
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আবারও নতুন করে ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে নেতৃত্ব তৈরির প্রধান সহায়ক ছাত্রসংসদ নির্বাচনের কোনো রোডম্যাপ নেই। ফলে এই বিষয়টি নিয়ে আপাতত স্বপ্ন থাকবে। যদিও ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্রসংগঠনগুলো। এরইমধ্যে ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে বিভক্ত রয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলো। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রী মনে করেন, তরুণদের রাজনীতিমুখী করতে ও তরুণ নেতৃত্ব তৈরি করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রসংসদ চালুর বিকল্প নেই। তবে নতুন বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ছাত্রসংসদ পুনঃপ্রতিষ্ঠার যে প্রত্যাশা ছিল, তা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়ে গেছে। সফল গণঅভ্যুত্থানের ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে চূড়ান্ত কোনো রোডম্যাপ নেই। এ অবস্থায় অনেকে প্রশ্ন তুলছে, অধরাই থাকবে নেতৃত্ব তৈরির স্বপ্ন।
ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে বিভক্ত ছাত্র সংগঠনগুলো: বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের সময় ঘোষণার আগেই বিএনপির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে পৃথক দাবিতে দুই বলয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সংগঠনগুলো। ছাত্রদলের চাওয়া, নির্বাচনের আগে পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ দেয়া হোক। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চায় ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন। সম্প্রতি ছাত্র সংগঠনগুলোর দু’টি পৃথক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৪ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ ৩০টি সংগঠন বৈঠক করে। সেখানে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ছাত্রসংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রশাসনকে চাপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ছাত্রসংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য তারা এখনো চূড়ান্ত কোনো রোডম্যাপ প্রস্তুত করেনি। শিক্ষার্থীদের দাবি থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে, যা তরুণ সমাজের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি করছে। নেতৃত্ব তৈরিতে রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি দূর করার যে স্বপ্ন শিক্ষার্থীরা দেখেছিল, তা অনিশ্চয়তায় আবৃত। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাবি শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস খুব ‘জরুরি ভিত্তিতে’ কিংবা ‘অনেক দেরিতে’ ছাত্রসংসদ নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে নন। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ সারা বাংলাদেশই যেন ট্রমাটাইজড হয়ে আছে। দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদের প্রভাবে পুলিশ বাহিনীসহ প্রশাসনের সকল কাঠামো প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে। ছাত্রলীগের রোষানলে পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রছাত্রী নতুন করে হলে উঠছে। তিনি বলেন, ছাত্রদলসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র সংগঠনসমূহ অনেক বছর পরে মুক্তভাবে ক্যাম্পাসে সহাবস্থান করতে পারছে। এই অবস্থায় খুব জরুরিভিত্তিতে বা খুব দেরিতে ডাকসু নির্বাচনের মানে হতে পারে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট করা। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত যত দ্রুত সম্ভব একটি রোডম্যাপ প্রকাশ করা যাতে করে মোটাদাগে এসকল ভয়ংকর ট্রমা কাটিয়ে উঠার পরে শিক্ষার্থীরা সুন্দর মনমানসিকতা নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। তবে ইসলামি ছাত্রশিবিরের ঢাবি সভাপতি আবু সাদিক কায়েম বলেন, আমরা চাই দ্রুততম সময়ে ছাত্রসংসদ চালু হোক এবং শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন ঘটুক। এটি শিক্ষার্থীরাও চায়। বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল বলেন, গত ৫ বছর পর পর জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে কিন্তু গণতন্ত্র নিশ্চিত করা যায়না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, এমনকি সাংবাদিকদের বিভিন্ন ফোরামেও নিয়মিত ও সুষ্ঠু নির্বাচন গণতন্ত্রের পাটাতন তৈরিতে জরুরি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে গণঅভ্যুত্থানের ৪ মাস পার হয়ে গেলেও ছাত্রসংসদ নির্বাচনের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে কার্যত কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছেনা। উদ্যোগ না নেয়াটা প্রমাণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনগুলো অভ্যুত্থানের গণ আকাক্সক্ষা থেকে অনেক দূরে। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির তাড়াহুড়ো করে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রসংসদ নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে নন। তিনি বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের কোনো ক্যাম্পাসে কোনো ছাত্র সংগঠন স্বাভাবিক ধারায় রাজনীতি করতে সক্ষম হয়নি। এই সময়কালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংগঠনগুলোর দূরত্ব বেড়েছে এবং তারা সংগঠনগুলোর আদর্শ, কার্যক্রম ও পার্থক্য বুঝতে পারেনি। সংগঠনগুলোর মধ্যে গুণগত ও আদর্শিক পার্থক্য উপলব্ধি করার জন্য শিক্ষার্থীদের সময় প্রয়োজন। তাড়াহুড়ো করে ছাত্রসংসদ নির্বাচন আয়োজন করা হলে তা অর্থবহ হবে না।
