* নেতৃত্বে জায়গা পাবেন ত্যাগী ও বঞ্চিত নেতাকর্মীরা
* সম্মেলনে সরাসরি অংশ নিতে পারেন তারেক রহমান
* সর্বশেষ ২০১৬ সালে বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল হয়
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজনীতির মাঠে এখন অনেকটাই সক্রিয়। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ফলে এখনই দলকে আরও সুসংগঠিত করতে মাঠে নেমেছেন তারা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর জুন মাসে বিএনপির সপ্তম জাতীয় কাউন্সিল হতে পারে। দলটির ত্যাগী ও বঞ্চিত নেতাকর্মীদের আশা, নেতৃত্বে তাদের জায়গা দেয়া হবে। জাতীয় সম্মেলনে সশরীরে অংশ নেবেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এদিকে গত শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তারেক রহমান। তবে বিএনপি দলীয় সূত্র বলছে, এ বছর দলের সপ্তম জাতীয় কাউন্সিল করতে চায় বিএনপি। এজন্য দায়িত্বশীল নেতাদের দুই মাসের মধ্যে ৮২টি সাংগঠনিক জেলা ও অধিভুক্ত উপজেলার মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি পুনর্গঠনের কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকাতে জেলাভিত্তিক আলাদা কমিটিও করছে তারা।
দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক তিন বছর পরপর বিএনপির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল হওয়ার কথা। তবে গত ৯ বছর সে রীতি রক্ষা করতে পারেনি দলটি। সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতন-নিপীড়ন, হামলা-মামলা ও হয়রানির মুখে অনেকটাই নাজেহাল হয়ে পড়েছিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি সামলে এখন জাতীয় কাউন্সিলের কথা ভাবছেন বিএনপির নেতারা। তারা বলছেন, কাউন্সিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ হবে।
বিএনপির দফতর সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৬ সালে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই কমিটি দিয়েই এখনো চলছে বিএনপি। দীর্ঘদিন ধরে কাউন্সিল না হওয়ায় মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে অনেক কমিটি। স্থায়ী কমিটি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিসহ গুরুত্বপূর্ণ কমিটিগুলোতে এখনো প্রায় ১২০টি শূন্য পদ রয়েছে। তারেক রহমান দেশের বাইরে থেকে প্রতিনিয়ত দিকনির্দেশনা দিয়ে সক্রিয় রেখেছেন নেতাকর্মীদের। তিন বছর মেয়াদের কাউন্সিলে এবার তরুণদের কেউ কেউ নেতৃত্বে আসতে পারেন বলেও শোনা যাচ্ছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টা বলেন, দলের পক্ষ থেকে একাধিকবার কাউন্সিলের উদ্যোগ নেয়া হলেও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিহিংসার কারণে তা করা যায়নি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠানের ব্যাপারে ভাবা হচ্ছে এবং সপ্তম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারেন। তিনি আরও জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা হলে বিএনপির পক্ষ থেকে কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা আসতে পারে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল বলেন, চলতি বছরের মধ্যেই সপ্তম জাতীয় কাউন্সিল করার চিন্তা রয়েছে হাইকমান্ডের। এ লক্ষ্যে আগামী দুই মাসের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমার কাছে মনে হয় আগামী জুনের মধ্যেই দলের সপ্তম কাউন্সিল হতে পারে। বলছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, দলের কাউন্সিলের ব্যাপারে দলের নীতি-নির্ধারণী ফোরাম থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এবার নেতাকর্মীদের জাতীয় কাউন্সিল হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দলে ইউনিটভিত্তিক কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি দেয়া হচ্ছে। এই কার্যক্রম শেষ হলে জাতীয় কাউন্সিল হবে।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, দলের সপ্তম জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তবে এখনো তারিখ নির্ধারণ হয়নি।