
* আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে ছিনতাই-ডাকাতি
* সংঘর্ষ বৃদ্ধি পাচ্ছে ঢাকার বাইরেও
* ঘটছে একাধিক গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনা
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঝে মধ্যেই সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গুলি, সাউণ্ড গ্রেনেড নিক্ষেপে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলেছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষে জড়িয়ে অনেকে আহত হচ্ছেন। আর এসব আন্দোলন ঘিরে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীবাসী। এসব কারণে তীব্র যানজট মুখোমুখি ও নিরাপত্তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে বাড়ছে উদ্বেগ। এছাড়াও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে চুরি-ছিনতাইসহ প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। বিশেষ করে অপরাধ পরিস্থিতি ক্রমেই চলে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। বিগত সময়ের তুলনায় রাজধানীতে চুরি-ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা অনেক বেড়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার পরিবর্তনের পর থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল কমে যাওয়ায় অপরাধীরা বেশি সক্রিয় হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাতের বেলায় বের হয়ে জীবনও যাচ্ছে।
জানা গেছে, গত ২৫ জানুয়ারি দুপুরে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের ঘোষণাসহ ছয় দফা দাবিতে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেয় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট। অবস্থান কর্মসূচি থেকে স্মারকলিপি দেয়ার উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে শাহবাগে মোড়ে লাঠিপেটা করে পুলিশ। পাশাপাশি জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। এসময় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যার পর স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরুদ্ধ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। শুধু সায়েন্সল্যাবই নয় এসময় পুরান ঢাকার তাঁতিবাজার ও মিরপুর টেকনিক্যাল মোড়ও অবরোধ করে তারা। এতে চতুর্মুখী সড়কে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। চরম ভোগান্তিতে পড়তে দেখা যায় রাজধানীতে চলাচল করা নানান শ্রেণি-পেশার মানুষদের। আর এ ঘটনা থেকেই ঢাকা কলেজসহ সাত কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মধ্যরাত পর্যন্ত চলা এই ঘটনা উভয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সাংবাদিক ও কয়েকজন পথচারীসহ অনেকে আহত হয়েছেন।
গত ২৪ জানুয়ারি দশম গ্রেড বেতন স্কেলের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। গত শুক্রবার দুপুরের পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে পদযাত্রা শুরু করেন তারা। শাহবাগ থানার সামনে এলে পদযাত্রাটিতে বাধা দেয় পুলিশ। সর্বশেষ গত সোমবার মধ্যে রাত থেকে রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। এই কর্মবিরতির কারণে ট্রেন না ছাড়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে যাত্রীরা গত মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী রেলস্টেশনে ভাঙচুর চালান। স্টেশনে যাত্রীদের বসার জন্য থাকা চেয়ারগুলো ভাঙচুর করেন। রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে গত মঙ্গলবার ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় কমলাপুর রেল স্টেশনের এক কোটি ২০ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্টেশন ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন।
গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সাওঘাট এলাকায় একটি পাইকারি আড়তের দখল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। এসময় গুলিবর্ষণ ও ১১টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগসহ বাড়ি ও অফিস ভাঙচুর করা হয়। মজিবুরের লোকজন সেলিম প্রধানের অফিসের সামনে দিয়ে গেলে সেলিমের লোকজন তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপসহ গুলিবর্ষণ করে। এক পর্যায়ে দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে স্বপন, রাজু, আলামিন, বাবু, রফিক ও সাগর নামে ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হন। এ সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মেহেদী ইসলাম বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে শুনেছি। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এছাড়াও গত মঙ্গলবার রাতে সিএনজি রাখা ও বাস মালিক সমিতির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ভোলায় বাস শ্রমিক ও সিএনজি শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের সময় ৫টি সিএনজি ও ১টি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে কমপক্ষে ৩০টি সিএনজি। এ সময় সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। এরমধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গতকাল বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো ভোলা বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাসস্ট্যান্ডের জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বাস শ্রমিক ও সিএনজি চালকরা। আগুন দেয়া হয়েছে আরও ৩টি সিএনজিচালিত অটোরিকশায়। হামলার প্রতিবাদে গতকাল বুধবার ভোর থেকে সকল রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে ভোলা বাস মালিক সমিতি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে হাজার হাজার যাত্রী। বিভিন্ন দূর-দূরান্ত থেকে এসে যাত্রীরা ফিরে যাচ্ছেন বাড়িতে। পুলিশ জানায়, বাস শ্রমিক ও সিএনজি চালকদের সংঘর্ষে দু’পক্ষের প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। এসময় সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে ভোলা সদর ও গুরুতরদের বরিশাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অপরদিকে বরিশালে ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাস শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বুধবার সকাল ৬টা থেকে ঝালকাঠিসহ বরিশাল বিভাগের সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে মালিক সমিতি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। তাদের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার বিকেলে হাফ ভাড়া নিয়ে ছাত্ররা বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এরপর তারা রূপাতলীর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় ও তাওহিদ পরিবহনসহ কয়েকটি বাস ভাঙচুর করেন। শ্রমিকরা জানান, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।
এদিকে গতকাল বুধবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে রাস্তা আটকে কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করার প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার গোলড়া গ্রামবাসী। পরে দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা অবরোধের পর ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। যান চলাচল বন্ধ থাকায় মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহনের দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে নিশ্চিত করেন গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুপল চন্দ দাস।
এছাড়াও সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ৩ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। গত মঙ্গলাবার সকালে উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের পুরান বাঁশতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
তবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে চুরি-ছিনতাইসহ প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। বিশেষ করে অপরাধ পরিস্থিতি ক্রমেই চলে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। বিগত সময়ের তুলনায় রাজধানীতে চুরি-ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা বেড়েছে। ছিনতাইয়ের কারণে রাজধানীতে রাতে ও ভোরে চলাচল করতে মানুষ ভয় পাচ্ছেন। ঘটছে চুরি ও ডাকাতির ঘটনা। পুলিশ ও ঢাকার আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ মাসে ছিনতাইকারীর হাতে নিহত হয়েছেন ১৬ জন। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনায় কত মামলা হয়েছে, তা নিজেদের ওয়েবসাইটে তুলে ধরেছে পুলিশ সদর দফতর। অনেক ক্ষেত্রে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ নিয়ে যান না। ফলে শুধু মামলার পরিসংখ্যান দিয়ে অপরাধের প্রকৃত চিত্র উঠে আসে না। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল কার্যক্রম বাড়িয়ে ছিনতাই শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
