বকেয়া বেতনসহ অন্যান্য পাওনা পরিশোধের দাবিতে গাজীপুরের ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছেন। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তায় দুই শতাধিক শ্রমিক সড়কে অবস্থান নিয়ে তাদের সাত মাসের বকেয়া বেতনসহ অন্যান্য পাওনা পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। তবে মহাসড়কের এক পাশে বিক্ষোভ করায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। ভুক্তভোগী শ্রমিকরা বলেন, আমাদের অনেক সহকর্মী ২০০৬ সাল থেকে এবং তারও আগে থেকে এ কারখানায় চাকরি করছেন। গত সাত মাস ধরে বকেয়া বেতনসহ প্রভিডেন্ট ফান্ড, সার্ভিস বেনিফিটের টাকা পাইনি। অনেক সহকর্মীর কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা পাওনাও রয়েছে। আমাদের বেতনসহ অন্যান্য পাওনা সাত মাস ধরে আটকে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। বেতন না পাওয়ায় আমাদের মানবেতর জীবন পার করতে হচ্ছে। বারবার মালিকপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েও আমাদের বেতন পরিশোধ করছে না। যত দ্রুত সম্ভব তাদের বকেয়া পরিশোধের দাবি জানান তারা। বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের গাজীপুর মহানগর সভাপতি শফিউল আলম বলেন, এক বছর আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেড শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও অন্যান্য পাওনা , সার্ভিস বেনিফিট, প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা, নারী শ্রমিকদের প্রসূতিকালীন সময়ের টাকা এখনও পরিশোধ করেনি মালিকপক্ষ। শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে সরকার ইতোমধ্যে মালিককে সুদমুক্ত ১৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য, ঋণ পাওয়ার একমাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত সব শ্রমিক ও স্টাফদের মাঝে ঋণের টাকা বিতরণ করেননি মালিক। যার ফলে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। ঋণের ১৩ কোটি টাকা পরিশোধ করার পরেও অবশিষ্ট ১৪ কোটির টাকার বেশি অর্থ বকেয়া থাকবে শ্রমিক-কর্মচারীদের। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দফতরে ধরনা দিয়ে কোনও কাজ হচ্ছে না। শফিউল আলম আরও বলেন, গত ২২ নভেম্বর ২০২৩ কারখানাটি স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করেন মালিকপক্ষ। বন্ধ হওয়ার দিন পর্যন্ত প্রায় আট হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত ছিলেন। শ্রমিকদের কর্মকালের কয়েক মাসের বেতন এবং বন্ধকালের আইনানুগ পাওনাদি পরিশোধ সংক্রান্ত বিষয়ে গত ২৮ নভেম্বর ২০২৩ শ্রম আইনের সুবিধা থেকে কমিয়ে এনে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তি সই হয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী সরকার থেকে পাওনা ঋণের ১৩ কোটি টাকা পরিশোধ করার কথা রয়েছে। এর পরেও ১৪ কোটি টাকা পাওনা থাকবেন শ্রমিকরা। গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল লতিফ জানান, গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তায় বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। এ বিষয়ে ডার্ড গ্রুপের চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার ফয়েজ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই শ্রমিকদের আট ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেছি। একসঙ্গে সব টাকা পরিশোধ করা যায় না। বাকি টাকা অবশ্যই পরিশোধ করে দেবো।