
প্রস্তাবে যা থাকছে
* সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র’ প্রস্তাব
* ক্ষমতার প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা
* প্রধানমন্ত্রী পদের একচ্ছত্র ক্ষমতা হ্রাস
* অন্তর্বর্তী সরকার কাঠামোর সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব; বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ
* শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা সুনিশ্চিতকরণ
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, আমরা ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ রোধের জন্যে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠানগুলোকে জোরদার করার পাশাপাশি নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্যে সুপারিশ করেছি। এর অন্যতম হচ্ছে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল বা এনসিসি। প্রধানমন্ত্রী পদের একচ্ছত্র ক্ষমতা হ্রাসের জন্যে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থার সুপারিশ করেছি। যার মধ্যে তিনি (প্রধানমন্ত্রী হবেন যিনি) যেন একাধিক পদে অধিষ্ঠিত হতে না পারেন, সেটা সুপারিশ করেছি। তার নিজের দলের সংসদ সদস্যদের কাছে জবাবদিহির ব্যবস্থার জন্যে ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় সংসদ ভবনে স্থাপিত কমিশনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আলী রীয়াজ এসব কথা জানান। তিনি বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং নাগরিকদের সুবিচার প্রাপ্তির জন্যে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপের সুপারিশ আছে। আমরা নাগরিকদের অধিকারগুলো সম্প্রসারণের ওপর জোর দিয়েছি এবং সেগুলো বলবৎকরণে রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতার বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করেছি।
সাতটি বিষয়ে প্রাধান্য দিয়ে সংস্কার প্রস্তাব: আলী রীয়াজ জানান, কমিশন একটি কার্যকর গণতন্ত্র, মৌলিক মানবধিকার সুনিশ্চিতকরণ এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাতটি প্রধান বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেছে। সেগুলো হচ্ছেÑ ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান আদর্শ এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনস্বরূপ সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র’ প্রস্তাব; ক্ষমতার প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা; প্রধানমন্ত্রী পদের একচ্ছত্র ক্ষমতা হ্রাস; অন্তর্বর্তী সরকার কাঠামোর সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব; বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ; শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা সুনিশ্চিতকরণ এবং মৌলিক অধিকারের আওতা সম্প্রসারণ, সাংবিধানিক সুরক্ষা ও বলবৎযোগ্যতা নিশ্চিতকরণ। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই আলী রীয়াজ উল্লেখ করেন, আমি শুরুতেই ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে, গত ১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রের সংগ্রামে এবং ২০২৪ সালের ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। ষোল বছর ধরে অব্যাহত ফ্যাসিবাদী শাসন, তার বিরুদ্ধে জনগণের ক্রমাগত সংগ্রাম, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান এবং স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার পলায়নের প্রেক্ষাপটে ৭ অক্টোবর ২০২৪ এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। বিগত বছরগুলোতে সাংবিধানিক ব্যবস্থাকে ব্যবহার এবং সকল ধরণের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে একটি ব্যক্তিতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী শাসনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছিল। যা সম্ভব হয়েছিল বিদ্যমান সংবিধানের ভেতরে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা এবং আদর্শিক উপকরণের কারণে। এই প্রেক্ষাপটে জনপ্রতিনিধিত্বশীল ও কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও জনগনের ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্যে দেশের বিদ্যমান সংবিধান পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করে সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সুপারিশ দেওয়া এই কমিশনের দায়িত্ব বলে নির্ধারিত হয়। ৯ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিশনের কাজ শুরু হয় ১৩ অক্টোবর।
