হঠাৎ দেশজুড়ে বেড়েছে সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন, প্রেসক্লাবে হামলা ও ভাংচুরের মতো ঘটনা। পেশাগত দায়িত্বপালনকালে কতিপয় চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুরা যে যার মতো করে লাঠিসোটা নিয়ে সাংবাদিকের উপর ঝাপিয়ে পড়ছে। অতি দ্রুত হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে সাংবাদিক সমাজ। একইসঙ্গে গত ৫ আগস্টে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ইচ্ছেকৃতভাবে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দেয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সুরক্ষার দাবি তুলেছেন সাংবাদিকনেতৃবৃন্দ।
সর্বশেষ তিন ফেব্রুয়ারি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়ায় পেশাগত কাজে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের ওপর অতর্কিত হামলা করেছে দৃর্বৃত্তরা। এসময় তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। এতে আহত ও গুলিবিদ্ধ হয় দৈনিক খবরের কাগজের জেলা প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম, চন্দ্রগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ও প্রচার সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ। তিন ফেব্রুয়ারি বিকালে দত্তপাড়া ডিগ্রী কলেজ সংলগ্ন গণেষ শ্যামপুর এলাকায় এমন ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জেলার গণমাধ্যাম কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও আতংক বিরাজ করছে।
জানা গেছে, গত সোমবার বিকালে হামলা ও মারধরের শিকার ভুক্তভোগী এক পরিবারের ফোন কলে ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথে মুখোশদারী ৮-১০ জন দুর্বৃত্ত সাংবাদিকদের গতিরোধ করে। এসময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম ও আলাউদ্দিনকে বাঁশ দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে এবং সাংবাদিক আবদুল মালেক নিরব ও ফয়সাল মাহমুদকে দু’জন দুর্বৃত্ত মিলে অস্ত্র তাক করে রাখে। এসময় সাংবাদিকদের মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ পরিচয়পত্র, টাকা নিয়ে যায়। পরে তারা এলোপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে গুরুতর আহত হন রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন এবং ফয়সাল মাহমুদ মাহমুদ গুলিবিদ্ধ হন। লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার কমলাশীষ রায় বলেন, ‘আহত অবস্থায় তিন জন হাসপাতালে এসেছে। এদের মধ্যে দু’জন মাথায় এবং হাতে আঘাত রয়েছে। অন্যজনের পায়ে এবং কানে আঘাত রয়েছে, গুলিবিদ্ধ কিনা পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে জানা যাবে।’ এমন ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাব। জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে বলে জানান লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম পাভেল। একইদিন শরীয়তপুরে দৈনিক সমকালের সাংবাদিক সোহাগ খান সুজনের উপর হামলা ও ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তাকে বাঁচাতে এলে আরও তিন সাংবাদিক আহত হয়। তিন ফেব্রুয়ারি দুপুর একটার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি সোহাগ খান সুজন, নিউজ২৪ টেলিভিশন ও জাগো নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডট কমের প্রতিনিধি বিধান মজুমদার অনি, বাংলা টিভির প্রতিনিধি নয়ন দাস ও দেশ টিভির প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম আকাশ। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় সোহাগ খান সুজনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত ২৮ জানুয়ারি দুপুরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস এক রোগীর ব্যবস্থাপত্র ছুড়ে ফেলে দেয়। এ ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ করে জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা। পরে ক্লিনিক ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক পরিচয় দেয়া নুরুজ্জামান শেখ নামে একজন ওই চিকিৎসকের পক্ষ নিয়ে একটি অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ করে। এ বিষয় নিয়ে নুরুজ্জামানের সঙ্গে সোহাগ খান সুজনসহ বেশ কয়েকজন সংবাদিকদের বাগবিতণ্ডা হয়। এরই জেরে গত সোমবার দুপুরে ক্লিনিক ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান শেখ, তার ভাই শামীম শেখসহ ১০-১২ জন মিলে ছুরি, হাতুড়িসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সোহাগ খান সুজনের ওপর হামলা চালায়। তাকে বাঁচাতে এলে আরও তিন সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায় তারা। হামলার বিষয়ে সমকালের প্রতিনিধি সোহাগ খান সুজন বলেন, সংবাদ প্রকাশের জেরে আমার প্রতি ক্ষিপ্ত ছিল ক্লিনিক ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান শেখ। আজ অফিসে যাওয়ার পথে আমার ওপর হামলা চালায় তারা। আমি এই হামলার বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর পালং মডেল থানার ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘সাংবাদিকদের ওপর হামলা ঘটনা শুনে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। দুই ফেব্রুয়ারি কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলায় সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সুজন মাহমুদ নামের এক সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার সন্ধ্যা সাতটায় রাজীবপুর বাজার কম্পিউটার গলিতে এ হামলা হয়। হামলাকারীরা সবাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমানের অনুসারী বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সাংবাদিক সুজন মাহমুদ বলেন, সন্ধ্যা ছয়টায় রাজীবপুর বাজারে সহকর্মীদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলাম। সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, সাব্বির হোসেন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শফি আলম, শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানাসহ ৩০ থেকে ৩৫ জনের একটি দল এসে আমার ওপর আক্রমণ করে। এ সময় সঙ্গে থাকা আমার সহকর্মীরা আমাকে হামলার হাত থেকে রক্ষা করে একটি দোকানে বসিয়ে রাখে। মারমুখী দুর্বৃত্তরা দোকানের ভেতরে আমাকে আক্রমণ করে। তিনি বলেন, হামলার সময় উপজেলা শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা ও ছাত্রদল কর্মী আবদুল্লাহ আল-মামুন আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, তোর কত বড় সাহস তুই নিউজ করস আবার থানায় অভিযোগ দিস!
সুজন মাহমুদ বলেন, গত তিন জানুয়ারি উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোখলেছুর রহমানের নামে ‘বাংলা এডিশন’ নামের অনলাইন সংবাদমাধ্যমে ‘স্বপদে বহাল অধ্যক্ষ, নেপথ্যে উপজেলা বিএনপি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেন। এর জের ধরেই উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতির অনুসারীরা হামলা করেন। তবে উপজেলা শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, সাংবাদিক সুজন মাহমুদ আমাদের এলাকার ছেলে, আমরা তাকে ছোট ভাইয়ের মতো দেখি। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর সে বিএনপি নেতাদের নামে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছে। এই ঘটনায় আজ আমরা বাজারে তার কাছে জানতে গিয়েছিলাম সে আওয়ামী লীগের হয়ে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে লেগেছে কি না। এর বাইরে তার সাথে কিছুই ঘটেনি। আপনি সরেজমিনে এসে তদন্ত করে দেখেন। গত দুই ফেব্রুয়ারি ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় যমুনা টিভির সাংবাদিকের ওপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় আটকদের ছেড়ে দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শুক্রবার মেলায় প্রবেশের নির্ধারিত পাস না দেখিয়ে জোর করে ঈগলু আইসক্রিম স্টলের এক কর্মচারী প্রবেশ করতে গেলে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে পলি নামে এক নারী নিরাপত্তাকর্মীর কান কেটে দেয় ঈগলুর কর্মচারী পুতুল। এ সময় পাশেই লাইভের প্রস্তুতি নিতে থাকা যমুনা টিভির রূপগঞ্জ প্রতিনিধি জয়নাল আবেদীন জয় মোবাইলে ও ক্যামেরাপার্সন আহম্মেদ জুলহাস ভিডিও করতে গেলে ঈগলুর ১৫/২০ কর্মচারী তাদের ওপর চড়াও হয়। হামলাকারীরা জয়নাল আবেদীন জয়কে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুসি মারে। মোবাইল ফোন ও ক্যামেরা ভাঙচুর করে। ধাতব কিছু দিয়ে জয়ের মাথার বাম পাশে আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ব্যক্তিমালিকানা জায়গা দখল করে মহিষলুটি হাটে মাছের শেড নির্মাণের অভিযোগ ওঠে মহিষলুটী চৌরাস্তা মৎস্য ব্যবসায়ী আড়তদার সমবায় সমিতি লিমিটেড ও এলজিইডির বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ছয় জানুয়ারি দৈনিক ইত্তেফাকে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মহিষলুটী হাটে মাছের শেড নির্মাণ করা হচ্ছে। বিশেষ করে ফলোআপ সংবাদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের সময় দুই ফেব্রুয়ারি বেলা আড়াইটার দিকে দৈনিক ইত্তেফাকের তাড়াশ সংবাদদাতা ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পরিবর্তনের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর গোলাম মোস্তফা হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে তিনি তাড়াশ থানায় জেনারেল ডায়রি (জিডি) করেছেন। জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাড়াশ থানার এসআই মো. আলমগীর হোসেন। তিনি প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন। গত