জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে থেকে অবশেষে হাসপাতালে ফিরে গেছেন। গত রোববার দিবাগত রাত ১টা ৪৫ মিনিটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর অনুরোধে যমুনার প্রধান ফটক ছাড়তে দেখা যায় আহতদের। তার আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতরা সাতটি দাবি জানান। হাসনাত আব্দুল্লাহ তাদের মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনেন। তিনি আহতদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি প্রতিটি দাবির বিষয় বিশ্লেষণ করেন। কোন দাবিটি কোন পর্যায়ে রয়েছে, সেটা কীভাবে আদায় করা যায় সেগুলো নিজ বক্তব্যে তুলে ধরেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি চলতি সপ্তাহের মধ্যে আহতদের সুচিকিৎসাসহ পুনর্বাসনের বিষয়ে সচিবালয়ে যাবেন বলে জানান। তার সঙ্গে আহত তিনজনকে নিয়ে যাবেন বলেও জানান। তাছাড়া গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে সেই তিনজন প্রতিনিধি চূড়ান্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার সামনে অবস্থান নেন আহতরা। এর কয়েক মিনিট পরই তাদের সঙ্গে কথা বলতে সেখানে উপস্থিত হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তবে আহতরা তার সঙ্গে কথা বলতে প্রথমে রাজি হননি।
এ সময় আহতরা বলেন, সরকারকে আগে আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। তারপর সংস্কার, দল গোছানো ও নির্বাচন। হাসনাত, সারজিস ও সমন্বয়করা আহতদের পরিবারের খোঁজখবর না নিয়ে তারা রাজনৈতিক দল গোছানো নিয়ে ব্যস্ত। আহতদের পুনর্বাসনের কথা সরকার শুধু বলেছে, কিন্তু তারা কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। আমরা বাস্তবে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখতে পাইনি।
আহতদের উদ্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের সুচিকিৎসা দিতে পারে নাই, এটা সরকারের ব্যর্থতা। এজন্য সরকারের আমলাতান্ত্রিক পদ্ধতি দায়ী, সচিবরা দায়ী, আমলারা দায়ী। যারা আহত হয়েছেন তাদের আমরা সুচিকিৎসা দিতে পারি নাই, এজন্য আমি নিজে ব্যথিত। তিনি বলেন, আহতের পুনর্বাসন করার বিষয়টি একটি লম্বা প্রক্রিয়া। নানা জায়গায় তাদের কাগজ চেক করতে করতে একটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। এখানে গ্রুপ, উপগ্রুপ তৈরি হয়েছে। এখানে একটা দালাল শ্রেণি তৈরি হয়েছে। একপক্ষ আরেকপক্ষকে দোষারোপ করছে। কেউ বলছে আমরা অরিজিনাল, আবার কেউ বলছে ওরা ভুয়া। এ ধরনের ঘটনার কারণে সরকার বিব্রত। অবিলম্বে যারা আহত তাদের সুচিকিৎসার জন্য যা যা করা দরকার সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে করবে। আপনাদের এ দাবি আমি সরকারের কাছে জানাচ্ছি।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের হাতে কিছু নেই। আমরা কিছু করতে পারি না। আপনারা যে চিকিৎসা পান না এটা সত্য। এর জন্য দায়ী সরকারের লোকজন। সরকার ভালো মতো তদারকি করতে পারে নাই।