সূত্র জানায়, ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছরই ছিনতাই বেড়ে চলেছে। ২০১৯ সাল থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৪৭ হাজারের বেশি অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ২০১৯ সালে অভিযোগ ছিল ৬ হাজার ৮৮০টি, ২০২০ সালে ৭ হাজার ২০০, ২০২১ সালে ৮ হাজার ৪৯৮, ২০২২ সালে ৯ হাজার ৫৯১, ২০২৩ সালে ৯ হাজার ৪৭৫ এবং ২০২৪ আগস্ট পর্যন্ত ৫ হাজার ৮৮৩টি ঘটনা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকা মেট্রোপলিটন ও রেঞ্জ এলাকায় ১৫ হাজার ৪১৯টি অভিযোগ রয়েছে। তবে গত ১১ মাসে ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে ২০৮টি, চুরির ঘটনায় মামলা হয়েছে ১ হাজার ৪৩৭টি এবং খুনের ঘটনায় মামলা হয়েছে ৫১৪টি। অভিযোগ রয়েছে, চুরি ও ছিনতাইয়ের বেশির ভাগ ঘটনার মামলা নেয় না পুলিশ। ফলে প্রকৃত অপরাধের চিত্র সব সময় আড়ালেই থেকে যাচ্ছে।
পুলিশ সদর দফতরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত অপরাধ চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ডাকাতি ছিল ১৩৫টি, চুরি ৯০৪টি ও খুন ২৩৩ জন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দেখা গেল ডাকাতি ২৩০টি, চুরি ৯৬৬টি ও খুন ২০৪টি। পাশাপাশি বার্ষিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে ডাকাতির ঘটনা ছিল ১ হাজার ৫৪৬টি, চুরি ৩ হাজার ৯০টি ও খুন ৩ হাজার ২৩ জন। সেখানে ২০২৪ সালে এসে ডাকাতি হয়েছে ১ হাজার ৯০২টি, চুরি ১১ হাজার ৩১০টি এবং খুন ৩ হাজার ৪৩২ জন। অর্থাৎ ২০২৪ সালে আগের বছরের তুলনায় চুরি বেড়েছে ৮ হাজারেও বেশি। খুনও বেড়েছে ৪ শতাধিকের মতো।
ডিএমপি কমিশনার শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাত আলী জানান, ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ঘটনা পুলিশ ধৈর্য সহকারে মোকাবিলা করেছে। পুলিশ মারণাস্ত্র ব্যবহার করেনি। সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার সেল ব্যবহার করেছে। যে কারণে রক্তক্ষয়ী কোনও ঘটনা ঘটেনি।
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আমাদের প্রচেষ্টার কোনও ঘাটতি নেই। সার্বিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে, অপরাধের মাত্রা কমিয়ে আনতে পুলিশ কাজ করছে। কারও উসকানিতে কোনও ধরণের বিশৃঙ্খলা যেন সৃষ্টি না হয়। সে দিকেও আমরা সতর্ক রয়েছি। তবে এর মধ্যে আমরা ছিনতাই নিয়ে বেশি কাজ করছি। ছিনতাইয়ের ঘটনা যাতে আরও কমে যায় সে বিষয়ে সারা দেশের সব ইউনিটের দায়িত্বশীলদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অপরাধ বাড়ছে, নাকি কমছে এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টা পরিসংখ্যানভিত্তিক। ফলে পরিসংখ্যানই বলবে, বেড়েছে নাকি কমেছে।
* সংঘর্ষ বৃদ্ধি পাচ্ছে ঢাকার বাইরেও
* ঘটছে একাধিক গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনা
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঝে মধ্যেই সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গুলি, সাউণ্ড গ্রেনেড নিক্ষেপে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলেছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষে জড়িয়ে অনেকে আহত হচ্ছেন। আর এসব আন্দোলন ঘিরে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীবাসী। এসব কারণে তীব্র যানজট মুখোমুখি ও নিরাপত্তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে বাড়ছে উদ্বেগ। এছাড়াও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে চুরি-ছিনতাইসহ প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। বিশেষ করে অপরাধ পরিস্থিতি ক্রমেই চলে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। বিগত সময়ের তুলনায় রাজধানীতে চুরি-ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা অনেক বেড়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার পরিবর্তনের পর থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল কমে যাওয়ায় অপরাধীরা বেশি সক্রিয় হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাতের বেলায় বের হয়ে জীবনও যাচ্ছে।
জানা গেছে, গত ২৫ জানুয়ারি দুপুরে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের ঘোষণাসহ ছয় দফা দাবিতে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেয় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট। অবস্থান কর্মসূচি থেকে স্মারকলিপি দেয়ার উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে শাহবাগে মোড়ে লাঠিপেটা করে পুলিশ। পাশাপাশি জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। এসময় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যার পর স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরুদ্ধ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। শুধু সায়েন্সল্যাবই নয় এসময় পুরান ঢাকার তাঁতিবাজার ও মিরপুর টেকনিক্যাল মোড়ও অবরোধ করে তারা। এতে চতুর্মুখী সড়কে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। চরম ভোগান্তিতে পড়তে দেখা যায় রাজধানীতে চলাচল করা নানান শ্রেণি-পেশার মানুষদের। আর এ ঘটনা থেকেই ঢাকা কলেজসহ সাত কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মধ্যরাত পর্যন্ত চলা এই ঘটনা উভয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সাংবাদিক ও কয়েকজন পথচারীসহ অনেকে আহত হয়েছেন।