তিন ফেব্রুয়ারি বরগুনার তালতলীতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশের সামনে সন্ত্রাসী হামলার শিকার নয়া দিগন্ত সাংবাদিক মাও. মোঃ ইউসুফ আলীর উপর হামলার ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং সাবেক যুব নেতার অনুসারী সন্ত্রাসী আমির হোসেন সহ ৯ জনের নামে তালতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার সকালে উপজেলার শারিকখালী ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া এলাকায় সংবাদ প্রকাশের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে নয়া দিগন্ত সাংবাদিক ইউসুফ আলীর উপর অতর্কিত হামলা চালায় সন্ত্রাসী বাহিনী। এ ঘটনা ভিডিও ধারণ করতে গেলে আরও দুই সাংবাদিককে লাঞ্চিত করা হয়। সংবাদ সংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত তাদের সকল সরঞ্জাম ছিনিয়ে নেয় ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। সন্ত্রাসীদের তোপের মুখে পড়ে থানা পুলিশও নিরুপায় হয়ে পড়ে। পরক্ষণে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই সাংবাদিককে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরক্ষণে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ছাড়পত্র প্রদান করা হয়। দুই ফেব্রুয়ারী মামলাটি এজাহার ভুক্ত হয়েছে বলে জানান হামলার শিকার সাংবাদিক ইউসুফ আলী। তিনি বলেন আমার উপর অতর্কিত হামলা যারা চালিয়েছে, তাদের মধ্যে ৩০ জন অজ্ঞাত রেখে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমি তাদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। তালতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহজালাল মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ বৈষম্যবিরোধী চেতনার পরিপন্থী: বিভিন্ন গণমাধ্যমে স্বার্থান্বেষী মহলের হামলা-ঘেরাওয়ের হুমকি, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নির্বিচার মামলা ও হেনস্তার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলেছে, গণমাধ্যমের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ, হামলা ও হুমকি বৈষম্যবিরোধী চেতনার পরিপন্থী। ভিন্নমত ও মুক্ত গণমাধ্যমের ঢালাও নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তাহীনতা মূলত কর্তৃত্ববাদের পুনরাগমনের পথ সৃষ্টি করবে। গত বছরের ছয় নভেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই উদ্বেগের কথা জানায় টিআইবি।
সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধের দাবিতে সিইউজের স্মারকলিপি: পেশাদার সাংবাদিকদের বিরূদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন-সিইউজে। গত ৯ অক্টোবর চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের মাধ্যমে সংগঠনের নেতারা এ স্মারকলিপি দেন। স্মারকলিপিতে আদালতে ও বিভিন্ন থানায় সাংবাদিকদের জড়িয়ে দায়ের করা মামলার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। স্মারকলিপিতে বলা হয়, দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগে দায়ের করা বিভিন্ন মামলায় স্বার্থান্বেষী মহলের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে সুকৌশলে পেশাদার সাংবাদিকদের নামও আসামির তালিকায় ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। একই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম মহানগরীর দু’টি থানা ও আদালতে দায়ের করা পৃথক পাঁচটি মামলায় ৩৭ জন পেশাদার সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হত্যা মামলাতেও আসামির তালিকায় চারজন সাংবাদিকের নাম ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব মামলার কোনোটিতেই কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। এসব ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের মামলার আসামি করার বিষয়টি বাদী নিজেও জানেন না এবং আসামিদেরও চিনেন না। পেশাদার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়েরের ঘটনায় সাংবাদিক সমাজের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়ছে।
সিইউজে নেতারা স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন, সম্প্রতি চট্টগ্রামে যেসব মামলায় সাংবাদিকদের আসামি করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, হয়রানিমূলক এবং সামাজিকভাবে হেনস্থা করার অপচেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়। চলমান পরিস্থিতিতে এসব মামলার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত সাংবাদিকদের মিথ্যা অভিযোগ ও হয়রানি থেকে রেহাই দিতে হবে। নতুন করে কোনো মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় পেশাদার সাংবাদিকদের নাম জড়িয়ে দিতে না পারে- এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।