
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সর্বশেষ পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা অঞ্চলের ডাবল শিফট ও একক শিফটে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি এবং ঢাকার আঞ্চলিক উপ-পরিচালককে (ডিডি) অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন সাত থেকে আট মাস ধরে বেতন না পাওয়া শিক্ষকরা। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে রাজধানীর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের সামনে তারা বিক্ষোভ করেন। দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষাকরা একই দাবি লিখিতভাবে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে। হাজারীবাগ সালেহা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, এনটিআরসিএ সুপারিশপ্রাপ্ত দেড় শতাধিক শিক্ষক সাত মাস থেকে এবং আমিসহ বেশ কয়েকজন সহকারী প্রধান শিক্ষক আট মাস থেকে বেতন পাচ্ছি না। ঢাকার আঞ্চলিক উপপরিচালক ২০২১ সালের নীতিমালার অজুহাতে এমপিওভুক্তির ফাইল অনুমোদন করছেন না। অথচ দেশের অন্য অঞ্চলের শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছেন নিয়মিত। আন্দোলনকারী শিক্ষকরা জানান, পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা অঞ্চলের ডাবল শিফট ও একক শিফটের বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে গত বছরের ২১ আগস্ট সুপারিশ পেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ২২ আগস্ট থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর নিয়োগ পান শিক্ষকরা। কিন্তু আজ অবধি এমপিওভুক্ত করছেন না উপপরিচালক। আন্দোলনকারীদের লিখিত আবেদনে জানানো হয়, আমরা ঢাকা অঞ্চলের ডাবল শিফট ও একক শিফটের বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা গত বছরের ১ থেকে ৮ অক্টোবর মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরে ইএমআইএস সেলে এমপিও’র জন্য আবেদন করি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় দীর্ঘ ৭ মাস অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত আমাদের এমপিওভুক্ত করা হয়নি। বর্তমানে আমাদের ফাইল ঢাকা আঞ্চলিক উপ-পরিচালকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। আমরা ঢাকা আঞ্চলিক উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে ফাইলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আমাদের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। ঢাকা আঞ্চলিক উপ-পরিচালকের কথার পরিপ্রেক্ষিতে মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, তিনি এই ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তিনি সদ্য যোগদান করেছেন। আমরা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক, উপপরিচালক ও পরিচালকের কার্যালয়ে যোগাযোগ করেও কোনও সুফল পাইনি। কিন্তু আমাদের সঙ্গে যোগদান করা অন্য বিভাগের ডাবল শিফট এবং একক শিফটের শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। এমনকি তাদের ইএফটিতে বেতন দেওয়া হচ্ছে। লিখিত অভিযোগে আরও জানানো হয়, ঢাকা আঞ্চলিক উপপরিচালকের (ডিডি) কাছে পরবর্তীতে ফাইলের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে গেলে শিক্ষকদের কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য দেননি এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করে রুম থেকে বের করে দেন। অনেককে তিনি তার রুমে প্রবেশ পর্যন্ত করতে দেননি। তাই আমরা তার দ্রুত অপসারণ চাই। আমরা ঢাকা শহরের মতো ব্যয়বহুল জায়গায় পরিবার পরিজন নিয়ে বিনা বেতনে দীর্ঘ সাত মাস যাবত মানবেতর জীবনযাপন করছি। প্রকৃতপক্ষে আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য শিগগিরই আপনার শিক্ষা উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি। একইসঙ্গে ঢাকা আঞ্চলিক উপপরিচালকের (ডিডি) অপসারণ দাবি করেন তারা।