
* আমরা মরতে চাই, দেখি কত লোক মারতে পারে : জিএম কাদের
* জাপাকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ
* জাপা-গণঅধিকারের পাল্টাপাল্টি ঘোষণায় সংঘাতের আশঙ্কায় নগরবাসি
দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে আজ শনিবার রাজধানীতে প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় পাটি (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। এই ঘোষণার পর পরই জাতীয় পাটিকে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিকে শনিবার সমাবেশ করতে দেয়া মানে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার আরেকটি চক্রান্ত। গণঅধিকার পরিষদ ও জাপার পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ও আলটিমেটামে ঘোষণায় উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে রাজধানীর রাজপথ। এতে অনেকটাই আতঙ্কে রয়েছেন নগরবাসি। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে। তবে তারা নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।
সংঘাতের আশঙ্কায় নগরবাসির উদ্বেগ: গতকাল শুক্রবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পাটিকে রাজধানীতে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে কঠোর হুসিয়ারী দিয়েছে বাংলাদেশের গণঅধিকার পরিষদ। তবে যেকোনো মূল্যে দলের চেয়ারম্যান-মহাসচিবসহ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শনিবার রাজধানীতে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় পার্টি। দুই রাজনৈতিক দলের পাল্টাপাল্টি এমন ঘোষণায় অনেকটাই আতঙ্কিত হয়ে উঠেছেন নগরবাসি। পুরাতন ঢাকার বাসিন্দা নাজমুল জানান, আমরা অশান্তি চাইনা, শান্তিতে থাকতে চাই। একই কথা বলেছেন রাজধানীর শান্তিনগরের বাসিন্দা ফাতেমা জামান। তবে ব্যবসায়ী মহসীন-উল করিম জানান, এখন যে পরিস্থিতি আমরা দেখছি, তাতে তো আতঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সবাই তো উদ্বেগের মধ্যে আছে। কখন যেন সংঘাত বেঁধে যায়। এই পরিস্থিতির উত্তরণের সম্ভাবনা আপাতত দেখছেন না তিনি। তবে যাত্রাবাড়ির বাসিন্দা এস এম আলী হোসেন রানা বলেন, এমনিতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগে থাকে, তার উপর গত বৃহস্পতিবার বিজয়নগরে জাতীয় পাটির অফিসে আগুন দিয়েছে একটি রাজনীতিক দল। এর প্রতিবাদে জাতীয় পাটি সমাবেশের ডাক দিয়েছে। পাল্টা প্রতিরোধের হুসিয়ারী দিয়েছে গণঅধিকার নামে একটি রাজনীতিক দল। নগরবাসির আতঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। যে কোনো মুহুর্তে দুই দলের মধ্যে সংঘাত হতে পারে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শুধু সাধারণ মানুষ। অতিদ্রুত এসব বন্ধ করা উচিত বলে জানান তিনি।
জি এম কাদের বললেন আমরা মরতে চাই: দেশ ভালো নেই’ মন্তব্য করে ‘আন্দোলন, কর্মসূচি চলবে’ বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা মরতে চাই, দেখি কত লোক মারতে পারে। আজ শনিবার জাতীয় পার্টি পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ করবে বলেও জানান জি এম কাদের। তিনি বলেন, আমরা মরতে এসেছি, আমরা মরতে চাই, কত মারবে তোমরা আমরা দেখতে চাই। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির অফিসে হামলা ও অগ্নিকাণ্ডের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জিএম কাদের বলেন, আল্লাহ আমাদের প্রটেকশন দিচ্ছেন বলে এখনো বেঁচে আছি, অন্য কারও প্রটেকশনে নয়। বিচারের জন্য যদি আল্লাহর সাহায্যের দিকে চেয়ে থাকতে হয় তাহলে দেশ কীভাবে চলবে। আমরা একদিনের ডেমোক্রেসি চাই না। সব সময়ের ডেমোক্রেসি চাই। আমরা চাই সরকার হবে- ‘অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল’। তিনি বলেন, আমরা দেশের জনগণের পাশে ছিলাম, সবসময় থাকবো। আমার পরবর্তী প্রজন্ম এলেও জাতীয় পার্টি জনগণের পাশে থাকবে এবং একইভাবে এগিয়ে যাবে। আমাদের ওপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমাদের দুই তারিখের কর্মসূচি চলবে। আমাদের কর্মসূচি ও আন্দোলন সবই চলবে