৫০ হাজার মানুষের মতামত পেয়েছে কমিশন: সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান জানান, বিদ্যমান সংবিধানের পর্যালোচনার পাশাপাশি কমিশন নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে অংশীজনদের মতামত সংগ্রহ শুরু কর কমিশন। তারই অংশ হিসেবে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ৫০ হাজার ৫৭৩ জনের মতামত পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মাধ্যমে দেশের ৬৪টি জেলায় ৪৫ হাজার ৯২৫টি খানা (হাউজহোল্ড) থেকে মতামত নেওয়া হয়। কমিশনের অনুরোধে ২৫টি রাজনৈতিক দল এবং তিনটি জোট তাদের লিখিত মতামত প্রদান করেছে বলেও জানান আলী রিয়াজ। তিনি বলেন, কমিশনের আমন্ত্রণে বিভিন্ন ধরনের ৪৩টি সিভিল সোসাইটি সংগঠনের ৯৯ জন প্রতিনিধি আমাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে তাদের মতামত জানান। যার মধ্যে ২৫টি সংগঠন তাদের বক্তব্যের লিখিত ভাষ্য আমাদের কাছে দেন। এর বাইরে ২৯টি সংগঠন স্বতঃপ্রনোদিত হয়ে তাদের মতামত আমাদের জানিয়েছেন। কমিশন সাত জন সংবিধান বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে, যার মধ্যে দুজন তাদের বক্তব্যের লিখিত ভাষ্যও আমাদের দিয়েছেন। সিভিল সোসাইটির ৩৭ জন ব্যক্তি আমাদের অনুরোধে উপস্থিত হয়ে তাদের মতামত দিয়েছেন, যার মধ্যে লিখিতভাবে তাদের বক্তব্য দিয়েছেন ২০ জন। এর বাইরেও ৩৪ জন ব্যক্তি তাদের মতামত ই-মেইলে বা কমিশনের কার্যালয়ে এসে তাদের মতামত লিখিতভাবে জমা দিয়েছেন। রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তিদের অংশ নেওয়ার ফলে সংবিধান সংস্কার বিষয়ক সুপারিশমালা তৈরিতে সমাজের এক ব্যাপক অংশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। তিনি জানান, কমিশন বিদ্যমান সংবিধানের পর্যালোচনা, অংশীজনদের মতামত এবং কমিশন সদস্যদের বিশেষজ্ঞ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে সুপারিশমালা এবং সেগুলোর যৌক্তিকতা নির্ধারণ করে। এর সারাংশ ১৫ জানুয়ারি সরকারের কাছে পেশ করা হয়েছে এবং তা সাংবাদিকদের মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করে। সুপারিশগুলো এবং সেগুলোর যৌক্তিকতার বিস্তারিত কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে আছে; যা ৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়েছে। পাঁচ খণ্ডের এই প্রতিবেদনের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম খণ্ডে অংশীজনদের মতামত, জরিপের ফল, এবং ওয়েবসাইটে প্রাপ্ত মতামতের সারাংশ সংকলিত হয়েছে। আলী রীয়াজ বলেন, আমাদের প্রতিবেদনের সুপারিশগুলোর বিস্তারিত পুনরুল্লেখ না করে যেটি আমরা জোর দিয়ে বলতে চাই, তা হচ্ছে আমরা মনে করেছি যে, শক্তিশালী গণতন্ত্র তৈরি এবং তাকে স্থায়ী করতে হলে, ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদী শাসনের আশঙ্কা মোকাবেলার উপায় হচ্ছে— ক্ষমতাসীনদের জবাবদিহিতার জন্যে প্রতিষ্ঠান তৈরি, সেগুলোর স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় পর্যায় থেকে শাসনব্যবস্থার সর্বস্তরে নাগরিকদের অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে, তাদের প্রতিনিধিত্বকে কার্যকর করে তুলতে হবে।
* সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র’ প্রস্তাব
* ক্ষমতার প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা
* প্রধানমন্ত্রী পদের একচ্ছত্র ক্ষমতা হ্রাস
* অন্তর্বর্তী সরকার কাঠামোর সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব; বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ
* শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা সুনিশ্চিতকরণ
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, আমরা ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ রোধের জন্যে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠানগুলোকে জোরদার করার পাশাপাশি নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্যে সুপারিশ করেছি। এর অন্যতম হচ্ছে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল বা এনসিসি। প্রধানমন্ত্রী পদের একচ্ছত্র ক্ষমতা হ্রাসের জন্যে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থার সুপারিশ করেছি। যার মধ্যে তিনি (প্রধানমন্ত্রী হবেন যিনি) যেন একাধিক পদে অধিষ্ঠিত হতে না পারেন, সেটা সুপারিশ করেছি। তার নিজের দলের সংসদ সদস্যদের কাছে জবাবদিহির ব্যবস্থার জন্যে ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় সংসদ ভবনে স্থাপিত কমিশনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আলী রীয়াজ এসব কথা জানান। তিনি বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং নাগরিকদের সুবিচার প্রাপ্তির জন্যে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপের সুপারিশ আছে। আমরা নাগরিকদের অধিকারগুলো সম্প্রসারণের ওপর জোর দিয়েছি এবং সেগুলো বলবৎকরণে রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতার বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করেছি।
