জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবীর মৃত্যুতে দেশের আইন অঙ্গনের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, বলেন মাহবুব উদ্দিন খোকন
আইনজীবী হিসেবে অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে যেখানে জীবন কেটেছে, সেই সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এএফ হাসান আরিফকে বিদায় জানানো হলো শ্রদ্ধা-ভালোবাসায়।
গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে তার কফিনে শ্রদ্ধা জানান আইন পেশার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হাসান আরিফের দ্বিতীয় জানাজা সেখানেই অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ, সদ্য অবসপ্রাপ্ত আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মো. জিয়াউল করিম, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, বারের সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ বিপুল সংখ্যক বিচারক ও আইনজীবী জানাজায় উপস্থিত ছিলেন।
হাসান আরিফের অবদান স্মরণ করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন জানাজার আগে বলেন, জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবীর মৃত্যুতে দেশের আইন অঙ্গনের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
তীব্র গণ আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারে মন্ত্রী মর্যাদায় উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন হাসান আরিফ।
১৯৪১ সালের ১০ জুলাই কলকাতায় তার জন্ম। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি করেন।
১৯৬৭ সালে কলকাতা হাই কোর্টে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর তিনি সে সময়ের পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা হাই কোর্টে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ এ আইনজীবী ছিলেন ‘এএফ হাসান আরিফ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’ চেম্বারের প্রধান।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে ১৯৮২ সালের এপ্রিল থেকে ১৯৮৫ সালের অগাস্ট পর্যন্ত তিনি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন।
পরে ১৯৮৫ সালের অগাস্ট থেকে ১৯৯৬ সালের মার্চ পর্যন্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবং বিএনপি জামায়াত-জোট সরকারের আমলে ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন।
হাসান আরিফ ২০০৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন।
বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের একজন প্যানেল সদস্য ছিলেন তিনি।
এর আগে শুক্রবার রাতে হাসান আরিফের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর ধানমন্ডি সাত নম্বর বায়তুল আমান মসজিদে।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে রাজধানী ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা যান হাসান আরিফ।