
সরকারি বিধি বহির্ভূতভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের দায়ে দুদকের জালে আটকা পড়েছে আশকোনাস্থ হজ অফিসের সহকারী হজ অফিসার আ. মালেক। দুর্নীতি দমন বিভাগে তার দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত চলছে। এ নিয়ে খোদ ধর্ম মন্ত্রণালয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ধর্ম মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির ১৬৭ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে হজ অফিসের এই চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় মালেকের দুর্নীতির খতিয়ান প্রমাণিত হওয়ায় তাকে কয়েকবার হজ অফিস হতে প্রত্যাহার করে ধর্ম মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছিল। একবার সাত বছর এবং পরবর্তীতে তিন মাস মন্ত্রনালয়ে সংযুক্ত থাকার পর বিশেষ তদবির বানিজ্য করে হজ অফিসে পুনরায় যুক্ত হয়ে অপরাধ বানিজ্যে লিপ্ত হয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রায় ১৪০০ হজ এজেন্টের মালিক প্রতিনিধিগণ হতে অবৈধ উপায়ে উপার্জন করে নগদ সম্পদে বিপুল টাকার মালিক বনে গেছেন। বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে চাকরি জীবনে তিনি তার নিজ গ্রামে বরিশাল তালতলি ব্রিজের নিকট আয় বহির্ভূত ঘুষ বানিজ্য অর্থ দ্বারা নিজ নামে জায়গা ক্রয় করে ৪তলা ফাউন্ডেশনের আলিশান বাড়ি নির্মাণ করেছেন। গ্রামের চারপাশে কোটি টাকার প্রচুর কৃষি জমি ক্রয় করেছেন। তার শ্বশুর বাড়ি বরিশালের কাশিপুর হাতেসা মাজারের পাশে তিনি তার শাশুড়ীর নামে এলাকায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার জায়গা ক্রয় করেন । ইসলামি ব্যাংক হজ ক্যাম্প শাখায় তার একটি একাউন্ট রয়েছে। এসব কোটি টাকার অর্থ হজ এজেন্সির সাথে রিপ্লেসমেন্ট বাণিজ্য, হজ লাইসেন্স এর দালালি, হজ এজেন্সির বারকোড সরবরাহ ব্যর্থ হজ যাত্রীদের মোয়াল্লেম ফি ফেরত স্টিকার লাখ টাকায় অবৈধভাবে বিক্রয়, এজেন্সির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদবির বাণিজ্য এবং ভিসার জন্য ডিও জারির কাজে এজেন্সি হতে এসব অর্থ হাতিয়ে নিয়ে থাকেন বলে অনেকেরই অভিযোগ।
অপর একটি সূত্র জানায়, হজ অফিসকে দুর্নীতিমুক্ত করণের লক্ষ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. আনিছুর রহমানের নির্দেশে সিনিয়র সহকারী সচিব আরিফ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ এক লিখিত নির্দেশনায় হজ অফিসের পরিচালক সাইফুল ইসলাম মালেকের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিরেকে তার এবং তার স্ত্রী তুলির সম্পত্তি অর্জনের কারণে সরকারি কর্মচারি আচরণবিধি এবং সরকারি কর্মচারি (শৃংখলা ও আপীল) বিধি ১৯৮৫ মোতাবেক বিভাগীয় মামলা রুজু করার অনুরোধ জানান। হজ অফিসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অভিযুক্ত মালেকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করতে হলে বিধি অনুযায়ী তাকে তাৎক্ষণিক সাময়িক বরখাস্ত করার কথা এবং তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু সাবেক পরিচালক হজ সাইফুল ইসলাম ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে মলেকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজুর দিকে অগ্রসর না হয়ে তাকে বাঁচানোর জন্য কালক্ষেপণ করেন। হজ অফিসার আ. মালেকের মোবাইলে বার বার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তার অফিসের নম্বরে ফোন করলে ফোন রিসিভ করে বলেন স্যার অফিসে নেই। অন্য সময় ফোন করবেন। তার অফিসে যেতে চাইলে সেনা বাহিনীর ক্যাম্পের কারণে যাওয়া সম্ভব হয়নি।