নিয়োগে নানা অনিয়ম, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের আত্মীয় এমন ২০ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে একজন শিক্ষক, বাকি ১৯ জন কর্মকর্তা। গত মঙ্গলবার রাতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যদিও বিজ্ঞপ্তিতে তাদেরকে কেন বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা হয়নি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত মঙ্গলবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ২৬৫তম সিন্ডিকেটে ওই ২০ জনকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, এই ২০ জন কর্মকর্তা ও শিক্ষকের চাকরির ক্ষেত্রে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। কারো নিয়োগে নির্দিষ্ট বোর্ড সদস্য ছিল না, কারো নিয়োগে সম যোগ্যতা ছিল না। এছাড়া বিজ্ঞপ্তির বাইরে লোক নেয়ার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তাই তাদের অবসরে পাঠানো হলো। অবসরে পাঠানোদের মধ্যে বেশিরভাগ সাবেক ভিসি প্রফেসর হারুন অর রশিদ ও মশিউর রহমানের সময় নিয়োগ পাওয়া।
জানা গেছে, গত ১৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ বডি সিন্ডিকেট সভা ডাকেন ভিসি ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। সেখানে ‘২৫ বছর চাকরি পূর্তিতে ঐচ্ছিক অবসর গ্রহণ ও অবসর প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ (২০১৮ সনের ৫৭ নং আইন) এর ৪৪ ধারা ও ৪৫ ধারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও বলবৎ হবে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্তের প্রথম ধাপে একই ২০ জনকে বাধ্যতামূলক অবসর পাঠানো হলো। যাদের অবসরে পাঠানো হলো-বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে যাদের বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে তারা হলেন- ড. নাসির উদ্দিন, অধ্যাপক, গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান; মেজবাহ উদ্দিন, পরিচালক, পরিবহন দফতর (রাজশাহী আঞ্চলিক কেন্দ্রে সংযুক্ত), সাজেদুল হক, পরিচালক, অর্থ ও হিসাব দফতর (সিলেট আঞ্চলিক কেন্দ্রে সংযুক্ত), সিদ্দিকুর রহমান, পরিচালক, আইন বিষয়ক দফতর (চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কেন্দ্রে সংযুক্ত), হোসনেয়ারা বেগম, পরিচালক, আঞ্চলিক কেন্দ্র সমন্বয় দফতর (খুলনা আঞ্চলিক কেন্দ্রে সংযুক্ত), আবু হানিফ, পরিচালক, প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড স্টোর দফতর (সিলেট আঞ্চলিক কেন্দ্রে সংযুক্ত), মু. আখতারুজ্জামান, পরিচালক, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা দফতর (সিলেট আঞ্চলিক কেন্দ্রে সংযুক্ত), আব্দুল মালেক সরকার, পরিচালক, প্রকাশনা ও বিপণন দফতর (খুলনা আঞ্চলিক কেন্দ্রে সংযুক্ত), আতাউর রহমান, পরিচালক, জনসংযোগ দফতর (বরিশাল আঞ্চলিক কেন্দ্রে সংযুক্ত), এ এস এম রফিকুল আকবর, পরিচালক, কলেজ মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন দফতর (কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্রে সংযুক্ত), হাছানুর রহমান, পরিচালক, শিক্ষক প্রশিক্ষণ দফতর (সিলেট আঞ্চলিক কেন্দ্রে সংযুক্ত), এইচ এম তায়েহীদ জামাল, পরিচালক, শারীরিক শিক্ষা দফতর (কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্রে সংযুক্ত), হাসান আমীর আহমেদ, পরিচালক, এস্টেট দফতর (রংপুর আঞ্চলিক কেন্দ্রে সংযুক্ত), শফিক উল্লাহ, পরিচালক, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা দফতর (রেজিস্ট্রার দফতরে সংযুক্ত), আ স ম আবদুল হক, পরিচালক, খুলনা আঞ্চলিক কেন্দ্র, কাজী নাসির উদ্দিন, উপ-রেজিস্ট্রার, বরিশাল আঞ্চলিক কেন্দ্র, মন্নুজান বেগম, উপ-রেজিস্ট্রার, গ্রন্থাগার দফতর, ফাহিমা সুলতানা, উপ-রেজিস্ট্রার, প্রকাশনা ও বিপণন দফতর, মোহাম্মদ হোসেন, উপ-রেজিস্ট্রার, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কেন্দ্র এবং আবদুস ছাত্তার, উপ-রেজিস্ট্রার, মেডিকেল সার্ভিসেস দফতর। সিন্ডিকেট সভায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর লুৎফর রহমান, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. নূরুল ইসলাম, ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ টি এম জাফরুল আযম, সিন্ডিকেট সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, রেজিস্ট্রারসহ সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।