দেশের বেশ কিছু ব্যাংক আমানত ও ঋণের ভারসাম্য ধরে রাখতে পারছে না। গ্রাহকের নিরাপত্তা সীমা ভেঙে খেয়ালখুশি মত বিতরণ করছে ঋণ। এতে ঋণের অর্থ আদায়ে ব্যাংকগুলো একদিকে যেমন চাপে পড়ছে, অন্যদিকে হু হু করে বাড়ছে খেলাপির পরিমাণ। এ অবস্থায় অনেক ব্যাংকে তারল্য সংকট তীব্র হয়েছে। অনেক ব্যাংক ঝুকছে দেউলিয়াত্বের দিকে। অন্যদিকে, ভারসাম্যহীন ঋণ বিতরণে ঝুঁকিতে পড়ছে গ্রাহকের আমানত।
মূলত ঋণ বিতরণে অ্যাডভান্স ডিপোজিট রেশিও (এডিআর) সীমা অতিক্রম করায় ব্যাংকগুলোর গ্রাহকের অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ব্যাংকগুলোর নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করে আগ্রাসীভাবে ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকির ঘাটতি রয়েছে। যথেষ্ট নজরদারি না থাকায় ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধিমালা অনুযায়ী, চলতি ধারার ব্যাংক ১০০ টাকা আমানতের বিপরীতে সর্বোচ্চ ৮৭ টাকা ঋণ দিতে পারে। আর ইসলামি ধারার ব্যাংক ঋণ দিতে পারে ৯২ টাকা। যাকে ব্যাংকিং পরিভাষায় অ্যাডভান্স ডিপোজিট রেশিও (এডিআর) বা ঋণ-আমানত অনুপাত সীমা বলা হয়। অবিতরণকৃত অর্থ গ্রাহকের নিরাপত্তার জন্য (সিএলআর এবং এসএলআর) বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখতে বাধ্য থাকে ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত জুন পর্যন্ত আমানত ও ঋণের ভারসাম্য ভেঙে ১৩টি ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের এডিআর দাঁড়িয়েছে ১০৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। অথচ নানাভাবে আলোচিত-সমালোচিত ব্যাংকটি গ্রাহকের ১০০ টাকা আমানতের বিপরীতে সর্বোচ্চ ৮৭ টাকা ঋণ বিতরণের সুযোগ রয়েছে। তথ্য বলছে, ন্যাশনাল ব্যাংক সীমার চেয়ে অতিরিক্ত ঋণ বিতরণ করেছে ১৭ টাকা। সম্প্রতি গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে নানা বেগ পাচ্ছে ব্যাংকটি।
বেসরকারি পদ্মা ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে ৯১ দশমিক ৪১ শতাংশ। অথচ এ ব্যাংকটিরও ঋণ বিতরণের সীমা ৮৭ শতাংশ। বর্তমানে এ ব্যাংকটিও ঋণ আদায় করতে পারছে না, গ্রাহকের টাকা সময়মত ফেরত দিতেও হিমশিম খাচ্ছে।
এবি ব্যাংকের এডিআর দাঁড়িয়েছে ৮৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অথচ ব্যাংকটির বেঁধে দেওয়া সীমা ৮৭ শতাংশ। এবি ব্যাংকের ইসলামি উইন্ডো ১১২ দশমিক ৬০ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। যেখানে উইন্ডোর সর্বোচ্চ সীমা ৯২ শতাংশ। যেখানে প্রায় ২০ শতাংশ ঋণ বেশি বিতরণ করা হয়েছে। এতে বাড়তি ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে গ্রাহকের জন্য।
এ বিষয়ে রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র?্যাপিড) চেয়ারম্যান এবং অর্থনীতিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সাধারণত এডিআরের সীমা অতিক্রম করে ঋণ বিতরণ করলে আমানতকারীদের আমানত ঝুঁকিতে পড়ে। নীতিমালা না মেনে চললে কমপ্লায়েন্স লঙ্ঘন হবে। এর ফলে সুশাসনের ঘাটতি দেখা দেবে।
আগ্রাসী ঋণ বিতরণ হলে সেটি আদায় করা নিয়েও সমস্যা দেখা দেবে। ঋণ আদায় করতে না পারলে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে সমস্যা তৈরি হবে। এ নিয়ে অবশ্যই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি বাড়াতে হবে- বলেন তিনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, রাষ্ট্র মালিকানাধীন জনতা ব্যাংকের এডিআর দাঁড়িয়েছে ৯০ দশমিক ২৭ শতাংশ। যেখানে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণের সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৮৭ শতাংশ। সীমা লঙ্ঘন করে ঋণ বিতরণ করায় ব্যাংকটির ২৩ জন গ্রাহকের কাছে মোট বিতরণ করা ঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৪ শতাংশ। রাষ্ট্রীয় এ ব্যাংকটি এখন ঠিকমত ঋণ আদায় করতে পারছে না। এতে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণও বেড়ে যাচ্ছে।
রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকের ঋণ বিতরণের সীমা ৮৭ শতাংশ হলেও ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ৯৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আর বিদেশি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের এডিআর ৮৭ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ।
সূত্র বলছে, শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংকের এডিআর দাঁড়িয়েছে ১১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশে। এ ব্যাংকটির সর্বোচ্চ সীমা ৯২ শতাংশ। এছাড়া অন্য শরিয়াহভিত্তিক স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এডিআর ৯৪ দশমিক ২৮ শতাংশ, গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকের ৯৯ দশমিক ৪১ শতাংশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের রেকর্ড এডিআর ১১৯ দশমিক ৫০ শতাংশ। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সীমার চেয়ে ২৭ টাকা বেশি ঋণ বিতরণ করেছে।
শরিয়াহভিত্তিক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের এডিআর ৯৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংকের এডিআর ১০০ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ইসলামিক উইন্ডো ১২৯ দশমিক ২৮ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বলেন, সাধারণত আমানত, প্রভিশন ও মূলধন নিয়ে এডিআর করতে হয়। রিয়েল এডিআর সমস্যা থাকে অনেক ব্যাংকের। ক্যাপিটাল ও প্রভিশন খারাপ হলে এডিআর খারাপ হয়। তবে যেসব ব্যাংক এডিআরের সীমা অতিক্রম করেছে সেগুলোর অবস্থা খারাপই রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের শিথিলতার কারণে এমনটা হয়েছে। মাসের পর মাস এভাবে চলতে পারে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা এ বিষয়ে বলেন, গ্রাহকের স্বার্থরক্ষায় নিয়মিত এডিআর তদারকি করে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আমরা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছি। কোনো ব্যাংক সীমা লঙ্ঘন করলে জরিমানাসহ শাস্তি দেওয়া হয়।
মূলত ঋণ বিতরণে অ্যাডভান্স ডিপোজিট রেশিও (এডিআর) সীমা অতিক্রম করায় ব্যাংকগুলোর গ্রাহকের অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ব্যাংকগুলোর নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করে আগ্রাসীভাবে ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকির ঘাটতি রয়েছে। যথেষ্ট নজরদারি না থাকায় ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধিমালা অনুযায়ী, চলতি ধারার ব্যাংক ১০০ টাকা আমানতের বিপরীতে সর্বোচ্চ ৮৭ টাকা ঋণ দিতে পারে। আর ইসলামি ধারার ব্যাংক ঋণ দিতে পারে ৯২ টাকা। যাকে ব্যাংকিং পরিভাষায় অ্যাডভান্স ডিপোজিট রেশিও (এডিআর) বা ঋণ-আমানত অনুপাত সীমা বলা হয়। অবিতরণকৃত অর্থ গ্রাহকের নিরাপত্তার জন্য (সিএলআর এবং এসএলআর) বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখতে বাধ্য থাকে ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত জুন পর্যন্ত আমানত ও ঋণের ভারসাম্য ভেঙে ১৩টি ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের এডিআর দাঁড়িয়েছে ১০৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। অথচ নানাভাবে আলোচিত-সমালোচিত ব্যাংকটি গ্রাহকের ১০০ টাকা আমানতের বিপরীতে সর্বোচ্চ ৮৭ টাকা ঋণ বিতরণের সুযোগ রয়েছে। তথ্য বলছে, ন্যাশনাল ব্যাংক সীমার চেয়ে অতিরিক্ত ঋণ বিতরণ করেছে ১৭ টাকা। সম্প্রতি গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে নানা বেগ পাচ্ছে ব্যাংকটি।
বেসরকারি পদ্মা ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে ৯১ দশমিক ৪১ শতাংশ। অথচ এ ব্যাংকটিরও ঋণ বিতরণের সীমা ৮৭ শতাংশ। বর্তমানে এ ব্যাংকটিও ঋণ আদায় করতে পারছে না, গ্রাহকের টাকা সময়মত ফেরত দিতেও হিমশিম খাচ্ছে।
