
সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের অশোভন আচরণের অভিযোগে রাজধানীর দুটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার সন্ধ্যা থেকে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় ও টেকনিক্যাল মোড়ে অবস্থান নেন তারা। ফলে গুরুত্বপূর্ণ দুটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে সায়েন্সল্যাব, নীলক্ষেত মোড় ও এলিফ্যান্ট রোডসহ আশপাশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজ সংলগ্ন মিরপুর সড়কে অবস্থান করছিল। আশপাশে সব সড়কে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট।
জানা গেছে, সাত কলেজের ভর্তির আসন কমানোসহ ৫ দফা দাবি নিয়ে রোববার বিকেলে শতাধিক শিক্ষার্থী আলোচনা করতে ঢাবির প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের কার্যালয়ের সামনে যান। এসময় অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ দুই-তিনজন প্রতিনিধিকে তার কার্যালয়ে এসে কথা বলতে অনুরোধ করেন। তবে তার অনুরোধ না রেখেই সবাই কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করেন। এসময় ‘মব’ সৃষ্টি হলে ড. মামুন আহমেদ তাদের সঙ্গে আর কথা বলেননি। পরে এর প্রতিক্রিয়ায় সেখান থেকে তারা বেরিয়ে অবরোধ শুরু করেন বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল আমার কার্যালয়ে এসে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলতে আসলে আমি দুই-তিনজন প্রতিনিধিকে আসতে বলি। তখন আমার অনুরোধ না রেখেই সবাই কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করেন এবং সেসময় এক ধরনের মব ক্রিয়েটিং হয়। এজন্য আমি আর কথা বলেনি এবং পরে তারা চলে যায়। তবে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আফজাল হোসেন দাবি করে বলেন, আমরা পাঁচ দফা দাবি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসির কাছে গেলে তারা আমাদেরকে অপমান করে বের করে দেয়। এখন শিক্ষার্থীদের নিকট ক্ষমা চাওয়া সহ সবগুলো দাবি রাতের মধ্যে মেনে নিতে হবে। না মানলে রাস্তা ছাড়ব না।
শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ : ২০২৪-২৫ সেশন থেকেই সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। সাত কলেজের শ্রেণিকক্ষের ধারণক্ষমতার বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো যাবে না। শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হবে। সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায়-নেগেটিভ মার্ক যুক্ত করতে হবে। সাত কলেজের ভর্তি ফির স্বচ্ছতা নিশ্চিতে মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাবি ছাড়া নতুন একটি অ্যাকাউন্টে ভর্তি ফির টাকা জমা রাখতে হবে।
এরআগে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, সাত কলেজের সমস্যা ও ভর্তির আসন সংখ্যা কমানোর বিষয়ে ঢাবি প্রোভিসির (শিক্ষা) কাছে গেলে তিনি অশোভন আচরণ করে রুম থেকে বের করে দেন। তিনি বলেন, সাত কলেজের বিষয়ে কিছু জানেন না। তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, এ বিষয়ে ২১ দিন আগে তাকে স্মারকলিপি দেয়া হলেও সেটি পড়েননি। সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের চেনেন না বলেই তিনি আক্রমণমূলক ব্যবহার করেছেন। তাই তার অশোভন আচরণের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়েছে। এসময় শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আব্দুর রহমান অশোভন আচরণের জন্য ঢাবি প্রোভিসিকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ৫ দফা দাবির কথা জানান।