‘অন্তর্বর্তী সরকার’ ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে : গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ছাত্রসংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ছাত্রদের রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়া সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগেই ছাত্রসংসদ নির্বাচন আয়োজন করা হবে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো এই বিষয়ে নীরব থাকার কারণে ছাত্ররাজনীতির সংস্কার দাবির গুরুত্ব কমে যাচ্ছে। নাহিদ ইসলাম মনে করেন, ছাত্রদের দাবী উপেক্ষা করা ভবিষ্যতে দেশকে নেতিবাচক প্রভাবের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ৪ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ ৩০টি সংগঠন বৈঠক করে। সেখানে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ছাত্রসংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রশাসনকে চাপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ছাত্রদলকে ওই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা যোগ দেয়নি। এর পরেরদিন ৫ ডিসেম্বর রাতে ছাত্রদলের নেতৃত্বে ২৮টি দল মতবিনিময় সভা করেছে। সেখানে আমন্ত্রণ পায়নি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ইসলামী ছাত্রশিবির। এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, ছাত্রদল কাকে দাওয়াত দেবে না দেবে, সেটা তাদের বিষয়। তবে সময়টি এখন জাতীয় সংহতি প্রদর্শনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এখন বিভাজনের সময় না। জনগণের সামনে এ ধরনের বিভাজন স্পষ্ট হলে সংহতি স্থাপনের প্রতি আস্থার সংকট বাড়বে। এজন্য সব সংগঠনকেই ম্যাচিউরড সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই ছাত্রসংসদ নির্বাচনের বিষয়ে জোর দিয়ে উমামা ফাতেমা বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোতে গণতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশের জন্য অতি দ্রুত ছাত্রসংসদ নির্বাচন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে শুধু ডাকসুকে প্রাধান্য না দিয়ে আমাদের প্রান্তিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোকেও বিবেচনায় রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে ছাত্রসংসদ নির্বাচন দিতে হবে, কারণ গণঅভ্যুত্থানে ছাত্ররা নেতৃত্ব দিয়েছে।’ আগে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিতের মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। তারপর জাতীয় নির্বাচন একটি সুন্দর গ্রহণযোগ্যতা পাবে। নাহলে জাতীয় নির্বাচন আগের মতোই হবে।
জানা গেছে, সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) ১৯২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদ’ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালে গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে পূর্বনাম পরিবর্তন করে বর্তমান নাম ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ’ গ্রহণ করা হয়। ডাকসুকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদ বলা হয়। দীর্ঘ ২৯ বছর পর ১১ই মার্চ ২০১৯ সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনে নুরুল হক নূর সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া জিএস পদে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়াও একমাত্র ভিপি এবং সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদকের পদ ছাড়া মোট ২৫ টি পদের মধ্যে ২৩ টি পদেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমর্থিত এবং সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ মনোনীত প্রার্থীগণ বিজয়ী হন। ঢাবি প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়েমা হক বিদিশা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ছাত্ররাজনীতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছি। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে একটি কমিটি করা হয়েছে। উনারা বিভিন্ন পক্ষের সাথে বসবে। বসে আলাপ-আলোচনা করে আমাদেরকে জানাবে। তার প্রেক্ষিতে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। সে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ১৯৬২ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ইউকসু) প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পরে এখন পর্যন্ত মোট ২১ বার কমিটি হয়েছে। সর্বশেষ ইউকসু নির্বাচন হয় ২০০১ সালে। সে সময় গোলাম মোর্শেদ লায়ন ভিপি ও হাসিব মোস্তাবসির জিএস নির্বাচিত হয়। তবে ছাত্রসংসদ নির্বাচন চালু করলে পুনরায় ছাত্ররাজনীতি ফেরার আশঙ্কা থাকায় ইউকসু নির্বাচন চান না বুয়েট শিক্ষার্থীরা। বুয়েট ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল আমিন সিদ্দিক বলেন, বুয়েটে এখনো ছাত্রসংসদ চালুর পরিকল্পনা নেই। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠার পরে এখন পর্যন্ত মোট ৮ বার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (জাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ ১৯৯২ সালের নির্বাচনে মাসুদ হাসান তালুকদার এবং শামসুল তাবরীজ যথাক্রমে ভিপি ও জিএস নির্বাচিত হয়। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাবির এক উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, জাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের এখনো কার্যত কোনো পরিকল্পনা এবং পদক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, আমি চাই জাকসু নির্বাচন হোক। শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব থাকুক। তারা শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে কথা বলবে। আর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (চাকসু) ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত অকেজো হয়ে পড়ে আছে ছাত্র-ছাত্রীদের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া চর্চার প্রাণ কেন্দ্রটি। চাকসু নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে জানতে চাইলে প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, চাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি নির্বাচনের চিন্তাভাবনা আমাদের আছে। চাকসু নির্বাচন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এজেন্ডার মধ্যে ‘টপ প্রায়োরিটিতে’ আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (রাকসু) ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯০ সালের পর থেকে সংগঠনটির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিতে এগিয়ে আছে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের মতামত নিয়েছি। আমরা আশা করছি শিগগিরই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (রাকসু) নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বাছাই হবে। ২০০৫ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরিত হয় প্রতিষ্ঠানটি। তখন বিশ্ববিদ্যালয় আইনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (জকসু) সম্পর্কে কোনো ধারা বা উপধারা ছিল না। ফলে জকসু গঠনতন্ত্র প্রণয়নের জন্য আইন সংশোধন করতে কমিটি গঠন করা হয়। তবে কমিটি গঠনের ৫ বছর পার হলেও দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় বারবার আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। জবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম বলেন, জকসুর নীতিমালাটা প্রণীত হচ্ছে। নীতিমালা প্রণয়নের কাজ একেবারে শেষ পর্যায়ে আছে। এটা আইনগতভাবে গৃহীত হলে আমরা নির্বাচন দিয়ে দেয়ার চেষ্টা করব।