নিয়মতান্ত্রিক এবং অহিংসভাবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, উনারা যা বলে তা-ই সঠিক, বাকি সবাই ভুল। উনারা এখন বিচারকার্যেও গিয়ে বাধা দেয়। উনাদের ইচ্ছা হলো আমাদের অফিস ভেঙে দিয়ে গেল। কারও যদি ভুল হয় সেখানে ব্যবস্থা নেয়ার অনেক উপায় আছে, তাই বলে তাকে ধ্বংস করে দেবেন, এটা কেমন হবে। জিএম কাদের বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমরা সবসময় সমর্থন জানিয়েছি। তাদের পক্ষে সে সময় অনেক কথা বলেছি, বিবৃতি দিয়েছি। যে কারণে আমার অনেক ক্ষতিও হতে পারতো। কিন্তু এসব কিছুর পরোয়া আমরা করিনি। তারপরও আমাদের বিরুদ্ধে অন্যায় অপবাদ দেয়া হচ্ছে। আমি এখন বলছি, জাতীয় পার্টি একটি জনগণের রাজনৈতিক দল। হয়তো সারাদেশে আমাদের অবস্থান কিছুটা কম আছে, তবুও আমরা টিকে আছি। চাপে গর্তে ঢুকে গেলেও বারবার জাতীয় পার্টি উঠে দাঁড়ায়, এটাই অনেকের সহ্য হয় না। যে কারণে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়। জাতীয় পার্টি সবসময় জনবান্ধব দল ছিল, এখনো আছে এবং আগামীতেও থাকবে। তিনি বলেন, এরশাদ সাহেবকে যতই অপবাদ দেয়া হোক না কেন জনগণ তার পাশে ছিল। অনেকে বলে এরশাদ সাহেবকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নামানো হয়েছে, এটা একদমই ভুল কথা। উনি জনগণের ইচ্ছায় ক্ষমতা ছেড়েছেন। তবে একানব্বই থেকে উনার (এরশাদ) এবং জাতীয় পার্টির ওপর নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সবাই বলে আমরা নাকি আওয়ামী লীগের দোসর। কিন্তু কীভাবে দোসর হলাম। আমরা শেখ হাসিনার কোনো ধরনের জনবিরোধী কাজের সঙ্গে ছিলাম না। আমরা বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের জনবিরোধী ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আওয়ামী লীগের দলীয়করণের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার ছিলাম। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতি ছিলেন- জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল করিম, শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও জিএম কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদের।
জাপাকে সমাবেশ করতে দেবে না বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ: দলের চেয়ারম্যান-মহাসচিবসহ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শনিবার রাজধানীতে সমাবেশের ডাক দিয়েছে জাতীয় পার্টি। তবে এই সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারী দিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিকে শনিবার সমাবেশ করতে দেয়া মানে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার আরেকটি চক্রান্ত। গতকাল শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতা’র ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে তারা জাতীয় পার্টির নেতাদের গ্রেফতারের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, গতকাল শুক্রবার আওয়ামী লীগের ক্যাডার বাহিনী পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে জড়ো হয়েছিল। আমরা কাকরাইলে পৌঁছানো মাত্রই আমাদের ওপর তারা অতর্কিত হামলা করে। আপনারা শুনেছেন, জাতীয় পার্টি আগামীকাল সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। আমাদের কাছে খবর আছে, তারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আওয়ামী লীগ ক্যাডার বাহিনী নিয়ে এসে সমাবেশ করবে। আমরা বার বার আল্টিমেটাম দিচ্ছি, যেন ফ্যাসিবাদের দোসরদের নিষিদ্ধ করা হয়। তারা বিভিন্ন রূপে ফেরার চেষ্টা করছে। তাদের প্রতি বর্তমান সরকারের অবস্থান কী, আমরা তা জানতে চাই। ডিএমপি কমিশনার কীভাবে এই হত্যাকারীদের দোসরদের সমাবেশ করার অনুমতি দেয়, আমরা জানতে চাই। এরআগে গত বৃহস্পতিবার মশাল মিছিলকারীদের ওপর জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ যৌথভাবে হামলা করেছে, এমন অভিযোগ করেন ছাত্রনেতা মশিউর রহমান। তিনি বলেন, গত বুধবার আমাদের ওপর জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ একত্রে হামলা করে। আমার হাতে এখনও ব্যান্ডেজ করা। তারা নাকি আবার আগামীকাল সমাবেশ করবে। এটা কি মগের মুল্লুক পেয়েছে? তারা হামলাও করবে, আবার সমাবেশও করবে! জাতীয় পার্টির অফিস পুড়িয়ে দেয়ার সঙ্গে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার কোনও সম্পর্ক নেই দাবি করে তিনি বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতাই তাদের কর্মকাণ্ডের ফলস্বরূপ তাদের অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে। এরআগে গত ১৫ অক্টোবর জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। এতে ফুঁসে উঠে শিক্ষার্থীরা। তবে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে এমন অভিযোগ তুলে পাল্টা কর্মসূচি পালন করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। ফলে জাতীয় পার্টি ও ছাত্র আন্দোলনের পাল্টাপাল্টি মিছিল ও আলটিমেটামে উত্তপ্ত হয়ে উঠে রংপুর। গত ১৫ অক্টোবর রাতে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয় পার্টির অঙ্গ সহযোগী সংগঠন জাতীয় যুব সংহতি এবং জাতীয় ছাত্রসমাজ। গত ১৪ অক্টোবর রাতে এক কর্মীসভা থেকে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটির সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় ওইদিন মধ্যরাতেই রংপুর নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। রংপুর থেকে জাতীয় পার্টি যে আন্দোলন শুরু করল এর ভবিষ্যৎ কোন দিকে যায় তা দেখার জন্য অপেক্ষা করুন। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে জাতীয় পার্টিও অংশ নিয়েছিল। রংপুরে আমাদের মেরাজুল ও মানিক নামে দুজন কর্মী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। ২২টি মামলায় আসামি করা হয়েছিল দলের কর্মীদের। এরমধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। ১৬ জুলাই আবু সাঈদকে হত্যা করা হয়, সেদিনও জাতীয় পার্টির যুব ও ছাত্র সংগঠন মিছিলে অংশ নিয়েছিল এবং নির্যাতনে শিকার হয়েছিল। অথচ ৫ আগস্টের পর জাতীয় পার্টিকে হাসিনা সরকারের সহযোগী আখ্যা দিয়ে পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও তার স্ত্রী শেরিফা কাদেরকে মামলার আসামি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ভাঙচুরের পর আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতা’। অগ্নিসংযোগের আগে জাতীয় পার্টি ও ছাত্র-জনতার ব্যানারে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যার পর বিক্ষুব্ধ জনতা জাপা কার্যালয়ে ভাংচুর চালিয়ে পরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় জাতীয় পার্টির কর্মীরা অভিযোগ করেন, ছাত্র জনতার ব্যানারে আসা মশাল মিছিলটি পার্টি অফিসের সামনে এসে ভাঙচুর চালায়। পরে নেতাকর্মীদের নিয়ে তাদেরকে প্রতিহত করেন। এর আগে টিএসসিতে ছাত্র-জনতার ব্যানারে জাতীয় পার্টির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান। একই সাথে আওয়ামী লিগের দোসর বলেও মন্তব্য করেন তারা। শুধু তাই নয় জাতীয় পার্টি এখনো অপরাজনীতি করছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। বক্তব্য শেষে টিএসসি থেকে মশাল মিছিল নিয়ে বিজয় নগরের উদ্দেশে রওনা হয়। পরে জাতীয় পার্টি অফিসের সামনে আসলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে লেখেন, জাতীয় বেইমান এই জাতীয় পার্টি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিজয়নগরে আমাদের ভাইদের পিটিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। এবার এই জাতীয় বেইমানদের উৎখাত নিশ্চিত। এরই আধা ঘণ্টা পর আরেক পোস্টে মিছিলের ঘোষণা দিয়ে তিনি ফেসবুকে লেখেন, রাজু ভাস্কর্য থেকে ৮টা ৩০ এ মিছিল নিয়ে আমরা বিজয়নগরে মুভ করবো। জাতীয় বেইমানদের নিশ্চিহ্ন করতে হবে। রাত ৮টার দিকে জাপা কার্যালয়ে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায় ফায়ার সার্ভিস। পরে রাত সাড়ে ৮টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী তিনটি গাড়ি ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
* জাপাকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ
* জাপা-গণঅধিকারের পাল্টাপাল্টি ঘোষণায় সংঘাতের আশঙ্কায় নগরবাসি
দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে আজ শনিবার রাজধানীতে প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় পাটি (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। এই ঘোষণার পর পরই জাতীয় পাটিকে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিকে শনিবার সমাবেশ করতে দেয়া মানে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার আরেকটি চক্রান্ত। গণঅধিকার পরিষদ ও জাপার পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ও আলটিমেটামে ঘোষণায় উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে রাজধানীর রাজপথ। এতে অনেকটাই আতঙ্কে রয়েছেন নগরবাসি। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে। তবে তারা নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।
সংঘাতের আশঙ্কায় নগরবাসির উদ্বেগ: গতকাল শুক্রবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পাটিকে রাজধানীতে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে কঠোর হুসিয়ারী দিয়েছে বাংলাদেশের গণঅধিকার পরিষদ। তবে যেকোনো মূল্যে দলের চেয়ারম্যান-মহাসচিবসহ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শনিবার রাজধানীতে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় পার্টি। দুই রাজনৈতিক দলের পাল্টাপাল্টি এমন ঘোষণায় অনেকটাই আতঙ্কিত হয়ে উঠেছেন নগরবাসি। পুরাতন ঢাকার বাসিন্দা নাজমুল জানান, আমরা অশান্তি চাইনা, শান্তিতে থাকতে চাই। একই কথা বলেছেন রাজধানীর শান্তিনগরের বাসিন্দা ফাতেমা জামান। তবে ব্যবসায়ী মহসীন-উল করিম জানান, এখন যে পরিস্থিতি আমরা দেখছি, তাতে তো আতঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সবাই তো উদ্বেগের মধ্যে আছে। কখন যেন সংঘাত বেঁধে যায়। এই পরিস্থিতির উত্তরণের সম্ভাবনা আপাতত দেখছেন না তিনি। তবে যাত্রাবাড়ির বাসিন্দা এস এম আলী হোসেন রানা বলেন, এমনিতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগে থাকে, তার উপর গত বৃহস্পতিবার বিজয়নগরে জাতীয় পাটির অফিসে আগুন দিয়েছে একটি রাজনীতিক দল। এর প্রতিবাদে জাতীয় পাটি সমাবেশের ডাক দিয়েছে। পাল্টা প্রতিরোধের হুসিয়ারী দিয়েছে গণঅধিকার নামে একটি রাজনীতিক দল। নগরবাসির আতঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। যে কোনো মুহুর্তে দুই দলের মধ্যে সংঘাত হতে পারে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শুধু সাধারণ মানুষ। অতিদ্রুত এসব বন্ধ করা উচিত বলে জানান তিনি।
জি এম কাদের বললেন আমরা মরতে চাই: দেশ ভালো নেই’ মন্তব্য করে ‘আন্দোলন, কর্মসূচি চলবে’ বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা মরতে চাই, দেখি কত লোক মারতে পারে। আজ শনিবার জাতীয় পার্টি পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ করবে বলেও জানান জি এম কাদের। তিনি বলেন, আমরা মরতে এসেছি, আমরা মরতে চাই, কত মারবে তোমরা আমরা দেখতে চাই। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির অফিসে হামলা ও অগ্নিকাণ্ডের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জিএম কাদের বলেন, আল্লাহ আমাদের প্রটেকশন দিচ্ছেন বলে এখনো বেঁচে আছি, অন্য কারও প্রটেকশনে নয়। বিচারের জন্য যদি আল্লাহর সাহায্যের দিকে চেয়ে থাকতে হয় তাহলে দেশ কীভাবে চলবে। আমরা একদিনের ডেমোক্রেসি চাই না। সব সময়ের ডেমোক্রেসি চাই। আমরা চাই সরকার হবে- ‘অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল’। তিনি বলেন, আমরা দেশের জনগণের পাশে ছিলাম, সবসময় থাকবো। আমার পরবর্তী প্রজন্ম এলেও জাতীয় পার্টি জনগণের পাশে থাকবে এবং একইভাবে এগিয়ে যাবে। আমাদের ওপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমাদের দুই তারিখের কর্মসূচি চলবে। আমাদের কর্মসূচি ও আন্দোলন সবই চলবে নিয়মতান্ত্রিক এবং অহিংসভাবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, উনারা যা বলে তা-ই সঠিক, বাকি সবাই ভুল। উনারা এখন বিচারকার্যেও গিয়ে বাধা দেয়। উনাদের ইচ্ছা হলো আমাদের অফিস ভেঙে দিয়ে গেল। কারও যদি ভুল হয় সেখানে ব্যবস্থা নেয়ার অনেক উপায় আছে, তাই বলে তাকে ধ্বংস করে দেবেন, এটা কেমন হবে। জিএম কাদের বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমরা সবসময় সমর্থন জানিয়েছি। তাদের পক্ষে সে সময় অনেক কথা বলেছি, বিবৃতি দিয়েছি। যে কারণে আমার অনেক ক্ষতিও হতে পারতো। কিন্তু এসব কিছুর পরোয়া আমরা করিনি। তারপরও আমাদের বিরুদ্ধে অন্যায় অপবাদ দেয়া হচ্ছে। আমি এখন বলছি, জাতীয় পার্টি একটি জনগণের রাজনৈতিক দল। হয়তো সারাদেশে আমাদের অবস্থান কিছুটা কম আছে, তবুও আমরা টিকে আছি। চাপে গর্তে ঢুকে গেলেও বারবার জাতীয় পার্টি উঠে দাঁড়ায়, এটাই অনেকের সহ্য হয় না। যে কারণে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়। জাতীয় পার্টি সবসময় জনবান্ধব দল ছিল, এখনো আছে এবং আগামীতেও থাকবে। তিনি বলেন, এরশাদ সাহেবকে যতই অপবাদ দেয়া হোক না কেন জনগণ তার পাশে ছিল। অনেকে বলে এরশাদ সাহেবকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নামানো হয়েছে, এটা একদমই ভুল কথা। উনি জনগণের ইচ্ছায় ক্ষমতা ছেড়েছেন। তবে একানব্বই থেকে উনার (এরশাদ) এবং জাতীয় পার্টির ওপর নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সবাই বলে আমরা নাকি আওয়ামী লীগের দোসর। কিন্তু কীভাবে দোসর হলাম। আমরা শেখ হাসিনার কোনো ধরনের জনবিরোধী কাজের সঙ্গে ছিলাম না। আমরা বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের জনবিরোধী ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আওয়ামী লীগের দলীয়করণের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার ছিলাম। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতি ছিলেন- জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল করিম, শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও জিএম কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদের।
জাপাকে সমাবেশ করতে দেবে না বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ: দলের চেয়ারম্যান-মহাসচিবসহ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শনিবার রাজধানীতে সমাবেশের ডাক দিয়েছে জাতীয় পার্টি। তবে এই সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারী দিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিকে শনিবার সমাবেশ করতে দেয়া মানে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার আরেকটি চক্রান্ত। গতকাল শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতা’র ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে তারা জাতীয় পার্টির নেতাদের গ্রেফতারের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, গতকাল শুক্রবার আওয়ামী লীগের ক্যাডার বাহিনী পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে জড়ো হয়েছিল। আমরা কাকরাইলে পৌঁছানো মাত্রই আমাদের ওপর তারা অতর্কিত হামলা করে। আপনারা শুনেছেন, জাতীয় পার্টি আগামীকাল সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। আমাদের কাছে খবর আছে, তারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আওয়ামী লীগ ক্যাডার বাহিনী নিয়ে এসে সমাবেশ করবে। আমরা বার বার আল্টিমেটাম দিচ্ছি, যেন ফ্যাসিবাদের দোসরদের নিষিদ্ধ করা হয়। তারা বিভিন্ন রূপে ফেরার চেষ্টা করছে। তাদের প্রতি বর্তমান সরকারের অবস্থান কী, আমরা তা জানতে চাই। ডিএমপি কমিশনার কীভাবে এই হত্যাকারীদের দোসরদের সমাবেশ করার অনুমতি দেয়, আমরা জানতে চাই। এরআগে গত বৃহস্পতিবার মশাল মিছিলকারীদের ওপর জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ যৌথভাবে হামলা করেছে, এমন অভিযোগ করেন ছাত্রনেতা মশিউর রহমান। তিনি বলেন, গত বুধবার আমাদের ওপর জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ একত্রে