পানি সঙ্কটে উত্তরাঞ্চলের কৃষি

আপলোড সময় : ২৮-০৩-২০২৫ ১০:২৮:৩৫ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৮-০৩-২০২৫ ১০:২৮:৩৫ অপরাহ্ন
পানি সঙ্কটে হুমকির মুখে দেশের উত্তরাঞ্চলের কৃষি। তাপপ্রবাহ শুরু হওয়ার আগেই ওই এলাকার অধিকাংশ পাম্প ও নলকূপে পানি উঠছে না। এমনকি পানের ও গৃহস্থালি কাজের জন্য পানি নিয়ে মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের অধিকাংশ উপজেলায় নিচে নেমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। যা কৃষি উৎপাদনে অশনিসংকেত। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় ইরি বোরোর উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় কৃষক।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীগুলো বর্ষার পরপরই পানি থাকছে না। মূলত নিয়মিত ড্রেজিং না করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পানির সংকটে সিরাজগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা, দিনাজপুরসহ অনেক জেলায় চৌচির হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি, মাঠঘাট। দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে নদনদী, খালবিল, পুকুরের পানি। আর পদ্মার বুকজুড়ে এখন ধু-ধু বালুচর। অববাহিকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণও কমেছে। তার সাথে ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা বেড়েছে। রাজশাহী এবং পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর বরেন্দ্র এলাকায় শীত শেষ না হতেই পানিশূন্যতায় চৌচির হয়ে পড়েছে খালবিল, পুকুর। পান করার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া দেশের বৃহত্তম গঙ্গা কপোতাক্ষসহ পশ্চিমের অন্যান্য সেচ প্রকল্পও হুমকির মুখে পড়েছে।
সূত্র জানায়, পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলার নয় উপজেলা নিয়ে বিস্তৃত চলনবিল এখন বর্ষার শেষেই পানিশূন্য হয়ে পড়ে। ফলে চরম হুমকিতে পড়েছে দেশের বৃহত্তম এ বিলের জীববৈচিত্র্য। হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, মাছ, জলচর প্রাণী। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পাল্টে গেছে চলনবিলের চিত্র। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় বিশাল বিল অনেকটাই পানিশূন্য। কারো কারোর মতে, রাজশাহীর চারঘাটে বরেন্দ্র অঞ্চলে বাঁধ দেয়ার কারণে পদ্মার পানি চলনবিলে প্রবেশ করছে না। পাশাপাশি ইরি বোরো মৌসুমে ভূগর্ভস্থ পানি বেশি পরিমাণ উত্তোলন করার কারণেও পানির স্তর নেমে যাচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, পানির স্তর ক্রমেই আশঙ্কাজনক হারে নামতে শুরু করেছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। ফলে ইরি বোরো চাষের সেচ নিয়ে বিপাকে পড়েছে চাষিরা। কারণ ইরি-বোরো সেচনির্ভর ফসল। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকেই ১০ থেকে ১৫ ফুট গর্ত বা কুয়া করে তার মধ্যে সেচ মেশিন বসিয়ে কাজ চালাচ্ছে। নওগাঁ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, রংপুর, পাবনা, নাটোরে ইরি বোরো মৌসুমে ১০ থেকে ফুট ১৫ ফুট গর্ত খনন করে তার মধ্যে সেচ পাম্প বসিয়ে পানি তোলা হচ্ছে। কিন্তু সেখানেও কয়েক দিন পরপর পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পানির সন্ধানে অনেকেই আবার গভীর গর্ত খনন করা হচ্ছে। আর পানির স্তর এভাবে নামতে থাকলে আগামী বছরগুলোয় আরো প্রকট আকার ধারণ করবে সংকট।
এ প্রসঙ্গে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান জানান, ২৫-২৬ বছর ধরে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যত্রতত্র পানি তুলছে। পানির স্তর যে নেমে যাচ্ছে সেদিকে কোনো খেয়াল নেই। অন্তত ১৬০-১৮০ ফুট পানি নেমে গেছে। এখানে পানির জন্য কৃষক আত্মহত্যা করার নজির আছে।  পানি সঙ্কটে কৃষিতে যেমন প্রভাব পড়েছে। পাশাপাশি আর্সেনিক দেখা দিয়েছে। সবকিছুতেই বিরূপ প্রভাব দেখা দিয়েছে। এখনই সঠিক পদক্ষেপ না নিলে সামনে আরো কঠিন সংকট হবে।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net