গত ২৪ জানুয়ারি দশম গ্রেড বেতন স্কেলের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। গত শুক্রবার দুপুরের পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে পদযাত্রা শুরু করেন তারা। শাহবাগ থানার সামনে এলে পদযাত্রাটিতে বাধা দেয় পুলিশ। সর্বশেষ গত সোমবার মধ্যে রাত থেকে রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। এই কর্মবিরতির কারণে ট্রেন না ছাড়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে যাত্রীরা গত মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী রেলস্টেশনে ভাঙচুর চালান। স্টেশনে যাত্রীদের বসার জন্য থাকা চেয়ারগুলো ভাঙচুর করেন। রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে গত মঙ্গলবার ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় কমলাপুর রেল স্টেশনের এক কোটি ২০ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্টেশন ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন।
গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সাওঘাট এলাকায় একটি পাইকারি আড়তের দখল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। এসময় গুলিবর্ষণ ও ১১টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগসহ বাড়ি ও অফিস ভাঙচুর করা হয়। মজিবুরের লোকজন সেলিম প্রধানের অফিসের সামনে দিয়ে গেলে সেলিমের লোকজন তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপসহ গুলিবর্ষণ করে। এক পর্যায়ে দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে স্বপন, রাজু, আলামিন, বাবু, রফিক ও সাগর নামে ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হন। এ সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মেহেদী ইসলাম বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে শুনেছি। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এছাড়াও গত মঙ্গলবার রাতে সিএনজি রাখা ও বাস মালিক সমিতির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ভোলায় বাস শ্রমিক ও সিএনজি শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের সময় ৫টি সিএনজি ও ১টি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে কমপক্ষে ৩০টি সিএনজি। এ সময় সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। এরমধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গতকাল বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো ভোলা বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাসস্ট্যান্ডের জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বাস শ্রমিক ও সিএনজি চালকরা। আগুন দেয়া হয়েছে আরও ৩টি সিএনজিচালিত অটোরিকশায়। হামলার প্রতিবাদে গতকাল বুধবার ভোর থেকে সকল রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে ভোলা বাস মালিক সমিতি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে হাজার হাজার যাত্রী। বিভিন্ন দূর-দূরান্ত থেকে এসে যাত্রীরা ফিরে যাচ্ছেন বাড়িতে। পুলিশ জানায়, বাস শ্রমিক ও সিএনজি চালকদের সংঘর্ষে দু’পক্ষের প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। এসময় সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে ভোলা সদর ও গুরুতরদের বরিশাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অপরদিকে বরিশালে ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাস শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বুধবার সকাল ৬টা থেকে ঝালকাঠিসহ বরিশাল বিভাগের সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে মালিক সমিতি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। তাদের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার বিকেলে হাফ ভাড়া নিয়ে ছাত্ররা বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এরপর তারা রূপাতলীর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় ও তাওহিদ পরিবহনসহ কয়েকটি বাস ভাঙচুর করেন। শ্রমিকরা জানান, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।