হামলা করে। আমার হাতে এখনও ব্যান্ডেজ করা। তারা নাকি আবার আগামীকাল সমাবেশ করবে। এটা কি মগের মুল্লুক পেয়েছে? তারা হামলাও করবে, আবার সমাবেশও করবে! জাতীয় পার্টির অফিস পুড়িয়ে দেয়ার সঙ্গে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার কোনও সম্পর্ক নেই দাবি করে তিনি বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতাই তাদের কর্মকাণ্ডের ফলস্বরূপ তাদের অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে। এরআগে গত ১৫ অক্টোবর জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। এতে ফুঁসে উঠে শিক্ষার্থীরা। তবে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে এমন অভিযোগ তুলে পাল্টা কর্মসূচি পালন করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। ফলে জাতীয় পার্টি ও ছাত্র আন্দোলনের পাল্টাপাল্টি মিছিল ও আলটিমেটামে উত্তপ্ত হয়ে উঠে রংপুর। গত ১৫ অক্টোবর রাতে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয় পার্টির অঙ্গ সহযোগী সংগঠন জাতীয় যুব সংহতি এবং জাতীয় ছাত্রসমাজ। গত ১৪ অক্টোবর রাতে এক কর্মীসভা থেকে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটির সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় ওইদিন মধ্যরাতেই রংপুর নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। রংপুর থেকে জাতীয় পার্টি যে আন্দোলন শুরু করল এর ভবিষ্যৎ কোন দিকে যায় তা দেখার জন্য অপেক্ষা করুন। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে জাতীয় পার্টিও অংশ নিয়েছিল। রংপুরে আমাদের মেরাজুল ও মানিক নামে দুজন কর্মী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। ২২টি মামলায় আসামি করা হয়েছিল দলের কর্মীদের। এরমধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। ১৬ জুলাই আবু সাঈদকে হত্যা করা হয়, সেদিনও জাতীয় পার্টির যুব ও ছাত্র সংগঠন মিছিলে অংশ নিয়েছিল এবং নির্যাতনে শিকার হয়েছিল। অথচ ৫ আগস্টের পর জাতীয় পার্টিকে হাসিনা সরকারের সহযোগী আখ্যা দিয়ে পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও তার স্ত্রী শেরিফা কাদেরকে মামলার আসামি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ভাঙচুরের পর আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতা’। অগ্নিসংযোগের আগে জাতীয় পার্টি ও ছাত্র-জনতার ব্যানারে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যার পর বিক্ষুব্ধ জনতা জাপা কার্যালয়ে ভাংচুর চালিয়ে পরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় জাতীয় পার্টির কর্মীরা অভিযোগ করেন, ছাত্র জনতার ব্যানারে আসা মশাল মিছিলটি পার্টি অফিসের সামনে এসে ভাঙচুর চালায়। পরে নেতাকর্মীদের নিয়ে তাদেরকে প্রতিহত করেন। এর আগে টিএসসিতে ছাত্র-জনতার ব্যানারে জাতীয় পার্টির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান। একই সাথে আওয়ামী লিগের দোসর বলেও মন্তব্য করেন তারা। শুধু তাই নয় জাতীয় পার্টি এখনো অপরাজনীতি করছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। বক্তব্য শেষে টিএসসি থেকে মশাল মিছিল নিয়ে বিজয় নগরের উদ্দেশে রওনা হয়। পরে জাতীয় পার্টি অফিসের সামনে আসলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে লেখেন, জাতীয় বেইমান এই জাতীয় পার্টি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিজয়নগরে আমাদের ভাইদের পিটিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। এবার এই জাতীয় বেইমানদের উৎখাত নিশ্চিত। এরই আধা ঘণ্টা পর আরেক পোস্টে মিছিলের ঘোষণা দিয়ে তিনি ফেসবুকে লেখেন, রাজু ভাস্কর্য থেকে ৮টা ৩০ এ মিছিল নিয়ে আমরা বিজয়নগরে মুভ করবো। জাতীয় বেইমানদের নিশ্চিহ্ন করতে হবে। রাত ৮টার দিকে জাপা কার্যালয়ে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায় ফায়ার সার্ভিস। পরে রাত সাড়ে ৮টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী তিনটি গাড়ি ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।