* জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের খসড়া প্রস্তাব ঘিরে উত্তাল প্রশাসন * খসড়া সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা * জনপ্রশাসন সংস্কারে ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তারাও * জনপ্রশাসন সংস্কার নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ডিসিরা
\
প্রশাসনে আবার শুরু হয়েছে অস্থিরতা। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে নতুন করে এ অস্থিতরা শুরু হয় প্রশাসনের সর্বস্তরের কর্মকর্তার মধ্যে। ইতোমধ্যে নানাভাবে প্রতিবাদ করছেন তারা। প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বাসা) এবং দেশের সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিভিন্ন ব্যাচ থেকেও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত এ অস্থিরতার প্রশমন না করলে এবং অস্থিরতা চলমান থাকলে সরকারের সবকিছুই ঝুঁকিতে পড়ে যাবে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও সাবেক কর্মকর্তাদের। এরআগে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার একদফা আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর পর আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর হিসেবে চিহ্নিত প্রশাসনের বর্তমান ও সাবেক প্রভাবশালী অনেকেই আত্মগোপনে এবং দেশত্যাগ করেন। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর একে একে বিদায় নিয়েছেন অনেকে। আবার বাধ্যতামূলকভাবেও অনেককে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। একইসঙ্গে দেয়া হয়েছে অনেককে প্রমোশন। এতে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে একধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। তবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে বর্তমান জনপ্রশাসন ঢেলে সাজাতে সুন্দর গঠনমূলক প্রস্তাব দেয়ার জন্য। এ কমিশন বিতর্ক ও ক্ষোভ তৈরি করেছে। কমিশন সরকারে উপসচিব ও যুগ্মসচিব হওয়ার জন্য পরীক্ষা দেয়ার পাশাপাশি উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ও অন্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের অনুপাত ৫০ ঃ ৫০ করার প্রস্তাব করতে যাচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডার নিয়ে পৃথক সংস্থা গঠনের প্রস্তাব করার উদ্যোগ নিচ্ছে এমন খবরে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ প্রশাসনসহ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তারাও। কমিশনকে খসড়া প্রস্তাব থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
গত ১৭ ডিসেম্বর সচিবালয় বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। ওই সভায় জনপ্রশাসন সংস্কার এ খসড়া প্রস্তাবের কথা তুলে ধরার পরই শুরু হয় নানা রকম সমালোচনা। বিভিন্ন ব্যাচের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গ্রুপে ওঠে সমালোচনার ঝড়। জরুরি বৈঠক করে প্রতিবাদ জানায় বাসা। খসড়া সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তারাও।
‘জনপ্রশাসন সংস্কার’ কমিশনের খসড়া প্রস্তাব ঘিরে উত্তাল প্রশাসন: জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের খসড়া প্রস্তাব ঘিরে প্রশাসন উত্তাল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে প্রশাসনের প্রভাবশালী প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন। কমিশনকে খসড়া প্রস্তাব থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, পরীক্ষা ছাড়া সিভিল সার্ভিসের উপসচিব এবং যুগ্ম-সচিব পর্যায়ে কেউ পদোন্নতি পাবেন না বলে সুপারিশ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের জন্য ৫০ এবং অন্য ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কর্মকর্তাদের নেয়ার সুপারিশ দেয়া হচ্ছে। এখন এক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা ৭৫ এবং অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা ২৫ শতাংশ পদোন্নতি পেয়ে থাকেন। এছাড়া জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের মতো স্বাস্থ্য ও শিক্ষাকে ক্যাডার সার্ভিস থেকে আলাদা করার জন্য সরকারকে সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। একই সঙ্গে অন্যান্য ক্যাডারগুলোকে নিয়ে পাঁচটি গুচ্ছ করারও সুপারিশ দেবে কমিশন। কমিশনের এ খসড়া সুপারিশের খবর প্রচারিত হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে প্রশাসন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। তারা এর প্রতিবাদ জানিয়ে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার দাবি জানিয়েছেন। গত ৩ অক্টোবর আট সদস্যের জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ কমিশনের প্রধান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন ব্যবস্থা করে তুলতে এ কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়। কমিশন ৯০ দিনের (৩ মাস) মধ্যে প্রস্তুত করা প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবে।
ক্ষুব্ধ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা : গত ১৯ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের পত্রিকায় পরিবেশিত সংবাদের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদন সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিএএসএ)। এতে বলা হয়, উপসচিব পদোন্নতি প্রত্যাশী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মতামত জরিপ কিংবা সমীক্ষার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে পর্যাপ্ত বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি করা হয়নি বলে জানা যায়। ফলে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে মাঠ প্রশাসনসহ সব স্তরে কর্মরত বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন কমিশন প্রধানের এই বক্তব্যের এবং প্রতিবাদসহ প্রতিবেদনটি সংশোধনের আহ্বান জানাচ্ছে। বিএএসএ জানায়, আমরা অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে রাষ্ট্রের কল্যাণের স্বার্থে মনে করি বিভিন্ন কারণে উপসচিব/যুগ্মসচিব/অতিরিক্ত সচিব/সচিব পদে শতভাগ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন হওয়া উচিত।
জনপ্রশাসন সংস্কার নিয়ে ডিসিদের প্রতিবাদ : গত বুধবার উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারদের কোটা কমাতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের খসড়া প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের সব জেলার জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)। মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের দফতরে গত বুধবার এ সংক্রান্ত প্রতিবাদলিপি জমা দিয়েছেন তারা। ডিসিদের প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংস্কার কমিশন যে ধরনের সুপারিশ করার চিন্তা করছে, তা বাস্তবতা বিবর্জিত। এ ধরনের উদ্যোগ কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে মীমাংসিত একটি বিষয় নিয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের আনুষ্ঠানিক লিখিত প্রতিবেদন সরকারের নিকট জমা দেয়ার আগেই আকস্মিকভাবে এ ধরনের ঘোষণা অনভিপ্রেত, আপত্তিকর ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে দুর্বল করার শামিল’ বলেও এতে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবাদ লিপিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রে প্রশাসন ক্যাডারের কার্যপরিধির সঙ্গে নীতি-নির্ধারণের নিবিড় সম্পর্ক। প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে অন্য ক্যাডারের বড় পার্থক্য হলো, প্রশাসন ক্যাডারের কাজের ধরণ সামগ্রিক বিষয়কে ধারণ করে। যেখানে অন্যান্য ক্যাডারের কাজের ধরন বিশেষায়িত।
খসড়া সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা : বিসিএস সাধারণ শিক্ষাকে ক্যাডার বহির্ভূত করার খসড়া সুপারিশ প্রত্যাখান করে প্রতিবাদলিপি দিয়েছেন বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন। এতে বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার ও বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারকে কাঠামোর বাইরে রাখার সুপারিশ করতে যাচ্ছে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ১৬ হাজার সদস্যের একক মুখপাত্র বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন এই সুপারিশ সর্বোতভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। ২০১২ সালে অনুরূপ একটি প্রচেষ্টা আমরা প্রতিহত করেছি। বিষয়টি মীমাংসিত। সংস্কারের মাধ্যমে সব বৈষম্য নিরসন ও গতিশীল জনবান্ধব জনপ্রশাসন তৈরির লক্ষ্যে গঠিত কমিশনের এ ধরনের সুপারিশ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বৈষম্যবিরোধী মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই এ সুপারিশ প্রত্যাহার করা না হলে কার্যকর প্রশাসনিক সংস্কার ব্যর্থ হবে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে কোনোরূপ আলোচনা না করে কমিশনের এমন প্রস্তাবনা তৈরি এবং গণমাধ্যমে একতরফাভাবে প্রচার করা সুবিবেচনা প্রসূত নয়।
বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন জানায়, শিক্ষাখাতে অস্থিরতা তৈরি করে সরকারকে অস্থিতিশীল করার এটি কোনো ষড়যন্ত্র কি না তা খতিয়ে দেখা উচিত। এরূপ সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষা কার্যক্রম, শিক্ষা প্রশাসন এবং সংস্কার কার্যক্রমে স্থবিরতা এলে বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন কোনোরূপ দায় নেবে না। ক্যাডার সংকোচন এবং শিক্ষাকে মেধাশূন্য করার এ অপচেষ্টার আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে এ প্রচেষ্টা বন্ধ করার জোরালো আহ্বান জানান তারা।
ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তারাও : জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবকে একতরফা আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন। ৩৫ হাজার সদস্যের এই সংগঠন। গত বুধবার সংগঠনটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ নেয়ামত হোসেন ও সদস্যসচিব উম্মে তানিয়া নাসরিন সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাস্থ্যের নীতি-নির্ধারণী পদগুলোতে পুরোপুরি অনভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের পদায়ন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যখাতকে বিজ্ঞানভিত্তিক ও যুগোপযোগী না করে বরং উল্টোপথে হেঁটে আমলাতান্ত্রিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা কায়েম করেছে। অথচ এসব পদে স্বাস্থ্য ক্যাডারের উপযুক্ত কর্মকর্তাদের পদায়ন করে বিজ্ঞানভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। কমিশন প্রকৃত সংস্কার বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যকে ক্যাডারবহির্ভূত করার যে হঠকারী সুপারিশ করেছে, তা মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন তৈরি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি হলে প্রশাসনিক সংস্কার ব্যর্থ হবে।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক সচিব এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, এসব কার্যক্রম বা বাড়তি কথার কারণে প্রশাসনে অস্থিরতা সরকারেরও ক্ষতির কারণ হবে। ইতোমধ্যে একটা ঝুঁকিতে কিন্তু পড়ে গেছে। সবাই প্রতিবাদ করছে। অতিকথনে অস্থিরতা বাড়ানো হচ্ছে কর্মকর্তাদের মধ্যে। এতে কর্মকর্তারাও কাজে মনোযোগ হারাচ্ছেন। এসব দ্রুতই সমাধান দরকার। এসব ক্যাডার ভাগাভাগি অন্য কোথাও নেই। কোটা যেহেতু উঠে গেছে, সুতরাং এ ভাগাভাগি আগে যতটুকু ছিল সেটাও উঠিয়ে দেয়া দরকার। তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে ফরেন সেক্রেটারি হয় অ্যাডমিন ক্যাডার থেকে। খসড়া প্রস্তাবের সমালোচনা করে ২৮ ব্যাচের এক কর্মকর্তা বলেন, সবার জন্য সব ক্যাডারে যাওয়া উন্মুক্ত করে দেয়া হোক তাহলে। আমরাও ফরেন বা ট্যাক্স ক্যাডারে যাব। ট্যাক্স ক্যাডার কর্মকর্তারা রাজস্ব আদায় করে বলে তারা বছরে কয়েক লাখ টানা ইনসেনটিভ পান। আমাদের এসি ল্যান্ডরা কি রাজস্ব আদায় করেন না? তাদের ইনসেনটিভও নেই। সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান বলেন, ক্যাডার ভাগাভাগি করা পৃথিবীর কোথাও নেই। কেউ পরীক্ষায় ভালো না করে সিরিয়ালে নিচের দিকের অন্য ক্যাডারে যোগ দিলেন। প্রথা অনুযায়ী তিনি কয়েক বছর পর ক্যাডার পরিবর্তন করে প্রথম সারির ক্যাডারে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করে থাকেন। এটাই তো বৈষম্য। রাষ্ট্রপতির কোটারও রাজনৈতিক ব্যবহার হয়েছে, এসবও রাখার দরকার নেই। নিয়োগের সময় যে যেই ক্যাডার পাবে পরবর্তীকালে সে ওই ক্যাডারে যে পদে থাকবে যোগ্যতা অনুসারে পদোন্নতি পাবে।
\
প্রশাসনে আবার শুরু হয়েছে অস্থিরতা। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে নতুন করে এ অস্থিতরা শুরু হয় প্রশাসনের সর্বস্তরের কর্মকর্তার মধ্যে। ইতোমধ্যে নানাভাবে প্রতিবাদ করছেন তারা। প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বাসা) এবং দেশের সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিভিন্ন ব্যাচ থেকেও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত এ অস্থিরতার প্রশমন না করলে এবং অস্থিরতা চলমান থাকলে সরকারের সবকিছুই ঝুঁকিতে পড়ে যাবে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও সাবেক কর্মকর্তাদের। এরআগে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার একদফা আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর পর আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর হিসেবে চিহ্নিত প্রশাসনের বর্তমান ও সাবেক প্রভাবশালী অনেকেই আত্মগোপনে এবং দেশত্যাগ করেন। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর একে একে বিদায় নিয়েছেন অনেকে। আবার বাধ্যতামূলকভাবেও অনেককে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। একইসঙ্গে দেয়া হয়েছে অনেককে প্রমোশন। এতে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে একধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। তবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে বর্তমান জনপ্রশাসন ঢেলে সাজাতে সুন্দর গঠনমূলক প্রস্তাব দেয়ার জন্য। এ কমিশন বিতর্ক ও ক্ষোভ তৈরি করেছে। কমিশন সরকারে উপসচিব ও যুগ্মসচিব হওয়ার জন্য পরীক্ষা দেয়ার পাশাপাশি উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ও অন্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের অনুপাত ৫০ ঃ ৫০ করার প্রস্তাব করতে যাচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডার নিয়ে পৃথক সংস্থা গঠনের প্রস্তাব করার উদ্যোগ নিচ্ছে এমন খবরে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ প্রশাসনসহ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তারাও। কমিশনকে খসড়া প্রস্তাব থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
গত ১৭ ডিসেম্বর সচিবালয় বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। ওই সভায় জনপ্রশাসন সংস্কার এ খসড়া প্রস্তাবের কথা তুলে ধরার পরই শুরু হয় নানা রকম সমালোচনা। বিভিন্ন ব্যাচের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গ্রুপে ওঠে সমালোচনার ঝড়। জরুরি বৈঠক করে প্রতিবাদ জানায় বাসা। খসড়া সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তারাও।
‘জনপ্রশাসন সংস্কার’ কমিশনের খসড়া প্রস্তাব ঘিরে উত্তাল প্রশাসন: জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের খসড়া প্রস্তাব ঘিরে প্রশাসন উত্তাল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে প্রশাসনের প্রভাবশালী প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন। কমিশনকে খসড়া প্রস্তাব থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, পরীক্ষা ছাড়া সিভিল সার্ভিসের উপসচিব এবং যুগ্ম-সচিব পর্যায়ে কেউ পদোন্নতি পাবেন না বলে সুপারিশ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের জন্য ৫০ এবং অন্য ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কর্মকর্তাদের নেয়ার সুপারিশ দেয়া হচ্ছে। এখন এক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা ৭৫ এবং অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা ২৫ শতাংশ পদোন্নতি পেয়ে থাকেন। এছাড়া জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের মতো স্বাস্থ্য ও শিক্ষাকে ক্যাডার সার্ভিস থেকে আলাদা করার জন্য সরকারকে সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। একই সঙ্গে অন্যান্য ক্যাডারগুলোকে নিয়ে পাঁচটি গুচ্ছ করারও সুপারিশ দেবে কমিশন। কমিশনের এ খসড়া সুপারিশের খবর প্রচারিত হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে প্রশাসন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। তারা এর প্রতিবাদ জানিয়ে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার দাবি জানিয়েছেন। গত ৩ অক্টোবর আট সদস্যের জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ কমিশনের প্রধান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন ব্যবস্থা করে তুলতে এ কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়। কমিশন ৯০ দিনের (৩ মাস) মধ্যে প্রস্তুত করা প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবে।
ক্ষুব্ধ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা : গত ১৯ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের পত্রিকায় পরিবেশিত সংবাদের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদন সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিএএসএ)। এতে বলা হয়, উপসচিব পদোন্নতি প্রত্যাশী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মতামত জরিপ কিংবা সমীক্ষার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে পর্যাপ্ত বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি করা হয়নি বলে জানা যায়। ফলে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে মাঠ প্রশাসনসহ সব স্তরে কর্মরত বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন কমিশন প্রধানের এই বক্তব্যের এবং প্রতিবাদসহ প্রতিবেদনটি সংশোধনের আহ্বান জানাচ্ছে। বিএএসএ জানায়, আমরা অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে রাষ্ট্রের কল্যাণের স্বার্থে মনে করি বিভিন্ন কারণে উপসচিব/যুগ্মসচিব/অতিরিক্ত সচিব/সচিব পদে শতভাগ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন হওয়া উচিত।
জনপ্রশাসন সংস্কার নিয়ে ডিসিদের প্রতিবাদ : গত বুধবার উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারদের কোটা কমাতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের খসড়া প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের সব জেলার জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)। মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের দফতরে গত বুধবার এ সংক্রান্ত প্রতিবাদলিপি জমা দিয়েছেন তারা। ডিসিদের প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংস্কার কমিশন যে ধরনের সুপারিশ করার চিন্তা করছে, তা বাস্তবতা বিবর্জিত। এ ধরনের উদ্যোগ কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে মীমাংসিত একটি বিষয় নিয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের আনুষ্ঠানিক লিখিত প্রতিবেদন সরকারের নিকট জমা দেয়ার আগেই আকস্মিকভাবে এ ধরনের ঘোষণা অনভিপ্রেত, আপত্তিকর ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে দুর্বল করার শামিল’ বলেও এতে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবাদ লিপিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রে প্রশাসন ক্যাডারের কার্যপরিধির সঙ্গে নীতি-নির্ধারণের নিবিড় সম্পর্ক। প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে অন্য ক্যাডারের বড় পার্থক্য হলো, প্রশাসন ক্যাডারের কাজের ধরণ সামগ্রিক বিষয়কে ধারণ করে। যেখানে অন্যান্য ক্যাডারের কাজের ধরন বিশেষায়িত।
খসড়া সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা : বিসিএস সাধারণ শিক্ষাকে ক্যাডার বহির্ভূত করার খসড়া সুপারিশ প্রত্যাখান করে প্রতিবাদলিপি দিয়েছেন বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন। এতে বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার ও বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারকে কাঠামোর বাইরে রাখার সুপারিশ করতে যাচ্ছে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ১৬ হাজার সদস্যের একক মুখপাত্র বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন এই সুপারিশ সর্বোতভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। ২০১২ সালে অনুরূপ একটি প্রচেষ্টা আমরা প্রতিহত করেছি। বিষয়টি মীমাংসিত। সংস্কারের মাধ্যমে সব বৈষম্য নিরসন ও গতিশীল জনবান্ধব জনপ্রশাসন তৈরির লক্ষ্যে গঠিত কমিশনের এ ধরনের সুপারিশ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বৈষম্যবিরোধী মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই এ সুপারিশ প্রত্যাহার করা না হলে কার্যকর প্রশাসনিক সংস্কার ব্যর্থ হবে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে কোনোরূপ আলোচনা না করে কমিশনের এমন প্রস্তাবনা তৈরি এবং গণমাধ্যমে একতরফাভাবে প্রচার করা সুবিবেচনা প্রসূত নয়।
বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন জানায়, শিক্ষাখাতে অস্থিরতা তৈরি করে সরকারকে অস্থিতিশীল করার এটি কোনো ষড়যন্ত্র কি না তা খতিয়ে দেখা উচিত। এরূপ সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষা কার্যক্রম, শিক্ষা প্রশাসন এবং সংস্কার কার্যক্রমে স্থবিরতা এলে বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন কোনোরূপ দায় নেবে না। ক্যাডার সংকোচন এবং শিক্ষাকে মেধাশূন্য করার এ অপচেষ্টার আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে এ প্রচেষ্টা বন্ধ করার জোরালো আহ্বান জানান তারা।
ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তারাও : জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবকে একতরফা আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন। ৩৫ হাজার সদস্যের এই সংগঠন। গত বুধবার সংগঠনটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ নেয়ামত হোসেন ও সদস্যসচিব উম্মে তানিয়া নাসরিন সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাস্থ্যের নীতি-নির্ধারণী পদগুলোতে পুরোপুরি অনভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের পদায়ন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যখাতকে বিজ্ঞানভিত্তিক ও যুগোপযোগী না করে বরং উল্টোপথে হেঁটে আমলাতান্ত্রিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা কায়েম করেছে। অথচ এসব পদে স্বাস্থ্য ক্যাডারের উপযুক্ত কর্মকর্তাদের পদায়ন করে বিজ্ঞানভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। কমিশন প্রকৃত সংস্কার বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যকে ক্যাডারবহির্ভূত করার যে হঠকারী সুপারিশ করেছে, তা মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন তৈরি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি হলে প্রশাসনিক সংস্কার ব্যর্থ হবে।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক সচিব এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, এসব কার্যক্রম বা বাড়তি কথার কারণে প্রশাসনে অস্থিরতা সরকারেরও ক্ষতির কারণ হবে। ইতোমধ্যে একটা ঝুঁকিতে কিন্তু পড়ে গেছে। সবাই প্রতিবাদ করছে। অতিকথনে অস্থিরতা বাড়ানো হচ্ছে কর্মকর্তাদের মধ্যে। এতে কর্মকর্তারাও কাজে মনোযোগ হারাচ্ছেন। এসব দ্রুতই সমাধান দরকার। এসব ক্যাডার ভাগাভাগি অন্য কোথাও নেই। কোটা যেহেতু উঠে গেছে, সুতরাং এ ভাগাভাগি আগে যতটুকু ছিল সেটাও উঠিয়ে দেয়া দরকার। তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে ফরেন সেক্রেটারি হয় অ্যাডমিন ক্যাডার থেকে। খসড়া প্রস্তাবের সমালোচনা করে ২৮ ব্যাচের এক কর্মকর্তা বলেন, সবার জন্য সব ক্যাডারে যাওয়া উন্মুক্ত করে দেয়া হোক তাহলে। আমরাও ফরেন বা ট্যাক্স ক্যাডারে যাব। ট্যাক্স ক্যাডার কর্মকর্তারা রাজস্ব আদায় করে বলে তারা বছরে কয়েক লাখ টানা ইনসেনটিভ পান। আমাদের এসি ল্যান্ডরা কি রাজস্ব আদায় করেন না? তাদের ইনসেনটিভও নেই। সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান বলেন, ক্যাডার ভাগাভাগি করা পৃথিবীর কোথাও নেই। কেউ পরীক্ষায় ভালো না করে সিরিয়ালে নিচের দিকের অন্য ক্যাডারে যোগ দিলেন। প্রথা অনুযায়ী তিনি কয়েক বছর পর ক্যাডার পরিবর্তন করে প্রথম সারির ক্যাডারে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করে থাকেন। এটাই তো বৈষম্য। রাষ্ট্রপতির কোটারও রাজনৈতিক ব্যবহার হয়েছে, এসবও রাখার দরকার নেই। নিয়োগের সময় যে যেই ক্যাডার পাবে পরবর্তীকালে সে ওই ক্যাডারে যে পদে থাকবে যোগ্যতা অনুসারে পদোন্নতি পাবে।