এদিকে গতকাল বুধবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে রাস্তা আটকে কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করার প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার গোলড়া গ্রামবাসী। পরে দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা অবরোধের পর ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। যান চলাচল বন্ধ থাকায় মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহনের দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে নিশ্চিত করেন গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুপল চন্দ দাস।
এছাড়াও সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ৩ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। গত মঙ্গলাবার সকালে উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের পুরান বাঁশতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
তবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে চুরি-ছিনতাইসহ প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। বিশেষ করে অপরাধ পরিস্থিতি ক্রমেই চলে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। বিগত সময়ের তুলনায় রাজধানীতে চুরি-ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা বেড়েছে। ছিনতাইয়ের কারণে রাজধানীতে রাতে ও ভোরে চলাচল করতে মানুষ ভয় পাচ্ছেন। ঘটছে চুরি ও ডাকাতির ঘটনা। পুলিশ ও ঢাকার আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ মাসে ছিনতাইকারীর হাতে নিহত হয়েছেন ১৬ জন। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনায় কত মামলা হয়েছে, তা নিজেদের ওয়েবসাইটে তুলে ধরেছে পুলিশ সদর দফতর। অনেক ক্ষেত্রে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ নিয়ে যান না। ফলে শুধু মামলার পরিসংখ্যান দিয়ে অপরাধের প্রকৃত চিত্র উঠে আসে না। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল কার্যক্রম বাড়িয়ে ছিনতাই শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
সূত্র জানায়, ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছরই ছিনতাই বেড়ে চলেছে। ২০১৯ সাল থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৪৭ হাজারের বেশি অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ২০১৯ সালে অভিযোগ ছিল ৬ হাজার ৮৮০টি, ২০২০ সালে ৭ হাজার ২০০, ২০২১ সালে ৮ হাজার ৪৯৮, ২০২২ সালে ৯ হাজার ৫৯১, ২০২৩ সালে ৯ হাজার ৪৭৫ এবং ২০২৪ আগস্ট পর্যন্ত ৫ হাজার ৮৮৩টি ঘটনা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকা মেট্রোপলিটন ও রেঞ্জ এলাকায় ১৫ হাজার ৪১৯টি অভিযোগ রয়েছে। তবে গত ১১ মাসে ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে ২০৮টি, চুরির ঘটনায় মামলা হয়েছে ১ হাজার ৪৩৭টি এবং খুনের ঘটনায় মামলা হয়েছে ৫১৪টি। অভিযোগ রয়েছে, চুরি ও ছিনতাইয়ের বেশির ভাগ ঘটনার মামলা নেয় না পুলিশ। ফলে প্রকৃত অপরাধের চিত্র সব সময় আড়ালেই থেকে যাচ্ছে।
পুলিশ সদর দফতরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত অপরাধ চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ডাকাতি ছিল ১৩৫টি, চুরি ৯০৪টি ও খুন ২৩৩ জন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দেখা গেল ডাকাতি ২৩০টি, চুরি ৯৬৬টি ও খুন ২০৪টি। পাশাপাশি বার্ষিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে ডাকাতির ঘটনা ছিল ১ হাজার ৫৪৬টি, চুরি ৩ হাজার ৯০টি ও খুন ৩ হাজার ২৩ জন। সেখানে ২০২৪ সালে এসে ডাকাতি হয়েছে ১ হাজার ৯০২টি, চুরি ১১ হাজার ৩১০টি এবং খুন ৩ হাজার ৪৩২ জন। অর্থাৎ ২০২৪ সালে আগের বছরের তুলনায় চুরি বেড়েছে ৮ হাজারেও বেশি। খুনও বেড়েছে ৪ শতাধিকের মতো।
ডিএমপি কমিশনার শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাত আলী জানান, ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ঘটনা পুলিশ ধৈর্য সহকারে মোকাবিলা করেছে। পুলিশ মারণাস্ত্র ব্যবহার করেনি। সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার সেল ব্যবহার করেছে। যে কারণে রক্তক্ষয়ী কোনও ঘটনা ঘটেনি।
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আমাদের প্রচেষ্টার কোনও ঘাটতি নেই। সার্বিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে, অপরাধের মাত্রা কমিয়ে আনতে পুলিশ কাজ করছে। কারও উসকানিতে কোনও ধরণের বিশৃঙ্খলা যেন সৃষ্টি না হয়। সে দিকেও আমরা সতর্ক রয়েছি। তবে এর মধ্যে আমরা ছিনতাই নিয়ে বেশি কাজ করছি। ছিনতাইয়ের ঘটনা যাতে আরও কমে যায় সে বিষয়ে সারা দেশের সব ইউনিটের দায়িত্বশীলদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অপরাধ বাড়ছে, নাকি কমছে এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টা পরিসংখ্যানভিত্তিক। ফলে পরিসংখ্যানই বলবে, বেড়েছে নাকি কমেছে।