
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
কালীগঞ্জে কৃষি জমিতে খামারজাত সার তথা জৈব সার সঠিক উপায়ে প্রস্তুত না করে ব্যবহারের ফলে মাটির উর্বরতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এ অঞ্চলের কৃষকেরা তাদের চাষাবাদকৃত জমি থেকে একদিকে যেমন কাক্ষিত ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না, অন্যদিকে আবার উৎপাদন খরচও বেড়ে যাচ্ছে। মূলত কৃষকের সচেতনতার অভাবে সঠিক প্রক্রিয়ায় জৈব সার উৎপাদন করতে ব্যর্থ হওয়ায় এমনটি ঘটছে। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস বলছেন, উপজেলায় ২১ হাজার ৫০০ হেক্টর আবাদ যোগ্য জমি রয়েছে। যেখানে প্রায় ৫০ হাজার কৃষক নানা ধরনের ফসল উৎপাদনের সাথে সরাসরি জড়িত। সাধারণত কৃষক তার এক বিঘা ধানের জমিতে ৩ বারে ইউরিয়া সার ব্যবহার করেন ৫৫ থেকে ৬০ কেজি। ওই জমিতে মাটির জৈব উপাদান সঠিক মাত্রায় থাকলে কৃষকের ৬০ কেজির পরিবর্তে মাত্র ৩০ কেজি ইউরিয়া সার ব্যবহার করা লাগত। এতে করে কৃষকের জমিতে একদিকে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমবে এবং মাটির গুনাগুন ভালো থাকবে অন্যদিকে চাষাবাদে খরচও কমবে। আমাদের সমাজে প্রায় প্রতিটি কৃষক পরিবারেই গরু লালন পালন করা হয়। গরু থেকে প্রাপ্ত গোবর অসচেতনভাবে কৃষকরা তাদের বাড়ির আঙ্গিনায় অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে ফেলে রাখেন। গ্রামের ভাষায় ঐ স্থানকে কৃষকেরা” সারের গর্ত” বলে অভিহিত করেন।বর্ষার সময় ঐ গর্তে পানি প্রবেশ করে গোবরে পচনের সৃষ্টি হয় এবং জৈব সারের পুষ্টি উপাদান পানির সাথে ধুয়ে বের হয়ে যায়। রাসায়নিক সারকে মাটিতে ধরে রাখার জন্য জৈব সারে যে আঠালো পদার্থ থাকে তা পানিতে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে মাটির উর্বরতা ধরে রাখতে অধিক পরিমাণে রাসায়নিক সারের ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়, কিন্তু কৃষক যদি সচেতনতার সাথে নির্দিষ্ট স্থানে ইটের বাউন্ডারি করে তার উপর চাল দিয়ে সেখানে গোয়ালের গবর ফেলেন তাহলে গোবর থেকে উৎপাদিত জৈব সারের গুণমান ঠিক থাকবে। আর ওই জৈব সার মাটিতে প্রয়োগ করলে মাটির উর্বর শক্তিও ভালো থাকবে। এতে কৃষকের খরচ কমবে এবং নিরাপদ খাদ্য উৎপাদিত হবে। তাই জৈব সার ববস্থাপনায় কৃষকের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজন খামারজাত জৈব সার উৎপাদনে বেশি বেশি সরকারি প্রনোদনা দেওয়া। উপজেলার হেলাই গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলামের সাথে খামারজাত সার উৎপাদনের ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, প্রতিদিনের গোবর আমি বাগানে করে রাখা গর্তে নিয়ে ফেলি। সেখান থেকেই সময় মতো জৈব সার নয়ে জমিতে প্রয়োগ করি। এভাবেই বাপ দাদার আমল থেকে করে আসছি। জৈব সার উৎপাদনের সঠিক নিয়ম আমার জানা না থাকাই অতীত আমল থেকে চলে আসা নিয়মে আমি তা প্রস্তুত ও ব্যবহার করি। তবে কৃষি অফিস সহায়তা করলে আমিও যথাযথ নিয়মেই জৈব সার উৎপাদন করার ইচ্ছা পোষণ করেন এই