসকে দুপুর সাড়ে ১২টায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল থেকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তার চিকিৎসার সমস্ত ভার নিয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের এমডি তপন চৌধুরী। এমনটাই জানানো হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে। বুধবার সকালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লেহাগাড়ার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ দুর্ঘটনায় মোট ১০ জন নিহত হন। আহত হন তিন জন। আহতদের মধ্যে গতকাল শুক্রবার আরও একজন মারা গেছেন। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় মারা যান শিশু আরাধ্য বিশ্বাসের বাবা দিলীপ কুমার ও মা সাধনা রানী। তারা ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। বুধবার রাতেই স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হয় লাশ। গত বৃহস্পতিবার সকালেই সম্পন্ন হয়েছে তাদের শেষকৃত্য। অথচ একমাত্র মেয়ে আরাধ্য জানে না তার সঙ্গে আর কোনোদিন দেখা হবে না বাব-মার। এমনকি মা-বাবা যে বেঁচে নেই তাও জানে না আরাধ্য। তার ভরসা এখন বৃদ্ধ দাদু দুলাল বিশ্বাস। বন্ধু ও নিকট আত্মীয়দের সঙ্গে মাইক্রোবাসে বুধবার ভোরে ঢাকা থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার পথে লোহাগাড়ার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান দিলীপ, তার স্ত্রী সাধনা রানী ও সাধনার বড় ভাইসহ ১০ জন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই নুরুল আলম আশিক জানান, লোহাগাড়ায় দুর্ঘটনায় আহত তিন জনের মধ্যে গতকাল শুক্রবার একজন মারা গেছেন। শিশু আরাধ্য বিশ্বাসের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে দুর্জয় মণ্ডল নামে আরও এক যুবক চিকিৎসাধীন আছেন।
সড়কে বসলো গতিরোধক: এদিকে চট্টগ্রাম লোহাগাড়ার চুনতি জাঙ্গালিয়ায় দুর্ঘটনাস্থলে বসানো হয়েছে ৫-৬টি গতিরোধক (স্পিড ব্রেকার)। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার নির্দেশে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এসব গতিরোধক বসিয়েছে। পাশাপাশি সড়কের পাশে বসানো খুঁটিতে উড়ছে লাল নিশানা। ঈদের ছুটিতে তিনদিনে এই এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন অনেকে। চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগ দক্ষিণ এর উপপ্রকৌশলী আবু হানিফ বলেন, দুর্ঘটনা রোধে ৭-৮ ইঞ্চি উচ্চতার এসব গতিরোধক বসানো হয়েছে। দোহাজারী থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামমুখী সড়কের জাঙ্গালিয়া তুলনামূলক ঢালু এবং ডান দিকে বাঁক আছে। ফলে এখানে দ্রুতগতির গাড়ি বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ি দেখার পর গতি কমানোর সুযোগ পায় না। এই গতিরোধকের কারণে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রিত হবে, দুর্ঘটনা কমবে। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এই এলাকার মহাসড়কের একপাশে চুনতি অভয়ারণ্য, আরেক পাশে সংরক্ষিত বনাঞ্চল। ডাকাতিপ্রবণ এলাকা জাঙ্গালিয়া। এখানে অপরিকল্পিত গতিরোধকের কারণে সমস্যা বাড়তে পারে। লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইনামুল হাছান বলেন, দোহাজারী থেকে চুনতি পর্যন্ত পুরো সড়কটি সরু। দুই লেনের মহাসড়কে মাত্র ১৬ ফুট প্রশস্ত। ঈদের আগে দোহাজারী থেকে কেরানীহাট পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়কের দুইপাশে ৫ ফুট করে মোট ১০ ফুট প্রশস্ত করা হয়। জাঙ্গালিয়ার ওই অংশে সড়ক উঁচু-নিচু ও আঁকাবাঁকা। মহাসড়কের ওই অংশে কয়েক কিলোমিটার সড়কের বাঁক অপসারণ করে সোজা করা যায় কি-না সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net