সাতটি বিষয়ে প্রাধান্য দিয়ে সংস্কার প্রস্তাব: আলী রীয়াজ জানান, কমিশন একটি কার্যকর গণতন্ত্র, মৌলিক মানবধিকার সুনিশ্চিতকরণ এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাতটি প্রধান বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেছে। সেগুলো হচ্ছেÑ ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান আদর্শ এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনস্বরূপ সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র’ প্রস্তাব; ক্ষমতার প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা; প্রধানমন্ত্রী পদের একচ্ছত্র ক্ষমতা হ্রাস; অন্তর্বর্তী সরকার কাঠামোর সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব; বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ; শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা সুনিশ্চিতকরণ এবং মৌলিক অধিকারের আওতা সম্প্রসারণ, সাংবিধানিক সুরক্ষা ও বলবৎযোগ্যতা নিশ্চিতকরণ। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই আলী রীয়াজ উল্লেখ করেন, আমি শুরুতেই ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে, গত ১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রের সংগ্রামে এবং ২০২৪ সালের ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। ষোল বছর ধরে অব্যাহত ফ্যাসিবাদী শাসন, তার বিরুদ্ধে জনগণের ক্রমাগত সংগ্রাম, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান এবং স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার পলায়নের প্রেক্ষাপটে ৭ অক্টোবর ২০২৪ এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। বিগত বছরগুলোতে সাংবিধানিক ব্যবস্থাকে ব্যবহার এবং সকল ধরণের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে একটি ব্যক্তিতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী শাসনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছিল। যা সম্ভব হয়েছিল বিদ্যমান সংবিধানের ভেতরে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা এবং আদর্শিক উপকরণের কারণে। এই প্রেক্ষাপটে জনপ্রতিনিধিত্বশীল ও কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও জনগনের ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্যে দেশের বিদ্যমান সংবিধান পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করে সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সুপারিশ দেওয়া এই কমিশনের দায়িত্ব বলে নির্ধারিত হয়। ৯ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিশনের কাজ শুরু হয় ১৩ অক্টোবর।
৫০ হাজার মানুষের মতামত পেয়েছে কমিশন: সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান জানান, বিদ্যমান সংবিধানের পর্যালোচনার পাশাপাশি কমিশন নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে অংশীজনদের মতামত সংগ্রহ শুরু কর কমিশন। তারই অংশ হিসেবে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ৫০ হাজার ৫৭৩ জনের মতামত পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মাধ্যমে দেশের ৬৪টি জেলায় ৪৫ হাজার ৯২৫টি খানা (হাউজহোল্ড) থেকে মতামত নেওয়া হয়। কমিশনের অনুরোধে ২৫টি রাজনৈতিক দল এবং তিনটি জোট তাদের লিখিত মতামত প্রদান করেছে বলেও জানান আলী রিয়াজ। তিনি বলেন, কমিশনের আমন্ত্রণে বিভিন্ন ধরনের ৪৩টি সিভিল সোসাইটি সংগঠনের ৯৯ জন প্রতিনিধি আমাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে তাদের মতামত জানান। যার মধ্যে ২৫টি সংগঠন তাদের বক্তব্যের লিখিত ভাষ্য আমাদের কাছে দেন। এর বাইরে ২৯টি সংগঠন স্বতঃপ্রনোদিত হয়ে তাদের মতামত আমাদের জানিয়েছেন। কমিশন সাত জন সংবিধান বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে, যার মধ্যে দুজন তাদের বক্তব্যের লিখিত ভাষ্যও আমাদের দিয়েছেন। সিভিল সোসাইটির ৩৭ জন ব্যক্তি আমাদের অনুরোধে উপস্থিত হয়ে তাদের মতামত দিয়েছেন, যার মধ্যে লিখিতভাবে তাদের বক্তব্য দিয়েছেন ২০ জন। এর বাইরেও ৩৪ জন ব্যক্তি তাদের মতামত ই-মেইলে বা কমিশনের কার্যালয়ে এসে তাদের মতামত লিখিতভাবে জমা দিয়েছেন। রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তিদের অংশ নেওয়ার ফলে সংবিধান সংস্কার বিষয়ক সুপারিশমালা তৈরিতে সমাজের এক ব্যাপক অংশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। তিনি জানান, কমিশন বিদ্যমান সংবিধানের পর্যালোচনা, অংশীজনদের মতামত এবং কমিশন সদস্যদের বিশেষজ্ঞ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে সুপারিশমালা এবং সেগুলোর যৌক্তিকতা নির্ধারণ করে। এর সারাংশ ১৫ জানুয়ারি সরকারের কাছে পেশ করা হয়েছে এবং তা সাংবাদিকদের মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করে। সুপারিশগুলো এবং সেগুলোর যৌক্তিকতার বিস্তারিত কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে আছে; যা ৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়েছে। পাঁচ খণ্ডের এই প্রতিবেদনের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম খণ্ডে অংশীজনদের মতামত, জরিপের ফল, এবং ওয়েবসাইটে প্রাপ্ত মতামতের সারাংশ সংকলিত হয়েছে। আলী রীয়াজ বলেন, আমাদের প্রতিবেদনের সুপারিশগুলোর বিস্তারিত পুনরুল্লেখ না করে যেটি আমরা জোর দিয়ে বলতে চাই, তা হচ্ছে আমরা মনে করেছি যে, শক্তিশালী গণতন্ত্র তৈরি এবং তাকে স্থায়ী করতে হলে, ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদী শাসনের আশঙ্কা মোকাবেলার উপায় হচ্ছে— ক্ষমতাসীনদের জবাবদিহিতার জন্যে প্রতিষ্ঠান তৈরি, সেগুলোর স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় পর্যায় থেকে শাসনব্যবস্থার সর্বস্তরে নাগরিকদের অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে, তাদের প্রতিনিধিত্বকে কার্যকর করে তুলতে হবে।