যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় দুপুরে (বাংলাদেশ সময় রাতে) তিনি নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হলো ট্রাম্প যুগ, সেই সাথে জো বাইডেন পরবর্তী বিশ্ব ব্যবস্থায় শুরু হতে চলেছে নতুন অধ্যায়। শপথ অনুষ্ঠানে বিশ্বের প্রায় সব দেশ থেকেই প্রতিনিধিরা যোগ দেন।
এর আগে গতবছরের ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবারও বিজয়ী হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এর মাধ্যমে দেশটির প্রায় আড়াইশো বছরের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে এক মেয়াদের বিরতিতে দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে ফিরলেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। অবশ্য গতবছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জিতলেও ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন গতকাল সোমবার। তবে এর আগেই নিজের প্রশাসন অনেকটাই সাজিয়ে নিয়েছেন তিনি। মূলত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ ছিল আগাগোড়া বিতর্কে পূর্ণ। ফলে দ্বিতীয় মেয়াদে তার নেতৃত্বে আগামী চার বছর যুক্তরাষ্ট্র ঠিক কোন পথে চলবে, তা জানতে উৎসুক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও। এছাড়া আমেরিকার ইতিহাসে তিনিই প্রথম কোনও সাবেক প্রেসিডেন্ট, যাকে ৩৪ দফা ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেছিল নিউইয়র্কের আদালত। অবশ্য গত রোববার থেকেই ওয়াশিংটনে শুরু হয়েছে শপথগ্রহণ সংক্রান্ত নানা অনুষ্ঠান। আর তার আগেই রাজধানী ওয়াশিংটনে ট্রাম্প-বিরোধী বিক্ষোভ করেছে বহু মানুষ। এদিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর পরই ট্রাম্প বেশ কয়েকটি বড় বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবেন। গতবছর ভোটের আগে নির্বাচনী প্রচাণায় দেশবাসীকে নানা প্রতিশ্রুতি দিতেও দেখা গেছে তাকে। তবে ওভাল অফিসের দায়িত্ব হাতে পাওয়ার পরে সেগুলো কতটা তিনি বাস্তবায়িত করতে পারেন, সে দিকেই এখন থাকবে সবার নজর। কঠোর অভিবাসী নীতি থেকে শুরু করে গর্ভপাত-বিরোধী কঠোর আইনের পক্ষেই এতোদিন নিজের অবস্থান জানান দিয়েছেন ট্রাম্প। ক্ষমতায় ফিরলে রেকর্ড সংখ্যক অবৈধ অভিবাসীকে তিনি তাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠাবেন বলেও নির্বাচনী প্রচারণায় দেশের মানুষকে আশ্বাস দিয়েছেন। আর তাই ক্ষমতায় ফিরে অভিবাসী নীতি নিয়ে ট্রাম্প নতুন কী করেন, সেদিকে নজর থাকবে সবার। একইসঙ্গে ট্রাম্পের গর্ভপাত-বিরোধী নীতি নিয়েও আশঙ্কিত যুক্তরাষ্ট্রের নারীদের একটা বড় অংশ।
অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেয়ার আগে ট্রাম্প গত রোববার ওয়াশিংটনে সমর্থকদের নিয়ে বিজয়োৎসব পালন করেন। সেখানে তিনি বলেন, প্রথম দিন থেকেই তিনি ঐতিহাসিক গতি ও শক্তি নিয়ে কাজ করবেন। ট্রাম্প তার সমর্থকদের বলেন, তিনি সীমান্তে অভিবাসীদের অনুপ্রবেশ পুরোপুরি থামিয়ে দেবেন। ভেনেজুয়েলা থেকে বিপুল সংখ্যক অভিবাসী আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ভেনেজুয়েলার অপরাধী গ্যাংয়ের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেবেন।