
বন্ধ করে দেয়া বাংলা দৈনিক ‘ভোরের কাগজ’ খুলে দেয়াসহ বকেয়া পরিশোধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সংবাদমাধ্যমটির কর্মীরা। গতকাল রোববার দুপুরে ঢাকার সার্কিট হাউস রোডে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) সামনে মানববন্ধন করে এ দাবি জানান তারা। গত ২০ জানুয়ারি এক নোটিস টানিয়ে ৩৩ বছরের পুরনো এই সংবাদপত্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নোটিসে বলা হয়, “ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা চলতি বছরের ২০২৫ সালেল ২০ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।” পরদিন গত মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন দাবি মেনে নিতে মালিকপক্ষকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন। অন্যথায় মালিক পক্ষের অফিস ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। সে অনুয়ায়ী গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কাকরাইলে কর্ণফুলী গ্রুপের প্রধান কার্যালয় এইচআর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা। ‘ভোরের কাগজ’ কর্ণফুলী গ্রুপের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। সেদিন ভোরের কাগজ খুলে দেওয়া না হলে পত্রিকার মালিক সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীকে তার অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্য ‘গুটিয়ে ফেলতে হবে’ বলেও সতর্ক করেন বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা। প্রতিষ্ঠানটি খুলে দেওয়া ও বকেয়া পরিশোধের দাবিতে সংবাদকর্মীদের নানা কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার হয় মানববন্ধন। ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন বলেন, “মানববন্ধনের পরে আমরা ডিএফপি ডিজির সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দিয়েছি। তিনি স্মারকলিপি গ্রহণ করেছেন এবং তার জায়গা থেকে চেষ্টা করার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন।” কার্যালয় বন্ধ করে দিয়ে ডিএফপির সুবিধা পেতে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড প্রেসে’ পত্রিকাটির অল্পকিছু সংখ্যা ছাপা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “এটা ডিএফপির আইন পরিপন্থি। এছাড়া অষ্টম ‘ওয়েজ বোর্ড’ বাস্তবায়ন করেছে- এমন ঘোষণা দিয়ে ভোরের কাগজ সরকারের কাছ থেকে ৯০০ টাকা কলাম ইঞ্চি বিজ্ঞাপনসহ সব সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। “অথচ সাংবাদিক-কর্মচারীদের ওয়েজ বোর্ডের বেতন স্কেলের সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছেন। ডিএফপি এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে।”মানববন্ধনের পর ডিএফপির সামনে থেকে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা মগবাজারের ওয়ারলেস এলাকায় পত্রিকাটির বার্তা সম্পাদক ইখতিয়ার উদ্দিনের বাসার সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন। এদিনের কর্মসূচিতে পত্রিকাটির যুগ্ম বার্তা সম্পাদক মুকুল শাহরিয়ার, সম্পাদকীয় বিভাগের ইনচার্জ সালেক নাসির উদ্দিন, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক হুমায়ুন হাশিম, সার্কুলেশন বিভাগের ইনচার্জ তসলিম চৌধুরী, বিজ্ঞাপন বিভাগের ডেস্ক নির্বাহী মো. আক্কাছ আলী, কম্পিউটার বিভাগের ইনচার্জ গোলাম কিবরিয়া, স্পোর্টস ইনচার্জ শামসুজ্জামান শামস, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক এস এম মিজান, আইটি বিভাগের ইনচার্জ মেহেদী হাসান ও সম্পাদনা সহকারি বিভাগের প্রধান মো. ইবরাহিম উপস্থিত ছিলেন।