
দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী কিম সে-রনের রহস্যজনক মৃত্যু অবশেষে একটি করুণ সত্য প্রকাশ করল। গত রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে সিউলের সংসু-ডং এলাকার নিজ বাসা থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া না গেলেও, পরে জানা যায় যে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। দেশটির সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপ নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৪ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তবে ঘটনাস্থলে কোনো সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে এটি আত্মহত্যার একটি পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত ছিল।’ অভিনেত্রীর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু জানান, গত রোববার সকালে তিনি কিম সে-রনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। ফোনে সাড়া না পাওয়ায় তিনি পরিবারের সদস্যদের খবর দেন। পরবর্তীতে বিকেলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। ২০০৯ সালে ‘আ ব্র্যান্ড নিউ লাইফ’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে কিম সে-রনের। ২০১০ সালে ‘দ্য ম্যান ফ্রম নোহোয়ার’ সিনেমায় অভিনয়ের পর তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এছাড়া, ‘দ্য নেবারস’, ‘হাই! স্কুল-লাভ অন’সহ আরও বেশ কিছু সিনেমা ও টেলিভিশন সিরিজে অভিনয় করেছেন তিনি। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিম নানা ব্যক্তিগত ও পেশাদার সংকটের মুখে পড়েন। ২০২২ সালে তাঁর বিরুদ্ধে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগ ওঠে, যার ফলে তাঁকে মোটা অঙ্কের জরিমানা গুনতে হয়। এরপর ২০২৩ সালের এপ্রিলে অভিনয়ে ফিরতে চাইলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি তা করতে পারেননি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পেশাগত চ্যালেঞ্জ ও ব্যক্তিগত জীবনের নানা প্রতিকূলতার কারণে কিম সে-রন গভীর মানসিক চাপে ভুগছিলেন। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত জানুয়ারির পর থেকে তিনি কোনো পোস্ট দেননি, যা তাঁর বিচ্ছিন্নতার ইঙ্গিত দেয়। কিমের মৃত্যুর পর বিনোদন জগতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তাঁর সহকর্মী, বন্ধু ও ভক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। কোরীয় বিনোদন জগতে তরুণ তারকাদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন দীর্ঘদিন ধরেই আলোচিত বিষয়। কিম সে-রনের করুণ মৃত্যু এই প্রসঙ্গকে আবারও সামনে নিয়ে এলো।