
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ‘প্রক্সি ভোট’ পদ্ধতির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রবাসীদের জন্য বিদ্যমান পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থা কার্যকর নয়। কারণ এর মাধ্যমে বিদেশ থেকে একটি ভোটও কাস্ট হয়নি। প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পোস্টাল ব্যালট, অনলাইন ভোটিং এবং প্রক্সি ভোটিং নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তার মতে, প্রক্সি ভোটিং-ই একমাত্র পদ্ধতি— যা রিয়েল টাইমে ভোটগ্রহণের সুযোগ করে দিতে পারে। নির্বাচন কমিশনার জানান, প্রক্সি ভোটিং ব্যবস্থা চালু করতে ওয়ার্কশপ ও আলোচনা সভা করা হবে এবং রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের মতামত নেওয়া হবে। আগামী ১৫ এপ্রিলের মধ্যে এ ব্যবস্থাটি চালুর জন্য কতদিন লাগতে পারে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া সম্ভব হবে। তবে এটি কার্যকর করতে আইন পরিবর্তন করতে হবে। প্রক্সি ভোটের মাধ্যমে একজন প্রবাসী তার আস্থাভাজন ব্যক্তিকে ভোট দেওয়ার জন্য নির্বাচন করতে পারবেন। সানাউল্লাহ বলেন, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশে এই পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। ভারতেও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য এটি কার্যকর। তিনি আরও বলেন, চারটি দেশের ভোটব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে—যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিপাইন, এস্তোনিয়া এবং মেক্সিকো। পাশাপাশি, ভারত ও পাকিস্তানসহ কয়েকটি দেশ অনলাইন ভোটিং পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন করছে। তবে ইউএনডিপি জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি দেশ অনলাইন ভোটিংয়ে সফলতা না পেয়ে পুরনো পদ্ধতিতে ফিরে গেছে। সানাউল্লাহ বলেন, বাংলাদেশেও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অন্যজনের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে, যা প্রক্সি ভোটের সঙ্গে পুরোপুরি মিল নয়, তবে একটি সম্ভাব্য ক্ষেত্র। আগামী ৮ বা ৯ এপ্রিল একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট ও এমআইএসটি-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। বর্তমানে ৪৪টি বিদেশি মিশন থেকে পাওয়া তথ্যমতে, আনুমানিক এক কোটি ৩২ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রায় এক কোটি ভোটার হিসেবে থাকতে পারেন। কমিশন ৪০টি দেশে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। তিনি বলেন, প্রক্সি ভোটিং ব্যবস্থায় একজন ভোটার তার আস্থার ব্যক্তিকে নির্ধারণ করবেন, যিনি তার পক্ষে ভোট প্রদান করবেন। এটি চালুর জন্য প্রযুক্তিগত, আইনি ও প্রশাসনিক দিকগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ১৫ এপ্রিলের মধ্যে এর বাস্তবায়ন পরিকল্পনা ও সময়সীমা নির্ধারণ করা হবে।