নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় এক সাংবাদিককে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে মুখোশ পরা দুই ব্যক্তি। গত শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের রাহুতহাটি ছোট সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন নবাবগঞ্জ থানার ওসি মমিনুল ইসলাম। আহত নাজমুল হোসেন অন্তর দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার দোহার-নবাবগঞ্জ ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি। তিনি নয়নশ্রী ইউনিয়নের খানেপুর গ্রামের মো. মানিকের ছেলে। তাকে ঢাকার শের-এ-বাংলা নগরে জাতীয় অর্থোপেডিক (পঙ্গু) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। নাজমুলের বরাত দিয়ে তার প্রতিবেশী মো. সজল বলেন, রাতে নাজমুল দোহার থেকে নিজের মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিল। পথে মুখোশধারী দুই ব্যক্তি ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার গতিরোধ করে তার ওপর হামলা করে। এ সময় নাজমুল মোটরসাইকেল ফেলে দিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাকে ধাওয়া করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে এবং মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় নাজমুল ঘটনাস্থলের পাশের জাগরনী চক্র ফাউন্ডেশনের সামনে গিয়ে চিৎকার করলে সেখানে কর্মরতরা তাকে উদ্ধার করে। তারা নাজমুলকে প্রথমে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্বজনরা এসে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। সেখানে চিকিৎসক তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় অর্থোপেডিক (পঙ্গু) হাসপাতালে পাঠায়। জাগরণি চক্র ফাউন্ডেশনের সিনিয়র অফিসার মো. সাইমুন বলেন, রাতে নাজমুল রক্তাক্ত অবস্থায় এসে জানিয়েছিল তার উপর আক্রমণকারীরা দুইজন ছিল। তাদের মুখ ঢাকা ছিল। হাতে ছিল ধারালো অস্ত্র। নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হরোগবিন্দ সরকার বলেন, “নাজমুলের ডান হাত ও পায়ে ধারালো অস্ত্রের গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রচুর রক্তক্ষরণ ও অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে উন্নত চিকিসার জন্য রাতেই তাকে পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।” এদিকে আহতের ছোট ভাই নয়ন জানান, গতকাল রোববার সকালে তার ভাইয়ের মোটরসাইকেলটি নয়নশ্রী ইউনিয়নের দেওতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ইছামতি নদীর তীর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি অভিযোগ করেন, “হামলাকারীরা ডাকাত হলে মোটরসাইকেলটি তো ফেলে যেত না, তাই না। এতেই বুঝা যায় ঘটনাটি পরিকল্পিত। যারা আমার ভাইকে কুপিয়েছে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাদের উচিত বিচার দাবি করছি।”
নবাবগঞ্জ থানার ওসি মমিনুল বলেন, খবর পেয়ে গতকাল রোববার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ও স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নাজমুলের মোটরসাইকেলটি ইছামতির নদীর তীর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।” তিনি বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি সম্পর্কে যতোটুতু জানা গেছে তাতে পূর্ব শত্রুতার জেরে কেউ সাংবাদিকের উপর এ হামলা করেছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”