
রাজধানীর ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনায় মতিঝিল এলাকার যুবলীগ নেতাসহ ডাকাতচক্রের ১২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির ধানমন্ডি থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন বেল্লাল চাকলাদার (৪৫), মো. মঞ্জু (৪০), সাইফুল ইসলাম (৪০), মো. রাসেল (২৮), মো. জাহিদ (২৪), মো. জাকির প্রকাশ ওরফে তৌহিদ (৪০), মো. ইসমাইল হোসেন (৩৩), মো. হিরা শেখ (৩৫), মো. রফিক (৩৫), মো. বাধন (৩০), চাঁন মিয়া (৫৪), ও মো. আসলাম খাঁন (৪৫)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পিকআপ, মোবাইল ফোন, ডাকাতি করে নেয়া ট্রাক ও ১০টি তেল ভর্তি ড্রামসহ ৪৬টি ড্রাম উদ্ধার করা হয়।
গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রমান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আলম। তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি আব্দুল কাদের নামে একজন পরিবহন ব্যবসায়ী ধানমন্ডি থানায় অভিযোগ করেন তার মালিকানাধীন একটি ট্রাকের চালক মো. নয়ন ও হেলপার মো. জামিরুল ইসলাম গত ২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ৬০টি পাম অয়েলের ড্রামের চালান নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার উদ্দেশে যাত্রা করেন। ৩ জানুয়ারি রাত ৩টার দিকে ধানমন্ডির মিরপুর রোডের হোটেল আড্ডার সামনে ৭ থেকে ৮ জনের একটি ডাকাত দল দুটি মাইক্রোবাস করে এসে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে পিস্তল ঠেকিয়ে ট্রাকের চালক ও হেলপারসহ তেলবাহী ট্রাকটি নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে ড্রাইভার ও হেলপারকে জোর পূর্বক চেতনা নাশক ওষুধ সেবন করিয়ে হাত ও চোখ বেঁধে কেরানীগঞ্জের রসুলপুর এলাকায় ফেলে দেয়। ডিসি মো. মাসুদ আলম বলেন, ঘটনার ১৯ দিন পর গত ২২ জানুয়ারি রাত ৩টার দিকে একই কায়দায় ডাকাত দল মোহাম্মদপুর থানাধীন রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ গেটের সামনে থেকে ৭৫ ড্রাম সয়াবিন তেল বোঝাই আরেকটি ট্রাকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনা মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তে গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় জড়িতদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর মগবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মঞ্জু, সাইফুল ইসলাম, রাসেল ও জাহিদকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত রোববার ডাকাতির মূল হোতা মো. জাকির প্রকাশ ওরফে তৌহিদকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ আরশি নগর থেকে, মো. ইসমাইল হোসেন, মো. হিরা শেখ, মো. রফিককে ঘাটারচর থেকে, বাধনকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ পানগাঁও থেকে, চাঁন মিয়াকে মহাখালী থেকে বেল্লাল চাকলাদারকে ঢাকার শনির আখড়া থেকে আসলাম খাঁনকে এবং মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তী সময়ে গ্রেফতারকৃত আসলাম খাঁনের স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে, মুন্সীগঞ্জের বিসিক এলাকার গোডাউন থেকে ১০টি তেল ভর্তি ড্রাম, ৩৬টি খালি তেলের ড্রাম উদ্ধার করা হয়। এছাড়া গ্রেফতারকৃতদের হেফাজত থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি সাদা নোহা গাড়ি, একাধিক বাটন ফোন ও একটি লুণ্ঠিত ট্রাক উদ্ধার করা হয়।