এটুআই প্রকল্প: লুটপাট ও দুর্নীতির কালো ছায়া

আপলোড সময় : ২২-০২-২০২৫ ০৩:৫৫:২৩ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২২-০২-২০২৫ ০৩:৫৫:২৩ অপরাহ্ন
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সম্প্রতি ৮৫৫ কোটি টাকার এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রকল্পে ভয়াবহ লুটপাটের প্রমাণ পেয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে দুদকের অভিযানে প্রকল্পের বিভিন্ন স্তরে অনিয়মের সন্ধান মেলে। দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বার বার কাজ প্রদান, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ এবং সরকারি অর্থ অপচয়ের মাধ্যমে একটি চক্র বিপুল অর্থ লুটপাট করেছে। এতে ১৪ জন শীর্ষ কর্মকর্তার জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। বিশেষভাবে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সম্পৃক্ততার বিষয়টিও তদন্তাধীন রয়েছে। ২০২০ সালে পাঁচ বছরের জন্য অনুমোদিত ৮৫৫ কোটি টাকার প্রকল্পটি আনীর চৌধুরীর নেতৃত্বে পরিচালিত হয়, যিনি সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।
প্রকল্পটির প্রথম ব্যয় নির্ধারিত ছিল ৪৮৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা পরবর্তীতে সংশোধিত হয়ে ৮৫৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকায় পৌঁছায়। দুদকের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে যে, একই প্রতিষ্ঠানকে বার বার কাজ প্রদান করা হয়েছে এবং প্রকল্প সংক্রান্ত ক্রয়-প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম ছিল। এতে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, বিদেশে অর্থপাচার, অপ্রয়োজনীয় সফর, সম্পদ অর্জন, ঘনিষ্ঠদের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেয়া এবং রাজনৈতিক প্রচারের কাজে প্রকল্পের অপব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও এটুআই প্রকল্পের কয়েকজন কর্মকর্তা নারী সহকর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। এটুআই প্রকল্পের বর্তমান প্রধান আবদুল্লাহ আল ফাহিম জানিয়েছেন যে, অভ্যন্তরীণ তদন্তে ১৪ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং লুটপাটে উচ্চ পর্যায়ের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) অর্থায়নে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন’ (এটুআই) নামে একটি প্রকল্প চালু করে। পরে এটি ২০১৮ সালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে নিয়ে আসা হয় এবং ২০২০ সালে এর নাম বদলে রাখা হয় ‘এসপায়ার টু ইনোভেট’ (এটুআই)। ২০২৩ সালে এটিকে ‘এজেন্সি টু ইনোভেট’ (এটুআই) হিসেবে জাতীয় সংসদে বিল পাস করা হয়। সরকারি অর্থ লুটপাট ও অপচয়ের এই ভয়াবহ চিত্র দেশের প্রযুক্তিখাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবকে সামনে নিয়ে এসেছে। প্রকল্পের অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net