কৃষক। কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক ওবাইদুর রহমান জানান,আমি নির্দিষ্ট স্থানে টিনের ছাউনি দিয়ে আমার গোয়াল ঘর থেকে আসা গোবর রিং এর মধ্যে সংরক্ষণ করি। ফলে বৃষ্টির পানিতে ওই গোবর পচনের কোন সম্ভাবনা থাকে না। যে কারণে গোবর থেকে উৎপাদিত জৈব সারের গুনাগুণ সঠিক থাকে। আমি জমিতে এই সার প্রয়োগ করে ভালো ফলও পেয়েছি। আমার জমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার অনেক কমে গেছে। আমি মনে করি আমাদের কৃষকরা যদি সচেতনভাবে সঠিক প্রক্রিয়ায় জৈব সার উৎপাদন করে তা জমিতে প্রয়োগ করত তাহলে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পেত, সার প্রয়োগগ খরচ কম হত। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি বলেন,সরকারকে একটি বৃহত অংকের অর্থ ব্যায় করতে হয় রাসায়নিক সার কেনার ক্ষেত্রে। আমরা যদি সঠিক উপায় জৈব সার উৎপাদন করতে পারি তাহলে একদিকে যেমন নিজেদের জমিতে অল্প পরিমাণ রাসায়নিক সারের ব্যবহারে ফসল উৎপাদিত হবে অন্যদিকে কৃষক এবং সরকারের ব্যায় ও কমবে। আমাদের কৃষকরা খামার জাতসার উৎপাদনে অসচেতন। তাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমরা উপজেলার অনেক কৃষককে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রযুক্ত প্রদর্শনির আওতায় এনেছি। আমরা ইউনিয়ন ভিত্তিক কৃষকদের মাঝে সঠিক প্রক্রিয়ায় খামার জাত জৈব সার উৎপাদনে নানা ভাবে পরামর্শ এবং উৎসাহ প্রদান করছি। আগামী দিনে এই সকল কৃষকরা সঠিক পন্থায় খামারজাত সার উৎপাদনে সক্ষম হবেন বলে আমি আশা রাখি।
কালীগঞ্জে কৃষি জমিতে খামারজাত সার তথা জৈব সার সঠিক উপায়ে প্রস্তুত না করে ব্যবহারের ফলে মাটির উর্বরতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এ অঞ্চলের কৃষকেরা তাদের চাষাবাদকৃত জমি থেকে একদিকে যেমন কাক্ষিত ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না, অন্যদিকে আবার উৎপাদন খরচও বেড়ে যাচ্ছে। মূলত কৃষকের সচেতনতার অভাবে সঠিক প্রক্রিয়ায় জৈব সার উৎপাদন করতে ব্যর্থ হওয়ায় এমনটি ঘটছে। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস বলছেন, উপজেলায় ২১ হাজার ৫০০ হেক্টর আবাদ যোগ্য জমি রয়েছে। যেখানে প্রায় ৫০ হাজার কৃষক নানা ধরনের ফসল উৎপাদনের সাথে সরাসরি জড়িত। সাধারণত কৃষক তার এক বিঘা ধানের জমিতে ৩ বারে ইউরিয়া সার ব্যবহার করেন ৫৫ থেকে ৬০ কেজি। ওই জমিতে মাটির জৈব উপাদান সঠিক মাত্রায় থাকলে কৃষকের ৬০ কেজির পরিবর্তে মাত্র ৩০ কেজি ইউরিয়া সার ব্যবহার করা লাগত। এতে করে কৃষকের জমিতে একদিকে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমবে এবং মাটির গুনাগুন ভালো থাকবে অন্যদিকে চাষাবাদে খরচও কমবে। আমাদের সমাজে প্রায় প্রতিটি কৃষক পরিবারেই গরু লালন পালন করা হয়। গরু থেকে প্রাপ্ত গোবর অসচেতনভাবে কৃষকরা তাদের বাড়ির আঙ্গিনায় অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে ফেলে রাখেন। গ্রামের ভাষায় ঐ স্থানকে কৃষকেরা” সারের গর্ত” বলে অভিহিত করেন।