কৃষিবিদদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা কৃষি খাতের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে

আপলোড সময় : ০৪-১২-২০২৪ ০৭:১৩:৪১ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৪-১২-২০২৪ ০৭:১৩:৪১ অপরাহ্ন

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই) থেকে শুরু করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিভাগেও উত্তেজনা বিরাজ করছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে এ প্রতিষ্ঠানটি যেভাবে রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়েছে, তা কৃষি খাতে বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে রাজনৈতিক বিভক্তি এবং পদ দখলের লড়াই এতটাই প্রবল হয়ে উঠেছে যে, কৃষি সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
দেশের কৃষি খাতে উত্তেজনার নতুন মাত্রা যোগ করেছে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) সাম্প্রতিক ঘটনা। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো শুধু তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নয়, দেশের কৃষি খাতের ভবিষ্যৎকেও হুমকির মুখে ফেলছে। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, যদি এই প্রক্রিয়া বন্ধ না করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট কৃষিবিদদের যথাযথ সুরক্ষা দেয়া না হয়, তবে দেশে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে।
দেশের অনেক শীর্ষস্থানীয় কৃষিবিদদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর প্রেক্ষাপট নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা অতীতে ছাত্র আন্দোলনের সময় সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অথচ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন। এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকারি চাকরি করি, কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। অথচ আমাকে মামলার মাধ্যমে হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা এখন আতঙ্কে আছি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃষিবিদদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এবং মামলার কারণে দেশে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। দেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে এই কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। তাদের বিরুদ্ধে এই ধরনের মামলা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত হয়রানির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি কৃষি খাতের কর্মপরিবেশ এবং কার্যক্রমেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক দৈনিক জনতাকে জানান, কৃষিবিদদের যদি এইভাবে হয়রানি করা হয়, তবে মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম এবং গবেষণা বাধাগ্রস্ত হবে। এর ফলে খাদ্য উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দেবে, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করতে পারে। বর্তমানে ডিএইয়ের অধীনে ৩২টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের নেতৃত্বে থাকা কর্মকর্তারা এই মামলার আওতায় এসেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম কে বারবার ফোন করলে তিনি ফোন ধরেননি। বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষি খাতের ওপর নির্ভরশীল। এ খাতে অব্যাহত অস্থিরতা এবং সুশাসনের অভাবের কারণে খাদ্য উৎপাদনে বড় ধরনের সংকট দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে, চলমান প্রকল্পগুলো যদি ব্যাহত হয়, তবে তা শুধু কৃষকের ওপর নয়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তার ওপরও বিরুপ প্রভাব ফেলবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের উচিত এই পরিস্থিতি দ্রুত সমাধান করা। দেশের কৃষিবিদদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং তাদের কাজের পরিবেশ বজায় রাখা কৃষি খাতের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। এটি শুধু কৃষকদের জন্য নয়, দেশের ভবিষ্যৎ খাদ্য নিরাপত্তার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net