এবি ব্যাংকের এডিআর দাঁড়িয়েছে ৮৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অথচ ব্যাংকটির বেঁধে দেওয়া সীমা ৮৭ শতাংশ। এবি ব্যাংকের ইসলামি উইন্ডো ১১২ দশমিক ৬০ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। যেখানে উইন্ডোর সর্বোচ্চ সীমা ৯২ শতাংশ। যেখানে প্রায় ২০ শতাংশ ঋণ বেশি বিতরণ করা হয়েছে। এতে বাড়তি ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে গ্রাহকের জন্য।
এ বিষয়ে রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র?্যাপিড) চেয়ারম্যান এবং অর্থনীতিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সাধারণত এডিআরের সীমা অতিক্রম করে ঋণ বিতরণ করলে আমানতকারীদের আমানত ঝুঁকিতে পড়ে। নীতিমালা না মেনে চললে কমপ্লায়েন্স লঙ্ঘন হবে। এর ফলে সুশাসনের ঘাটতি দেখা দেবে।
আগ্রাসী ঋণ বিতরণ হলে সেটি আদায় করা নিয়েও সমস্যা দেখা দেবে। ঋণ আদায় করতে না পারলে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে সমস্যা তৈরি হবে। এ নিয়ে অবশ্যই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি বাড়াতে হবে- বলেন তিনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, রাষ্ট্র মালিকানাধীন জনতা ব্যাংকের এডিআর দাঁড়িয়েছে ৯০ দশমিক ২৭ শতাংশ। যেখানে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণের সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৮৭ শতাংশ। সীমা লঙ্ঘন করে ঋণ বিতরণ করায় ব্যাংকটির ২৩ জন গ্রাহকের কাছে মোট বিতরণ করা ঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৪ শতাংশ। রাষ্ট্রীয় এ ব্যাংকটি এখন ঠিকমত ঋণ আদায় করতে পারছে না। এতে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণও বেড়ে যাচ্ছে।
রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকের ঋণ বিতরণের সীমা ৮৭ শতাংশ হলেও ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ৯৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আর বিদেশি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের এডিআর ৮৭ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ।
সূত্র বলছে, শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংকের এডিআর দাঁড়িয়েছে ১১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশে। এ ব্যাংকটির সর্বোচ্চ সীমা ৯২ শতাংশ। এছাড়া অন্য শরিয়াহভিত্তিক স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এডিআর ৯৪ দশমিক ২৮ শতাংশ, গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকের ৯৯ দশমিক ৪১ শতাংশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের রেকর্ড এডিআর ১১৯ দশমিক ৫০ শতাংশ। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সীমার চেয়ে ২৭ টাকা বেশি ঋণ বিতরণ করেছে।
শরিয়াহভিত্তিক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের এডিআর ৯৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংকের এডিআর ১০০ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ইসলামিক উইন্ডো ১২৯ দশমিক ২৮ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বলেন, সাধারণত আমানত, প্রভিশন ও মূলধন নিয়ে এডিআর করতে হয়। রিয়েল এডিআর সমস্যা থাকে অনেক ব্যাংকের। ক্যাপিটাল ও প্রভিশন খারাপ হলে এডিআর খারাপ হয়। তবে যেসব ব্যাংক এডিআরের সীমা অতিক্রম করেছে সেগুলোর অবস্থা খারাপই রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের শিথিলতার কারণে এমনটা হয়েছে। মাসের পর মাস এভাবে চলতে পারে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা এ বিষয়ে বলেন, গ্রাহকের স্বার্থরক্ষায় নিয়মিত এডিআর তদারকি করে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আমরা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছি। কোনো ব্যাংক সীমা লঙ্ঘন করলে জরিমানাসহ শাস্তি দেওয়া হয়।