বর্ষার সময় ঐ গর্তে পানি প্রবেশ করে গোবরে পচনের সৃষ্টি হয় এবং জৈব সারের পুষ্টি উপাদান পানির সাথে ধুয়ে বের হয়ে যায়। রাসায়নিক সারকে মাটিতে ধরে রাখার জন্য জৈব সারে যে আঠালো পদার্থ থাকে তা পানিতে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে মাটির উর্বরতা ধরে রাখতে অধিক পরিমাণে রাসায়নিক সারের ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়, কিন্তু কৃষক যদি সচেতনতার সাথে নির্দিষ্ট স্থানে ইটের বাউন্ডারি করে তার উপর চাল দিয়ে সেখানে গোয়ালের গবর ফেলেন তাহলে গোবর থেকে উৎপাদিত জৈব সারের গুণমান ঠিক থাকবে। আর ওই জৈব সার মাটিতে প্রয়োগ করলে মাটির উর্বর শক্তিও ভালো থাকবে। এতে কৃষকের খরচ কমবে এবং নিরাপদ খাদ্য উৎপাদিত হবে। তাই জৈব সার ববস্থাপনায় কৃষকের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজন খামারজাত জৈব সার উৎপাদনে বেশি বেশি সরকারি প্রনোদনা দেওয়া। উপজেলার হেলাই গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলামের সাথে খামারজাত সার উৎপাদনের ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, প্রতিদিনের গোবর আমি বাগানে করে রাখা গর্তে নিয়ে ফেলি। সেখান থেকেই সময় মতো জৈব সার নয়ে জমিতে প্রয়োগ করি। এভাবেই বাপ দাদার আমল থেকে করে আসছি। জৈব সার উৎপাদনের সঠিক নিয়ম আমার জানা না থাকাই অতীত আমল থেকে চলে আসা নিয়মে আমি তা প্রস্তুত ও ব্যবহার করি। তবে কৃষি অফিস সহায়তা করলে আমিও যথাযথ নিয়মেই জৈব সার উৎপাদন করার ইচ্ছা পোষণ করেন এই কৃষক। কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক ওবাইদুর রহমান জানান,আমি নির্দিষ্ট স্থানে টিনের ছাউনি দিয়ে আমার গোয়াল ঘর থেকে আসা গোবর রিং এর মধ্যে সংরক্ষণ করি। ফলে বৃষ্টির পানিতে ওই গোবর পচনের কোন সম্ভাবনা থাকে না। যে কারণে গোবর থেকে উৎপাদিত জৈব সারের গুনাগুণ সঠিক থাকে। আমি জমিতে এই সার প্রয়োগ করে ভালো ফলও পেয়েছি। আমার জমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার অনেক কমে গেছে। আমি মনে করি আমাদের কৃষকরা যদি সচেতনভাবে সঠিক প্রক্রিয়ায় জৈব সার উৎপাদন করে তা জমিতে প্রয়োগ করত তাহলে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পেত, সার প্রয়োগগ খরচ কম হত। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি বলেন,সরকারকে একটি বৃহত অংকের অর্থ ব্যায় করতে হয় রাসায়নিক সার কেনার ক্ষেত্রে। আমরা যদি সঠিক উপায় জৈব সার উৎপাদন করতে পারি তাহলে একদিকে যেমন নিজেদের জমিতে অল্প পরিমাণ রাসায়নিক সারের ব্যবহারে ফসল উৎপাদিত হবে অন্যদিকে কৃষক এবং সরকারের ব্যায় ও কমবে। আমাদের কৃষকরা খামার জাতসার উৎপাদনে অসচেতন। তাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমরা উপজেলার অনেক কৃষককে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রযুক্ত প্রদর্শনির আওতায় এনেছি। আমরা ইউনিয়ন ভিত্তিক কৃষকদের মাঝে সঠিক প্রক্রিয়ায় খামার জাত জৈব সার উৎপাদনে নানা ভাবে পরামর্শ এবং উৎসাহ প্রদান করছি। আগামী দিনে এই সকল কৃষকরা সঠিক পন্থায় খামারজাত সার উৎপাদনে সক্ষম হবেন বলে আমি আশা রাখি।